বৃষ্টির ছড়া (নাজিরা পারভিন) বৃষ্টি পড়ে ঝমঝমিয়ে টিনের ঘরের চালে বৃষ্টি নামে বনবাদাড়ে বিল নদী আর খালে। বৃষ্টি মাথায় জোড়ায় জোড়ায় ভাসছে কোলা ব্যাঙ জুটি বেধে মনের সুখে ডাকছে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ। বৃষ্টি জলে গাছের ডালে ফুটছে কদমফুল বৃষ্টি জলে বান ডেকেছে ভরা নদীরকূল। দিনে রাতে ঝুম বৃষ্টি আনছে ডেকে বান বানের জলে যাচ্ছে ডুবে ক্ষেতের পাকাধান। দস্যি ছেলে কাদাজলে উঠছে খেলায় মেতে তুলতে ধান ছুটছে চাষি পাকা ধানের ক্ষেতে। বৃষ্টি জলে যাবে যখন শাপলা ফোটা বিলে দেখবে মজার ঘর বেঁধেছে শাপলা শালুক মিলে। বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর সকাল দুপুর রাতে বর্ষা এলেই আমার এ দেশ নতুন রূপে মাতে।।
Author: প্রতিবিম্ব প্রকাশ
পদ্মা সেতু [তসলিমা হাসান] পদ্মাসেতুটা শরীয়তপুরের নয় পদ্মাসেতুটা ফরিদপুরেরও নয় পদ্মসেতুটা টুঙ্গিপাড়ারও নয় বরিশাল বা খুলনাবাসীরও নয়…….. পদ্মাসেতুটা পৃথিবীর বুকে নিখুঁত উপমাময়! পদ্মা নিয়ে কিসের এতো রাজনীতি? পদ্মাসেতুটা তাড়ায় মনের ভীতি। পদ্মাসেতুটা বাঙালির উঁচু শির; পদ্মাসেতুটা শ্রেষ্ঠ রুপেই বিস্ময় পৃথিবীর! পদ্মাসেতুটা উন্নয়নের জোয়ার পদ্মাসেতুটা শ্রেষ্ঠ আলোক ফোয়ার। পদ্মাসেতুটা বাঁধা না মানার ঢল; পদ্মাসেতুটা বাংলাদেশের অর্জিত ফলাফল। পদ্মাসেতুটা উন্নয়নের সাড়া পদ্মাসেতুটা শক্ত ভিতেই খাড়া! পদ্মাসেতুটা জোরা লাগানোর সেতু; দিনবদলের তাড়া এবং চমকিত ধুমকেতু। পদ্মাসেতুটা স্বপ্ন সফল কাজ দেশ ও জাতির সফল হাসিই আজ বাঙালির মনে তৃপ্তিভরা সুর; বিতর্ক নয়…সব মানুষের উৎসাহ ভরপুর! পদ্মাসেতুটা না পাওয়া সব ভয় পদ্মাসেতুটা তাড়ায় অবক্ষয় পদ্মাসেতুটা…
আমার দেশ (এম নুরুজ্জামান বাচ্চু) ১৮/৬/২২ ইং আমার দেশ সোনার দেশ,সোনা ভরা; ফসলেতে মুখরিত ভালোবাসা গড়া। ফুলে ফলে লিলায়িত শস্য মনকারা! মেঘদূতের বাদলে সুরভিতে তারা। অহমিকা নেই মনে শ্রাবণের ধারা; অধীর আগ্রহে সিক্ত ভূমিতে প্রাণীরা। ব্যস্ত ব্যাকুলতা পথে গতিময় নড়া; অসহায় হয়ে যায় ঝড়ময় মরা! চির সবুজ অম্লান তুমি বাংলাদেশ ; মাঠে ঘাটে কলরব বাউলের বেশ। ফুলে ফলে ভরা শস্যে-সৃজন স্বদেশ; আগমনী বার্তা নিয়ে সোনালী আবেশ। পুষ্প কাননে হিমেল নয়নে আদেশ; কড়ানাড়ে মনোরমা পল্লব নির্দেশ।
কালো বউ (ফারজানা ইয়াসমিন) আমার দুইজন নিজেদের পছন্দে বিয়ে করেছি। দুই পরিবারের কেউ মেনে না নিলেও মানতে বাধ্য হয়েছে। যা হওয়ার হয়ে গেছে। কিছু করার নেই। বিয়ের কথা জানতে পেরে শশুর আব্বা আমাকে ঢাকায় দেখতে এলেন। দেখে চলেও গেলেন। জানি না তার আমাকে পছন্দ হয়েছে কিনা। ফোনে রনি (আমার স্বামী) শাশুড়ী মা-র সাথে কথা বলতে দিল। আমাদের বাড়ি যেতে বললেন তিনি। আমার বাবা এলেন না আমাকে দেখতে।মা ছোট বোনকে নিয়ে চুপচাপ দেখে গেলেন। কেমন আছি আমি। হাজারো চিন্তা নিয়ে মা কিছু না বলে চলে গেল। যাই হোক বাড়ি গেলাম। বড় ছেলের বউ। ছেলে তাদের এত সুন্দর। বউ কালো! তাদের মনেও…
কোন মুগ্ধতা নেই (তসলিমা হাসান) ইচ্ছে করে সমস্ত ঘুম এক পাশে রেখে কারো চোখে মুগ্ধতা খুঁজি। এই মুগ্ধতা যেন তেন মুগ্ধতা নয়। চোখের ক্লান্তি, মনের ক্লান্তি দূর করে যে, সে মুগ্ধতা আমি বারংবার খুঁজি। কিন্তু পাই না। কিছুই পাই না। এত এত চোখের ভিড়ে ক্লান্তি দূর করার মতো কোনো অক্ষি খুঁজে পাই না। এক বিকেলে আমি বসে ছিলাম উদাস মনে আমার নোটবুকের শব্দগুলো বার বার তিরস্কার করে বলছে “ওরে। উদাস মনে বসে থাকা পাগল হওয়ার লক্ষণ” ভালো ভালো শব্দ লিখ” এক মুহূর্তে আমার মনে হলো তাহলে শান্তি খুঁজতে গিয়ে আমি কী ভুল পথে এগোচ্ছি? তার পর কেটে গেল কয়েকদিন, সপ্তাহ,…
মায়া হরিণ [সুমনা খান] এ শহরের মানুষগুলি বড্ড বেরসিক! বিষাদের চন্দ্রবনে বসে, প্রাণ খুলে হাসতে জানে না- পাখির কলকাকলিকে ভাষায় রূপ দিতে জানে না! এখানে,সোনার হরিণের পিছু ছুটতে ছুটতে সবাই- মায়া হরিণের কথা বেমালুম গেছে ভুলে সত্য,সুন্দর,সরলতাকে- দিয়েছে দূরে ঠেলে। এ শহরের মানুষগুলি বড্ড একা! প্রাচীন মৃত আত্মাদের সাথে কথা বলতে জানে না- আপন পরিচয়কে খুঁজতে জানে না মায়ের কোলে শুয়ে- গল্প শুনতেও জানেনা, জানেনা ভালোবাসতে- আপন আত্মার মৃত্যু হলে পারে প্রাণ খুলে হাসতে! প্রেম-প্রকৃতি ভালোবাসার -মোহ কাননে, এদের দৃষ্টি রয়েছে বাঁধা এক একজন মানুষ কেমন বিষম গোলকধাঁধা! এ শহরের মানুষগুলি সোনার হরিণের পিছু ছুটতে ছুটতে মায়া হরিণকে গেছে ভুলে-…
নিজের ঠিকানা [ফরিদা বেগম] ১৮.০৬.২০২২ মেয়ে তোমার বাড়ি কই ? আমিতো জানি তোমার বাড়ি এই গাঁয়ে, শ্বশুরবাড়ি ঐ তোমার বাড়ি কই গো নারী তোমার বাড়ি কই? জন্ম নিয়েছিস এই বাড়িতে, শৈশব যৌবন সব কেটেছিস এই গাঁয়েতে, শিক্ষা দীক্ষা আনন্দ সব করেছিস এই গাঁয়েতে, ভাত রান্না করিস পরের বাড়িতে, আপন ভেবে বাস করিস পরের বাড়িতে, যেমন পরের ঘরে বাঁধে বাসা বাস করে চড়ুই তোমার বাড়ি কই গো নারী তোমার বাড়ি কই? শৈশব কৈশোর কাটলো বাপের আশ্রয়ে যৌবন কাটলো স্বামীর সাথে শ্বশুরালয়ে বৃদ্ধ কালে আশ্রয় নাই আর ছেলের কাছে রই। তোমার বাড়ি কই গো নারী তোমার বাড়ি কই?
এসো জাগ্রত (জাহানারা বুলা) তোমার পালকে বৃষ্টির ফোঁটা অঝোর ধারায় ঝরে আমি পুড়ে যাই খরার আগুনে আষাঢ় প্রত্যাশা করে আষাঢ় বুঝি তোমারই মতন দূরাশার হতাশা আমার চাওয়াকে অবমূল্যায়ন করে দেয় সহসা! পূবালী হাওয়ার দেখা পাওয়া ভার তুমি নাই পশ্চিমে মেঘের কাছেও জল পাই না হাত পেতে নিঃসীমে আড়াল হয় না সূর্য সহসা সংজ্ঞার হাহুতাশ মেঘগুলো সব দূরে উড়ে যায় ঠোঁটে নিয়ে পরিহাস! তবুও আছি চাতকের মত আকাশের দিকে চেয়ে জমিন কাঁপিয়ে বৃষ্টি নামুক শীতলতা দিক ছেয়ে আমার সকল সবুজ-অবুঝ ডালপালা নুয়ে যায় এসো জাগ্রত ভিজে যাক দেহ- প্রেম এইটুকু চায়। ১৭ জুন, ২০২২ ঢাকা।
অসমাপ্ত প্রেম (সোহেলী পারভীন মণি) তোমার অস্থির অধরে গাঢ় চুম্বন দিলাম বারবার তোমার উষ্ণ স্পর্শে শরীর আমার কেঁপেছিল থর থর জ্বর জ্বর মনে হলো এক নতুন পৃথিবীর গভীরে ডুবে গেলাম অতলান্ত কামনার সাগরে– গভীর থেকে আরো গভীরে। তীব্র অনুশোচনা বোধ– হৃদয় হতে নেমে আসে আমি তার সামনে নতজানু হয়ে আত্মসমর্পণের ভঙ্গিমায় বসে– নিজস্ব সমস্ত সত্বার বিনিময়ে তোমাকেই পেতে চেয়েছিলাম, অথচ তুমি এলে একরাশ কামনার আগুন নিয়ে। নিজেকে বিলিয়ে দেবার পরও তোমার চলে যাওয়া, তোমার ভুলে যাওয়া, আমার তুলনায় যেন তোমার বেদনাবিহীন নিস্পৃহ লুটেরার মতো আমাকে লুট করে তোমার নিষ্ক্রমণ– এ খেলা কেমন! ঘাসেরা,সূর্যালোকে স্বর্ণালী হয়ে অপেক্ষায় বসে আছে বসন্তের যৌবনে…
খরস্রোতা নদী [সাবিনা সিদ্দিকী শিবা] জীবন এক খরস্রোতা, বহতা নদী। পাড় খুঁজে পাবে তুমি, ধৈর্য্য ধরো যদি। কচুরিপানা পানা হয়ে, এঘাট ও ঘাট ভিড়ে। দিন শেষে ফিরে এসো, সে-ই আপন নীড়ে। এপাড় ভেঙে ওপাড় গড়ে, এই তো নদীর খেলা। পরিশেষে বুঝি আমরা, শেষ হলে বেলা। কত-শত দুঃখ স্বাক্ষী, খরস্রোতা নদী। সারাজীবন বয়ে চলে, একাই নিরবধি। ভাঙা-গড়ার মহোৎসব, মেতে থাকে পাড়ও। এক জীবনে ফুরিয়ে গেলে, নেই ক্ষতি কারও….
