Author: প্রতিবিম্ব প্রকাশ

শঙ্খ ঘোষ : অন্তরস্থিত সত্তা ও কবিতার অভিব্যঞ্জনা ( গোলাম কিবরিয়া পিনু ) এক কবি শঙ্খ ঘোষের সঙ্গে তিন-চারবার দেখা হয়েছে। কথা হয়েছে অল্প। তাঁর কবিতা পাঠ শুনেছি কাছাকাছি থেকে কলকাতার এক অনুষ্ঠানে, আমার কবিতাও তিনি শুনেছেন–সেই অনুষ্ঠানে। তাঁর সাথে দেখা হওয়া বা কথা বলার আগে থেকেই–তাঁর কবিতার সাথে আমার পরিচয়, তবে–বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-জীবন থেকে তা আরও দিনদিন গভীর হয়েছে। সেই থেকে তাঁর কবিতার বই ও অন্যান্য বই সংগ্রহ করি, কাছে রাখি, নিয়মিত পড়ি। এই তো ২০১৫ সালে কলকাতায় গিয়ে কলেজ স্ট্রিটের আনন্দ পাবলিশার্সের বিক্রয়কেন্দ্র থেকে ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’ নামের কবিতা বইটি সংগ্রহ করি, বইটি আমার সংগ্রহে ছিল না, এই…

আরো পড়ুন

উজান ঢল (সাকেরা নাছরিন) উজান ঢলে তলিয়ে গেছে অথৈ জলের নদী সেই নদীতে খুঁজছে বাবা খড়কুটো পায় যদি। এক বাহুতে সোনা মানিক কাঁধে আরেক জন পু্ঁটলি বাঁধা কিছু ধন বাঁচার প্রয়োজন। সোনা মায়ের বুক জড়িয়ে দুগ্ধপোষ্য ধন কলিজাটা নিচ্ছে ছিঁড়ে ঢেউ আসে যখন। বানের জলে ভাঙছে বসত ছিন্ন মায়ের শাড়ি বলছে বাবা গড়বো ওসব যদি বাঁচতে পারি। পিঠটা বাবার ঝাঁজরা তবু ইস্পাত-দৃঢ় প্রাণ মায়ের মনটা কাঁদামাটি বড়ই পেরেশান।

আরো পড়ুন

বানভাসির আর্তনাদ কপাল পোড়ার কপাল পোড়ে দুঃখী জনের দুঃখ বাড়ে, বানের জলে ভাসলো ঘরদোর– হায় জীবন! যন্ত্রণা-কষ্টে প্রাণ ওষ্ঠাগত— নিয়তির বৈষম্য। অনাহার-নির্ঘুম, দুর্বিষহ,নির্দয় প্রহর ভাঙ্গে আত্মবিলাপের সুর তোলে; কোথায় আছে দয়ার সাগর দয়ালু…মানবতার প্রতীক নেতা-নেত্রী, সুধীবৃন্দ? আপন কাহন গাইতে গাইতে কণ্ঠধ্বনি স্বরবদ্ধ! আকাশ কাঁদে,বাতাস কাঁপে শোনার জন নেই ত্রিভুবন মাঝে! ভাগ্যহারা জনপদের নেই কোন ঠাঁই ভাগ্যবান জনস্রোতের আড়ম্বর পটচিত্রে, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে দুঃখ-বেদনার তৈলচিত্রে মরুভূমির বালিয়াড়ি বাহিত হয় ক্ষণে ক্ষণে। ওরা কারা? ওরা কি আমাদেরই মূল স্রোতধারার অন্তর্গত? ভাবতে ভুলে গেছি স্বচিত্তে, স্ব-নয়নে! সহজাত প্রবৃত্তির তাগিদে জেগে উঠুক আর্তমানবতার জাগ্রত ধ্বনি; বলিষ্ঠ উদ্যোগী পদক্ষেপে ঘটমান দুঃসময়ের বিনাশ ঘটুক মানবতা-মহত্ত্বের অসীম কর্তব্যময় কর্ম…

আরো পড়ুন

হিমালয়ের কোলে সৌন্দর্যময়ী রহস্যময় গ্রাম, মালানা: দীপক সাহা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত। বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ ভারতবর্ষের আনাচে কানাচে বিস্ময়কর  কিছু অজানা অচেনা জায়গা আছে। এ’রকম একটি বিস্ময়কর জায়গা মালানা। হিমাচল প্রদেশের কুল্লু অঞ্চলের উত্তর-পূর্বে পার্বতী উপত্যকার চন্দারখানি এবং দেও টিব্বা পর্বতের মধ্যে মালানা গ্রাম আজও পৃথিবীর মূলস্রোত থেকে অনেকাংশেই  বিচ্ছিন্ন। সমুদ্রতল থেকে ২৬৫২ মি. ( ৮৭০১ ফুট) উচ্চতায় মালানা নদীর পাশে অবস্থিত চারিদিকে বরফাচ্ছাদিত পর্বতের মাঝে সবুজ বনে ঘেরা, স্পর্শে নিষেধাজ্ঞা এই গ্রামের সঙ্গে ভারতের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মিল নেই। দুর্গম পথ অতিক্রম করে এই রহস্যময় গ্রামে পৌঁছতে হয়। এমনকি এই গ্রামের মানুষ নিজেদের মধ্যে ভাব বিনিময়ের জন্য স্বতন্ত্র এক ভাষার…

আরো পড়ুন

জানালা আমার হাতের কাঁকনের রিনি ঝিনি আওয়াজে তুমি আসতে গভীর রাত্রিতে আমার জানালায় লাগতো ভালো যত ছিল চাওয়া পাওয়া। হতো না খুনসুটি থাকতে নিথর তুমি নিস্তব্দ হয়ে যেত অনুভূতি গুলো তুমি মাঝে মধ্যে বলতে একটু আধটু কথা, আমি নিস্চুপ সুবোধের মত শুনতাম তোমার দুষ্ট মিষ্ট অভ্রবানী। সকাল হতে কতটুকো সময় রয়েছে বাকী আমি করতাম হিসাব তার এসেছো আমার জানালায় এ রজনী ভোর না হয় থাকতাম বিভোর সে উৎকন্ঠায়।। তোমার আমার সাথে করতো মিতালী পূর্ণিমার চাঁদ মাঝে মাঝে তারারা ও এসে মিলাতো হাত আহা! কি দারুন ছিল সেই মিতালীর রাত।। জোসনার আলোয় আলোকিত হতো মুখ সুখ পাখি এসে ডাকতো বলে সুখ…

আরো পড়ুন

শোষকদের কাঁটাতারে ।। মৃত্যুঞ্জয় দাশ শেখর ।। বন্দি রয়েছি আজও মোরা শোষকদের কাঁটা তারে বন্দি। কোথাও দেখত শুনতে পায় না মালিক-কর্মীর আন্তরিকতার সন্ধি। বিশ্ব জুড়ে জমে উঠেছে শোষক শ্রেণির হাট বাজার, আমরাই তাদের সস্তা দামের কর্মী প্রতিষ্ঠান ধরে রাখিবার। আমরাই তাদের বিশ্রামহীন রোবট করি কাজ আজ্ঞা পেলেই, চিন্তা করে না শোষকরা প্রতিষ্ঠান থাকবে শ্রমিক বাঁচলেই। শুরুতেই মিষ্টি কথা বলে শোনায় মোদের আশার বাণী, কয়েকদিন যেতে না যেতে কাজ করায় কড়ায়গণ্ডায় গুনি। দিবারাত্রি কাজ করে শ্রমিকেরা পায় না বেতন ন্যায্য অধিকার, আজও বিবেকহীন শোষকদের কাছে শ্রমিকের মূল্য থাকে না আর। তাঁরাই তো রক্ত চুসা জোঁক শ্রমিকরা না মরা পর্যন্ত, কাজ করায়ে…

আরো পড়ুন

মানুষের ভেতরে ফাঁকা (আলী আকবর বাবুল) আজকাল মানুষগুলো কেমন যেন? সত্যিই ভাবতে অবাক লাগে আকাশ যেমন মাটির দূরত্ব ঠিক তেমনিই বিবেকের কাছে লোভাতুর জিহ্বার মতো! দেখতে মানুষ, ভেতরে ফাঁকা মারমুখী আত্মার গরলে কেবলই ভালবাসা অভিমানে ঢাকা পড়েছে মুখোশে আজব মানুষের পোশাকে! সুন্দর থেকে আরও সুন্দরের গভীরে অসুন্দর বাসা বেঁধেছে এই মানবজন্মে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঘর- পাতি খেলনা মানুষের কাছে- অপরিচিত সংসার দিনদিন অচেনা হচ্ছে জগত কূল – হায়! কোথায় সেই প্রাণের মানুষ!

আরো পড়ুন

পরাজিত আমি (যয়া খান) নিমজ্জিত আমার পৃথিবী আজ অতল জলের গহ্বরে। নিভৃতে কাঁদে স্মৃতি ভেজা দিনগুলো, নিঃসঙ্গ দুঃখের প্রহর। নেই তুমি আর আমার অস্তিত্বের মাঝে, অনস্তিত্বে তোমার বসবাস। জল জমেছে বুকের ভেতর রোদের অভাবে, কঠিন উপহাস নিয়েছে কেড়ে, জীবনের যত রঙ। জীবন টা কেনো এত ছোট এতবড় আকাশ এর নীচে? আজ থেকে আমার রাতে পূর্ণিমার চাঁদ নেই , নেই জোছনালোকিত আকাশ। দিন কেটে যায় রুদ্ধনীল বেদনার ঘরে, মন কাঁদে অন্তরালে। বড় একাকিত্বে আমার ছায়াই আমার সাথি। নিঃসঙ্গ বৃক্ষের মত সাজাপ্রাপ্ত আসামির মতো মৌন পাহাড়ের মত নিঃসঙ্গ আমি মেনেছি হার জীবনের কাছে। লেখক: প্রবাসী কবি। মেলবোর্ন , অস্ট্রেলিয়া

আরো পড়ুন

শকুন কাকের মা (মকবুল প্রধান) গাঁও গ্রামেও শকুন ঢুকে তা’দিয়ে যায় রোজ , কোথাও খায় টাকা পয়সা কোথাও ভূরিভোজ । ছোট্ট কাকে খবর পাড়ে শকুন আসে ছুটে , এদিক ওদিক তা’দিয়ে বেশ দাঙ্গা তোলে ফুটে । ডিমের বদল খবর পাড়ে শকুন দেবেই তা , দাঙ্গা ভালো ফুটায় বলে শকুন কাকের মা । পর ঝামেলার দেয় কামলা দাঙ্গাই করে চাষ , গাঁয়ে মানে না মোড়ল সাজে করে সর্বনাশ ।

আরো পড়ুন

কথার জমাট ঠিকানা হারিয়েছি যেদিন সেদিন খুঁজেছি নক্ষত্রের পথ ধরে নতুন জীবনের ঠিকানা। দিনের আলোয় ডুবে যায় সেই আশা, রাতের আঁধারে আবারও বুক চিঁড়ে বেরিয়ে আসে হতাশার চাদরে মুড়িয়ে এক খোলস ছাড়া মানুষের দেহ। অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে বিষন্নতার দীর্ঘশ্বাস, এক জীবনের গ্লানিবোধটুকু রাখে জমা নিঃসঙ্গতার বুকে। প্রাপ্তির সাথে মিশে আছে অজস্র নীল অপরাজিতা, সুখের আবেশ তাই হাওয়ায় মিলিয়ে যায় বাষ্প নিঃশ্বাসের সুগভীর ভাবনার অতল গহ্বরে। অস্থির চিত্রে আপন মনে খুঁজে চলা একান্ত নিজের অস্তিত্ব, সেখানে কেবল কিছু মৃত স্বপ্নের কঙ্কাল আছে অবশিষ্ট। দীর্ঘনিঃশ্বাস চাপা পড়ে আছে হৃদপিণ্ডের নিচে, রক্তের সাথে মিশে গেছে হাজার বছরের বিষন্নতা। কোলাহলে কান্নার শব্দ মিলিয়ে গেছে…

আরো পড়ুন