বাবা
নাফিসা খান
কেবল বস্তুবাদী ভালোবাসার ক্ষয় হয়, এ স্নেহ অধ্যাত্মিক-
কিছুটা ইশ্বর বাকি এক অধীশ-কখনও মানব তিনিই ভগবান পক্ষান্তরে ক্রান্তদর্শী।
প্রস্তরযুগ পেরিয়ে- আদি মানব কিম্বা আধুনিক-
অতি স্বাভাবিক স্রোতে আসে ভাঙন কখনও সখনও প্রজ্জ্বলনের মেঘে জ্বলে ওঠে
অভিশাপ বুকে নিয়ে- বাবা তখন আমাদের এক মস্ত বট ।
টাপুর টুপুর ঘোড়া চলে, বৃষ্টি নামে অনিবার অবিরত,
শাকুল বনে ময়ূরী মন দোলে, অঞ্জলিতে ডিম দিয়েছে যাদুর
বলে-একটি মেয়ের ছোট্ট কথা শোনায় যখন বাবা হেসে !
আবার এল কারা, পেখম পরে ঘোড়া দলের, হুলুসস্থল উমরগড়- রাক্ষসী রানী ?
ধ্রুবজ্যোতির আচ্ছাদনে রাজাপুত্রের আগমন,
খুকিও যেন শিশির আধাঁর আলো নক্ষত্রের উদ্দীপকে- বাবা আমার এমন সব গল্প জানে।
বৃষ্টি মাথায় কচুর পাতায় কচি পায়ের ধাপ চলে যায়-
একটি ধাপ নোলক পরে,
গভীর রাতে বালক বিয়ের কনে, বান্ধবীকুল কাদাজলে !
কতশত আষাঢ় শ্রাবণ আতপ জলে তুলিরঙে-শিউলি বাউল বিধুর তানে
বর্তিকা জ্বলে- কাকে যেন ভালোবেসেছিল?
বয়স তখন সতেরো কি আটরো,
সমস্ত হৃদয় পরাগ বিহার পানাপুকুরের আকাশে একটি নাম- এ সময় বিপরীতগামী!
ঢের দিন সময় লেগেছে, সব মায়া কাটিয়ে অনেক পর বাবা হয়ে উঠেছে পটভূমি,
তবুও এই বিয়োগ বিদারক,
শহর ঘুরে হারিয়েছি মন্ত্রমুক্তির ভেলায়,
হাল তখন বাবা- বটবৃক্ষের ঘনছায়া।
ক্ষীণ হয়ে আসে দৃষ্টি!
অন্তরা হয়তো বাজে কিম্বা আধখানা সম্পর্কের ভগ্নাংশ হাতে,
প্রেম-অপ্রেম কোথাও যেন বাঁধা পড়ে আছে,
খুকির চৌকাঠ অতঃপর গওর যজ্ঞে – বাবা বৃদ্ধ হয়েছেন!
দায়ের স্কন্ধ তবুও অনাবিল- কিন্তু এই তামাটে ভাঁজ,
ঘোলাটে চোখ- মানুষ দেখলে ঠাওর করতে পারেন না !
এখন, ওই চলে যাওয়া মানুষদের সাথে নক্ষত্রদের ঝোঁপঝাড়ে
সন্ধ্যাকাশে ধ্রুবগায়ে- বাবা আছে আমার দ্যুলোকে।
১ Comment
অসাধারণ