স্মৃতিতে ইছামতী
সোহরাব হোসেন (শিক্ষক)
চাচা এটা কি নদী?
এর নাম কি ছিল?
সাহেব এই নদীর কথা বলছেন,
এর নাম ইছামতী নদী।
চাচার মুখে ইছামতীর হারানো স্মৃতি,
বলতে বুক ফেটে কান্না আসে ———
প্রচুর যৌবনে কলকল রবে বয়ে চলত এই নদী।
হয়তো –
নদী বুড়া হলে সৌন্দর্য হারায়,
প্রকৃতির কাছে বন্ধক রাখে তার যৌবন;
থাকেনা তার ক্রোধ ও ধারালো স্রোত ,
তখন নদীর বাটে তাকালে শুধুই চোখে
পড়ে তার নির্মম হাহাকার!
নদী পাড়ের মানুষের ভিতর খুঁজলে পাওয়া যায়
শতশত নদীপ্রীতি। নদী যদিও সর্বস্ব হারিয়েছে,
হারিয়েছে নদী পাড়ের মানুষ!
কিন্তু, স্মৃতি রোমাঞ্চ লুকিয়ে
আছে শত বাঁধায় আটকিয়ে!
যে নদীতে অবাধে সাঁতার কাটতো
গ্রামের ছেলেমেয়েরা, আর-
কলার ভেলায় পার হতো কত কৃষক
মাঝির নৌকায় পাল উড়িয়ে
ভাটিয়ালি সুরে স্রোতের বিপরীতে দাঁড় টানা,
সব জানি আজ কত অচেনা,
অচেনা রুপেই পরিচিতি পাচ্ছে ইছামতী।
নদীর বাঁকে জেলে ভাই মাছ ধরত
এসব জানি আজ শুধুই স্মৃতি।
নদী শুকিয়ে হারাইয়েছে তার অতীত,
অতীত হয়েছে দুই পাড়ের মানুষের
পারাপারের শুকিয়ে যাওয়া ঘাট!
আগামীতে তার যৌবন বেগ বাড়বে কি না
তাও সে জানে না?
বার্ধক্যের জোয়ারে জানি সে ক্লান্ত।
তাই বলছি, নদী আজ বুড়া!
ইছামতী’র জীবন যৌবন হলো
একটা অসমাপ্ত ইতিহাস,
যার শেষটা কেউ লিখে যেতে পারলো না!
________________
সোহরাব হোসেন (শিক্ষক)
সারিয়াকান্দি, বগুড়া।