ফেলে আসা দিনগুলো
জহুরা রহমান প্রভা
বহু বছর পূর্বে-
তোমাকে নিয়ে কঠিন সংগ্রামের গতিপথ ধরে
সবুজ শ্যামল মফস্বল গ্রামের মহামায়া ছেড়ে
ইট, বালি, আর কংক্রিটের শহরে পাড়ি জমাই
মনে কি পরে না? সেই অতীতের মধুমাখা ক্ষণ।
অজানা অচেনা শহরে-
অট্টলিকার আশপাশের পিচঢালা রাস্তার বুকে
সুখের নীড় খুঁজতে খুঁজতে জীবন চলার পথে
সেদিন বড্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম
মনে কি পরে না? সেই অতীতের একসাথে হেঁটে চলা।
যান্ত্রিক নগর জুড়ে-
চারপাশে হুইসেলর উচ্চ আওয়াজে ঘুমহীন রজনী
তবু সোনালি প্রভাতের প্রতীক্ষায় প্রহর গুনা
প্রয়োজনের তাগিতে জীবিকার অন্বেষণে
মনে কি পরে না? সেই প্রতীক্ষার প্রহর।
তোমার বিনাশ সময়ে-
নিজের সবটুকু স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে
চড়াও উত্থানও ফেরিয়ে আলোর প্রদীপ নিয়ে
তোমার জীবনের সন্নিকটে কেবল আমিই ছিলাম
মনে কি পরে না? সেই দুঃসময়ের অভাগীর কথা।
আমার জীবনের প্রথম স্বপ্নের বীজ-
তোমার মাঝে বপন করে ফুটন্ত সূর্যের কিরণ
ডুবন্ত গোধূলি লগ্ন দেখা হয়নি নয়ন জুড়ায়ে;
হয়তো একদিন দেখব এক অট্রহাসিতে তোমার মাঝে
মনে কি পরে না? সেই অভিশপ্ত জীবন।
তোমার অন্তর কাননে-
আমি হাজার পুষ্পের মাঝে শ্রেষ্ঠ গোলাপের
মুগ্ধতার ঘ্রাণ ছড়াতে চেয়েও তোমার ইচ্ছা পোষণে
সুপ্ত বালুচরে গুপ্তধন দিয়েছিলাম কবর
মনে কি পরে না? সেই চোরাবালিতে আটকে পড়া।
তোমার স্বপ্নকে জাগাতে-
কালের স্বাক্ষী হয়ে আছে এই ব্যস্ত শহরের
আকাশ, বাতাস, ক্ষণ, জন, ধূলিকণা;
তোমার বিমুহূর্তসময়ে পাশে ছিলাম আমি
মনে কি পরে না? সেই অবলা নারীর ত্যাগ।
ঘূর্ণমান জীবনে সময়ের বিবর্তন-
থমকে গেছি আমি বদলে গেছ তুমি
খোঁজে পেয়েছ সুখের পায়রাগুলি;
আমি হয়ে গেছি তোমার কাছে উপেক্ষার আধার
মনে কি পরে না? সেই অপরাজিতার পাঁয়তারা।
সঞ্চিত ভালোবাসার প্রহরে-
ভেসেই গেছে নিলিপ্ততার জীবন ঝড়ে
তবুও প্রতীক্ষার প্রহর গুনছি যদি আবার কখনও
ফিরে পাই সেই সোনালি ভোরের ফেলে আসা দিনগুলো।।
_____________
উত্তরা-ঢাকা।