বানভাসির আর্তনাদ
কপাল পোড়ার কপাল পোড়ে
দুঃখী জনের দুঃখ বাড়ে,
বানের জলে ভাসলো ঘরদোর–
হায় জীবন! যন্ত্রণা-কষ্টে প্রাণ
ওষ্ঠাগত— নিয়তির বৈষম্য।
অনাহার-নির্ঘুম, দুর্বিষহ,নির্দয়
প্রহর ভাঙ্গে আত্মবিলাপের সুর
তোলে; কোথায় আছে দয়ার সাগর
দয়ালু…মানবতার প্রতীক
নেতা-নেত্রী, সুধীবৃন্দ?
আপন কাহন গাইতে গাইতে কণ্ঠধ্বনি
স্বরবদ্ধ! আকাশ কাঁদে,বাতাস কাঁপে
শোনার জন নেই ত্রিভুবন মাঝে!
ভাগ্যহারা জনপদের নেই কোন ঠাঁই
ভাগ্যবান জনস্রোতের আড়ম্বর পটচিত্রে,
নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে দুঃখ-বেদনার তৈলচিত্রে
মরুভূমির বালিয়াড়ি বাহিত হয় ক্ষণে ক্ষণে।
ওরা কারা? ওরা কি আমাদেরই মূল
স্রোতধারার অন্তর্গত? ভাবতে ভুলে গেছি
স্বচিত্তে, স্ব-নয়নে!
সহজাত প্রবৃত্তির তাগিদে জেগে উঠুক
আর্তমানবতার জাগ্রত ধ্বনি; বলিষ্ঠ
উদ্যোগী পদক্ষেপে ঘটমান দুঃসময়ের
বিনাশ ঘটুক মানবতা-মহত্ত্বের অসীম
কর্তব্যময় কর্ম সম্পাদনে স্বপ্নভূমি।
মধুগন্ধের মধুমাস
মধুমাস জ্যৈষ্ঠ বিদায়ের সুরধ্বনি তুলেছে
মধুগন্ধের মোহ আভিজাত্যে মন ভরেছে,
ফলনশীল আবাদে গাছে মৌসুমী ফলের
বাহারি দৃশ্যে রসনা সুখেতে তৃপ্তি মজেছে।
মধুগন্ধী ফলের স্বাদে জ্বিহব্বা-নাসিকা অস্থির
মন মানেনা পরিসমাপ্তির ক্ষণকালে গম্ভীর ,
জৈষ্ঠমাস বাড়ি ফিরবে,আগমনের স্বীকারোক্তিতে
গ্রীস্মে মৌসুমী বায়ুর সক্রিয়তায় প্রাণ চৌচির।
তাপদাহে অতিষ্ঠ মনোভরে জৌলুশী শরবতে
অধির আঁখি স্থির’ ঝুড়িভর্তি মধুগন্ধী ফলে,
জাতীয় ফল কাঁঠাল,আম-জাম কত কি নাম
মৌ মৌ গন্ধে মৌমাছি ভনভনিয়ে চলে।
মামাবাড়ি মধুর-হাড়ি জৈষ্টের ফলে অহংকারী
দাওয়াতের কৌলিন্য প্রকাশ্যে গ্রামের-বাড়ি অহর্নিশি,
মধুমাসে রসনা বিলাসে গাছের নিচে ঘোরাঘুরি
গ্রাম্য বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনের আত্মিক প্রীতি।
প্রকৃতির ষড়ঋতুর দেশ আমার বাংলাদেশ
সৃষ্টিকর্তার অপার-মহব্বত মৌসুমী ফলের আরম্ভর,
গ্রীস্মে তপ্ত দেহ-মনে শান্তি আনে মধুগন্ধী ফল
কিসমতের সৌভাগ্য নির্ধারণে দয়াময় সম্বল।
কষ্টের প্রহর
প্রহরগুলো কেমন ক্ষিপ্র সমনে এগুচ্ছে —
কষ্টের প্রহর বিলম্বিত লয়ে আশা বিচ্যুতিে
পা’ ফেলেছে!
এত দীর্ঘায়িত হয় কষ্টের প্রহর অনুভূতির সঙ্গতে
আকাশের ছায়া এত ভারী মনে হচ্ছে কেন–!
নিরুপায় আমি বেনোজলে ভাসছি।
বাতাসের গন্ধে গা শিরশির করছে,,,
নিঃশ্বাস প্রকট শব্দ করছে!
জীবনের পথ কোথায় গিয়ে মিলাবে জানা নেই!
আমার আমি ডুবে যাচ্ছি দুঃসময়ের গহব্বরে,
চারিদিকে এত হাহাকার,মানবিক বিপর্যয়ের
চরমতম আর্তনাতের দিনলিপি –!
ঋতুর কদমফুল সেও তো গন্ধবিহীন
বৃষ্টির তোড়ে পাখির ছানা নীড়হারা,
দৃশ্যমান চিত্রে দৃষ্টি নির্লিপ্ত স্বপ্নবাজ
কাক ভেজা দুপুরে হাঁটছি কংক্রিটের
বোধহীন রাস্তায়।
নিদারুণ বৈষম্যের পাল্লায় জ্বলছে জনপদ
শেষ কোথায়? অপরাহ্ণে গোধূলির রং ফ্যাকাশে
তিমির রজনী কি বারতা নিয়ে দাঁড়াবে
বোধগম্য নয়… মায়াবী পৃথিবী মোহাচ্ছন্নে
আবৃত করে রাখে মহাশূন্য, মহাকাশ,
যাপিত জীবনের স্বরলিপি।
ঢাকা, বাংলাদেশ।
১ Comment
congratulations