যেদিন আমি হারিয়ে যাবো -সেলিনা আখতার যেদিন আমি হারিয়ে যাবো রইবে না আর প্রাণ । আদর দিয়ে ঝাড় পাখিটা গাইবে শুধু গান। জীবনেরই সব সাধনা সব হারানো তান নিমেষেতেই জুটবে এসে বাঁশবাগানটার খান। কত সুখের নির্জনতা আসবে আমার ঘরে । এত কথার মেয়ে আমি নিরব রইবো পরে। চারিপাশের ফসল ভরা বিশাল মাঠের জমি। আমার শ্বাসে দুলবে শেষে বুঝবে লোকে কমই।
Author: প্রতিবিম্ব প্রকাশ
নীরব ব্যথা –শারমীন ইয়াসমিন কেন এতো ব্যথা অনুভূত হয় কেন এতো কষ্ট হয় কেন এতো ক্ষত অনুভূত হয় ঝিমিয়ে যাওয়া কষ্টগুলো তীব্র থেকে তীব্র হয় হারিয়ে যেতে যেতে আবার বেঁচে উঠি চোখের জলে সবকিচ্ছু ঝাপসা হয়ে ওঠে হাতরে বেড়াই তোমাকে, এই আমি। আজ মনে হয় কতকিছু বলার ছিল তোমাকে বলা হলো না হয়তো তখন বলার সাহস ছিল না সংকোচ ছিল, দিধা-দ্বন্দ ছিল। আজ যখন অনুভব করলাম তখন তুমি ধরা ছোঁয়ার অনেক বাইরে সাদা কাপড়ের বসন ভূষণে মাটির অন্তরালে আমা হতে, কতদূরে.. এই নীরব আমি আরও নিথর হয়ে যাই চারিদিকে শুধু শূন্যতা আর শূন্যতা ভাষাহীন, স্তদ্বহীন এই প্রাণ শুধু ঘুমরে মরে…
কেরোসিনের আলো –সেলিনা রহমান শেলী রাকা ছোট ভাইয়ের প্লেটের দিকে তাকাচ্ছে একবার আর একবার মায়ের মুখের দিকে। ছোট ভাইয়ের প্লেটের ভাত শেষ হয়ে এসেছে। আর বড়জোর এক বা ২ লোকমা হবে। কিন্তু সে ভাতটা না খেয়ে প্লেটেই নাড়াচাড়া করছে। রাকা খুব বুঝতে পারছে ছোটভাইয়ের পেট ভরে নাই। সে আরও একটু ভাত নেবার অাশায় বসে আছে। কিন্তু সাহস করে বলতে পারছে না মা কে। রাকা ছোট্ট কেরোসিনের বাতির আলোয়, মায়ের মুখটা দেখার চেষ্টা করলো। মায়ের মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম। ফর্সা মুখটায় অযত্নে রোদের প্রলেপ পড়ে গেছে স্থায়ী ভাবে।মায়ের দৃষ্টি বড় ভাইয়ের দিকে। একদৃষ্টিতে কঠিন চোখে তাকিয়ে আছেন। যেকোন মূহুর্তে ঝাপিয়ে পড়বেন…
তুমি –শারমিন আ-ছেমা সিদ্দিকী তুমি শরতের নীল আকাশ হয়ে থাকো আমি সাদা মেঘ হয়ে ঘুরে বেড়াব, তুমি বর্ষার নদী হয়ে থাকো আমি ভেলা হয়ে ভাসব। তুমি বসন্তের ঋতুরাজ হয়ে হয়ে থাকো আমি ফুল হয়ে সুবাস ছড়াব তুমি রাতের আকাশ হয়ে থাক আমি তারা হয়ে জ্বলব। তোমার মনের বাগিচায় আমি রঙিন ফুল হয়ে ফুটব, তোমার হৃদয়ের মরুভূমিকে আমি সবুজ ঘাসে পরিণত করব। তুমি ছিলে, আছো এবং থাকবে আমার অন্তরে, তোমায় নিয়ে বেঁধেছি হৃদয় বহুকাল ধরে। চিরচেনা মুখটি তোমার ওগো-ললাটে দিয়েছি এঁকে, ভালবাসায় সিক্ত করো আমায় তুমি মোর হৃদয়ে থেকে। তুমি আকাশ, তুমি বাতাস তুমি আমার আমার পৃথিবী, তুমি ছাড়া বেঁচে থাকা…
রংতুলি –আরজু আরা অগোছাল ভাবনাগুলো রংতুলির এলোমেলো আঁকিঝুকি তারই মাঝে নথ পড়া একটি নাক ডাগড় আঁখি,ভারি বর্ষণ ! আঁকিঝুকি সেতো নয় কিছু তাঁরকাটা বেড়াজালে আটকে আঁচলখানি নিরুত্তাপ বেদনা, দিচ্ছে জলান্জলি ভাবনাগুলো আর তো কিছু নয় আমারই মতন আটকে পড়া হয়ত কিশোরী, নয় তো যুবতী হয়ত প্রৌঢ় হওয়া জীবন নির্বিশেষে যাতনা বাগান বিলাস প্রতিনিয়ত হবে এরকমই জীবন সঙ্গী ?
অমিতাভ বচ্চন তাঁর জীবনীতে লিখেছেন….. “আমি তখন ক্যারিয়ারের তুঙ্গে। একদিন প্লেনে করে যাচ্ছিলাম । খুব সাধারণ শার্ট আর প্যান্ট পরিহিত একজন ভদ্রলোক আমার পাশে বসেই যাচ্ছিলেন৷ দেখে উনাকে একজন শিক্ষিত এবং মার্জিত মধ্যবিত্ত মানুষ মনে হয়েছিল । অন্য সহযাত্রীরা আমায় চিনতে পেরে খুব উৎসাহিত হয়ে অটোগ্রাফ নিচ্ছে। কিন্তু পাশে বসা ভদ্রলোককে লক্ষ্য করলাম উনার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই । উনি একমনে একটা খবরের কাগজ পড়ছিলেন আর মাঝে মাঝে জানালার বাইরে তাকিয়ে কি যেন ভাবছিলেন । চা পরিবেশন করা হলো, ঠোঁটের আগেই থ্যাঙ্কস লেগেই আছে। আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে না। আমার উনার প্রতি কৌতূহল বেড়েই চলছিল । তাই উনার সাথে কথা বলার জন্য…
বিনম্র শ্রদ্ধা: করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বিপুল জনপ্রিয় ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ গানের গীতিকবি ফজল-এ খোদা। আজ রোববার ভোর ৪টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মারা গেছেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তার মৃত্যুর সংবাদটি দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন ফজল-এ খোদার ছেলে সজীব ওনাসিস। ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ গানটি বিবিসির জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা গানের তালিকায় সেরা ২০ গানের মধ্যে ১২তম স্থানে ছিল। তার লেখা উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘ভালোবাসার মূল্য কতো’, ‘যে দেশেতে শাপলা শালুক ঝিলের জলে ভাসে’, ‘আমি কিছু জানি না’, ‘কলসি কাঁধে ঘাটে যায় কোন রূপসী’, ‘বাসন্তী রং শাড়ি পরে কোন রমণী চলে যায়’, ‘আমি প্রদীপের…
নতুন লেখকদের জন্যে যা জানা জরুরি: সহজ ভাষায় বাংলা কবিতার ছন্দ শিক্ষা কবিতা লেখা আজ কাল মানুষের কাছে একটা খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখা যাচ্ছে, কেউ একটু লেখা পড়া শিখেই মনের মাধুরী মিশিয়ে কবিতা লেখা শুরু করে দিচ্ছে। কি লিখছে নিজেও বুঝতে পারছে না। আবার এদিকে, নিজেকে কাজী নজরুল ইসলাম ভেবে বসে আছে। কিন্তু, কেউই এর আসল মহত্তটা বোঝারও চেষ্টা করছে না। এদের কেউই বাংলা কবিতার ছন্দ সম্পর্কে জানে না। কিন্তু, মনে রাখা উচিত, সব কিছুরই একটা নিয়ম আছে। কবিতা লেখাও তার ব্যাতিক্রম নয়। যেমন, কেউ একজন সাঁতার কাটতে যানেনা তবুও পানিতে নামল, তাহলে তার অবস্থাটা কি হবে একবার ভাবুন!!! তাই…
সময় সময় রেখেছে ধ’রে বয়সের সকল স্মারক মাঠের ফসল তোলে অপ্রসন্ন কৃষকেরা শোকে হাজার বছর ধ’রে হেটে চলে ক্লান্ত পর্যটক নূতন বৃক্ষের চারা মাটির গভীরে মাথা ঠোকে । মিশে গ্যাছে আর্তনাদ, মিশে গ্যাছে আনন্দের হাসি বাসর হয়েছে সাঙ্গ, খেলাধুলা শেষ হ’য়ে গ্যাছে প্রবীণ প্রাচীণ মাটি, আজো কিন্তু হয় নাই বাসি জন্ম দিতে কী ব্যাকুল বারবার শরীর কেঁপেছে । অন্ধকার রাত নামে, ঢেকে দ্যায় সব চঞ্চলতা । কবরের পাশে কোন আঁতুড়ঘরের শিশু কাঁদে মরা ডাল স’রে যায়, কচি ডগা আয়োজন ফাঁদে । রাত জেগে প্রবীণেরা কথা বলে, কার কোন কথা? নূতন নির্মাণধ্বনি ভেসে আসে পেরেকের গানে গভীর জীবনে তার চঞ্চলতা মাখামাখি…
পরিযায়ী পাখি সাজেদা পারভীন ********************* সে এসেছিল নিরবে অতি সন্তর্পনে শীতের হিমেল কুয়াশার চাদর মুড়ে। তাকে দেখে নতুন ধানের উৎসব হলো শুরু কিষাণীর হৃদয় আনন্দে উদ্বেলিত হলো।। সে কি নাচন বাহারি পাতায়! রান্নার ব্যঞ্জনা বাড়াতে মুঠোয় মুঠোয় স্থান পেলো উঠোনে মাটির চুলার সালুনে।। কিষাণীর মুখে তৃপ্তির হাসি চাল কুটছে নতুন ধানের দূরে দুটি শালিক একমনে অবলোকন করছে সেই দৃশ্য। আহা! কি মনোরম দৃশ্য!! শহরে ঠাঁই মেলে না আজকাল তাই নতুন অতিথি সেজে সে কিষাণীর বাড়ি। নতুন প্রেমে পড়ার মতো কিষাণীর বুকও উঠানামা করে গাইল ছেহাটের হাপরে হাপরে।। কিষাণীর ভয় হরেক রকম পিঠার বাঁধনে শহুরে সেই বাবুকে বেঁধে রাখতে পারবে তো?…