Author: প্রতিবিম্ব প্রকাশ

পায়রা বিবি যুথিকা জ্যোতি, টরোন্টো, কানাডা কয়েক বছর আগে এক জলসায় গিয়েছিলাম। সেদিন ছিল, ‘ভ্যালেনটাইনস ডে’। ঘরোয়া পরিবেশ হলেও পার্টি হলের সোনালী রঙের ঝুলন্ত সুদর্শন ঝাড়বাতির ঝিকিমিকি আলোর কণায় বেশ রোমান্টিক লাগছিল। দেখলাম, তখনও থোকায় থোকায় লালরঙের হার্টসেফের বেলুন আর সুবর্ণ আলোর মালায় চলছে ডেকোরেশনের পর্ব। তার ঘন্টাখানেক পরই শুরু হয় চমকপ্রদ প্রসাধনের বাহার ছড়িয়ে, আতরের গন্ধ উড়িয়ে, হাসির ফোয়ারা তুলে বাহুবেষ্টিত যুগলবন্দী কপোত-কপোতীর পালা করে আগমন, কথোপকথনের গুঞ্জরণ, হাসির কলতান। ধীরে ধীরে বেশ আনন্দোৎচ্ছল সমারোহে ছেয়ে গিয়ে সৃষ্টি হয় এক মনোরম রোমাঞ্চকর পরিবেশ। বেশ উপভোগ্যই বটে! ক্ষীণ শব্দে গ্রামোফোন রেকর্ডে বাজজে পাশ্চাত্য সঙ্গীতের অপূর্ব মূর্ছনা। অন্যদিকে আগন্তুক অতিথিরাও উন্মুক্ত…

আরো পড়ুন

সান্ত্রি পাতানো জেলখানা। ।।সুরমা খন্দকার।। তোমার ভালোবাসাকে অভিবাদন জানানোর পর– আমি দিন-রাতকে এক করে দিয়েছি তোমার পায়ের কাছে। আসলে এছাড়া আমার আর কিছু নেই তোমাকে দেবার। তোমাকে বলার জন্য, তোমাকে শোনার এই যে উদগ্রীব হয়ে থাকা, এই চঞ্চলতা সব তোমার নামে উপসর্গ করা। যেমন করে পরম পূজারি ভিক্ষু দিন রাত বেসামাল প্রেম নিবেদনে ব্যস্ত মন্দিরে। এছাড়া আমি আর কিইবা পারি নিতান্ত অকর্মন্য বলে। জীবনের কত চনমনে দিনরাত হনন কারী তুমি আমি মুখোমুখি দাঁড়াই না, পৃথিবীর অন্তিম সৌন্দর্য দেখিনা। কারণ এখানে বন্দী হয়েছি সান্ত্রী পাতানো জেলখানায়। এখান থেকে দু’দণ্ড পা যায় না অন্য কোথাও অন্য সীমানায়।।

আরো পড়ুন

লাল জামা সাদা জামা [রোকসানা পারভীন রুশি] -মা ও মা এবার ইদে আমারে একখান লাল জামা কিন্না দিবা? – কই থেইক্কা লাল জামা তোরে কিন্না দিমু রে ফুলকী? আমরা গরীব মানুষ। দুইবেলা ঠিকমতো খাওন জুডাইতে পারিনা। আর ইদে নতুন জামা কিনমু কেমনে? – নাহ এবার ইদে আমি জামা চাই। নতুন জামা চাই, হুহ। – জেদ করিস নারে মা। দেওনের মতো থাইকলে কি আর নিজের বাচ্চারে না দেই। আইচ্চা যা এবার ইদে সবার বাসায় বাসায় মাংস টোকাই আইনা খামু না, বেচমু। বেইচা তোরে নতুন জামা কিন্না দিমু। – থাংকু মা – এইডা আবার কি কস? – কেন বস্তির আছিয়া খালার টিবিতে…

আরো পড়ুন

বিকল হৃদয় ।।জাহানারা বুলা।। তোমার বুকের ঢেউগুলো একাত্ম হলো যখন পরিত্যক্ত এই মরুবুকে- হৃদয় স্পন্দন আমার বাহাত্তর পার করে বিরানব্বুইতে প্রায় কোনো বিকল হৃদয় হঠাৎ জেগে উঠলে এমনই তাল বেতাল চলে হয়তো নষ্ট ঘড়ির মতন। তোমার ঠোঁটের আদল তেমনই আছে যদিও উবে গেছে উষ্ণতা সব যে গন্ধে মাতাল হতো শরীরে শরীর তাও কেন উধাও হলো বিরতিতে কোন ভাগীরথী টেনে নিয়ে গেলো আমাদের অবিমিশ্র প্রেম? একা থাকা যেত না বুঝি কিছুকাল নিমগ্ন ধ্যানে- অতীতের চাতালে বসে তোমার বর্তমান- বহুবিধ সুলক্ষণা নিয়ে দিন-রাত্রি তবুও কেন ফিরে ফিরে আসো এ কেমন অভ্যস্ততা তোমার অভ্যন্তরে আমাকে ঘিরে? ভালোবাসতে যদি শুধু আমিই জানি তবে বারবার…

আরো পড়ুন

তবুও কেন [সাফিকা জহুরা জেসী] শীতল মেঘের বুকে দাঁড়িয়ে আকাশ পানে চেয়ে চাঁদকে নিজের করে পাবার স্বপ্ন দেখে মন রোদের তীব্রতা বরফ গলিয়ে বৃষ্টি নামায় যখন তখন তবুও রোদের কোলেই যে জীবন! ঝড় আসুক, বাদল নামুক, যতই আঁধারে ঢেকে যাক মেঘ উত্তাপ বুকে নিয়ে স্বপ্লের চালুনিতে ধেয়ে যাচ্ছে প্রহর ছোট ছোট অজস্র ছিদ্র; তবুও সযতনে সাজানো আঙ্গিনায় শকুনিদের পাহারা দিয়ে আপন ধনের কতশত যতন তবুও মেঘের কাছে পরাজিত যৌবন! আকাশ আড়ালে যায় ইচ্ছে মতন, গড়তে পারে আপন ভুবন; গ্রাস করে সূর্য, কখনোবা চাঁদকে; তিন প্রহরের দুই প্রহরই গ্রহণ তবুও কেন অবুঝ ব্যকুল মন? খুঁজে ফিরে মেঘের শীতলতা, রোদের তীব্রতা হতে…

আরো পড়ুন

দজ্জাল বউ [আফছানা খানম অথৈ] রাজু মাস্টার্স কমপ্লিট করে বড় একটা চাকরী পেয়েছে।পলি নামের এক মেয়ের সাথে সে রিলেশন গড়ে তুলে।বছর খানেক কেটে গেল তার রিলেশনের মেয়াদ। পলির বাবা বড় ব্যবসায়ী , এক মেয়ে দু’ছেলে। পলি সবার ছোট।সবেমাত্র অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হলো।এরই মধ্যে রাজুর সাথে প্রেমের রিলেশন গড়ে তুলল।একে অপরকে না দেখে থাকতে পারেনা।তাই দু’একদিন পর পর দু’জন হাওয়া খেতে বের হয়। বিভিন্ন জাগায় ঘুরাঘুরি তারপর নামী দামী হোটেলে ডিনার।এভাবে আর কত দিন। সম্পর্কটা শক্ত করে বাঁধতে হবে। রাজু দেখতে শুনতে মন্দ না,ভদ্র, নম্র, সুদর্শন অনেক মেয়ে তার পেছনে ঘুরঘুর করছে। কাউকে সে পাত্তা দেয়নি।কিন্তু শেষ পর্যন্ত পলি নামের…

আরো পড়ুন

অভিযোগ ছেলেটি সব সময় অভিযোগের সুরে মেয়েটিকে বলতো, “তুমি এমন বাচ্চামি করো কেনো? তুমি তো বাচ্চা না, যথেষ্ট বড় হয়েছো। এসব ন্যাকামি ছাড়বে কবে?” ছেলেটার কথায় মেয়েটার অভিমান হয়। ফোনের ওপাশেই গাল ফুলিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে রাখে। ছেলেটা বুঝতে পরে মেয়েটা কাদঁছে। মেয়েটা অনেকখানি অভিমান নিয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলে, “আমার এই ছেলেমানুষী তোমার পছন্দ না? এগুলো বন্ধ করলে তোমার ভালো লাগবে? তবে আর কখনোই  করবো না এমন। খুশি তো?” ছেলেটি মেয়েটিকে আরো রাগিয়ে দেয়ার জন্য বলে, “এই সামান্য কথাতে কাঁদতে হবে কেনো? এসব আমার একদম ভালো লাগে না, তুমি জানো সেটা।” মেয়েটির কান্নার বেগ আরো বেড়ে যায়। সে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলে,…

আরো পড়ুন

মস্ত প্রেমের সস্তা গ্রাহক। [সুরমা খন্দকার]            আমি যখন সব কিছুতে কেমন                 ঘৃণা  ভরে। নিজেকে ষ্টেশনের শেষ যাত্রীর  মত                উচ্ছ্বাসহীন,  অপেক্ষমাণ।                অনাহারে অপুষ্টিতে আমার             সময়গুলোকে কষ্ট দিচ্ছিলাম। নিজেকে বার বার কেমন              বেহিসেবি  সস্তা করছিলাম।              তোমার শিল্পময় নিপুণ কথার ভিড়ে কতটুকু প্রেম দ্রোহ ছিল              আমি জানি না।        …

আরো পড়ুন

আমার চাওয়াগুলো (তসলিমা হাসান) খুব বেশি কিছুতো চাইনি, চেয়েছিলাম, রোজ রাতে ঘুমোবার আগে তোমার আমার কথাই মনে পড়ুক। চেয়েছিলাম, আমাকে ছাড়া তোমার বৃষ্টি ভাল না লাগুক, এলোমেলো দখিনা বাতাসেও হোক দম বন্ধ ভাব, সুদৃশ গৃহকোন,খোলা বারান্দা, পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলোতে ভেসে যাওয়া ছাদ, সব অপূর্ণ মনে হোক আমাকে ছাড়া । ভালো না লাগুক কোন গান,প্রেমের কবিতা মানুষের ভালো কথাগুলোও গরল হয়ে বাজুক কানে। আমাকে ছাড়া ভাল না লাগুক কোন ভোর, সূর্যোদয়, পাখির ডাক, দিনগুলো সব বিবর্ণ, পানসে হোক। খুব বেশি কিছু চাইনি, চেয়েছিলাম, তোমার চেতন বা অবচেতন সত্ত্বায় আমি ছাড়া আর কেউ না থাকুক…….. আমাকে ছাড়া এই ব্রহ্মাণ্ডের কিছুই তোমার…

আরো পড়ুন

অতৃপ্ত আবেগ (ইলিয়াস খান) সুপ্ত মানসিকতা আজ স্বপ্নের মতো। হাজারো চেষ্টায় ফিরে পাওয়া দুর্লভ। প্রভাতের সোনালি আলো হারিয়ে গেছে। গহীন অন্ধকার নেমে আসছে। পূর্ণিমার ঝলমল চাঁদটা নেই। আমাবস্যা হৃদয়ে আবাস গড়েছে। শাপলা ফুল আর ফোটে না। তারও হয়েছে অনেক অভিমান। গন্ধরাজের গন্ধও হারিয়ে গেছে। তারকা আর ঝিলমিল করে না। গগনে সন্ধ্যা তারা নেই বলে।

আরো পড়ুন