বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও গবেষক এবং বাংলা একাডেমির প্রাক্তন পরিচালক বশীর আল হেলাল মঙ্গলবার ঢাকায় তাঁর নিজ বাড়িতে মারা গেছেন । ৮৫ বছর বয়সী এই সাহিত্যিক দীর্ঘদিন ধরে আলঝাইমারস এবং বার্ধক্যজনিত অন্যান্য রোগে ভুগছিলেন। বশীর আল হেলালের জন্ম ১৯৩৬ সালের ৬ই জানুয়ারি পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদবাদে।
তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম এ পাশ করেন। তিনি একাধিক উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থ লিখেছেন। তাঁর প্রকাশিত উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- ‘কালো ইলিশ’, ‘ঘৃতকুমারী’, ‘শেষ পানপাত্র’, ‘নূরজাহানদের মধুমাস’, ‘শিশিরের দেশে অভিযান’। তা ছাড়া তাঁর প্রকাশিত গল্পের বইগুলো হচ্ছে ‘প্রথম কৃষ্ণচূড়া’, ‘আনারসের হাসি’, ‘বিপরীত মানুষ’, ‘ক্ষুধার দেশের রাজা’, ‘গল্পসমগ্র-প্রথম খণ্ড’। এ ছাড়াও তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস নামে একটি বই লিখেছেন।
তিনি ১৯৯৩ সালে বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
ভয়েস অফ আমেরিকাকে শোকার্ত অভিব্যক্তি প্রকাশ করে সদ্যপ্রয়াত বশীর আল হেলালের কন্যা ঢাকার এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসার লায়েকা বশীর বলেন,
“‘আব্বি’ বলে ডাকতাম তাঁকে । তিনি ছিলেন আমার শিশুকালের প্রিয়তম বন্ধু । মা করতেন শাসন । আব্বি দিতেন প্রশ্রয়। শিশু মনের যত প্রশ্ন তার সবটাই নিয়ে জড়ো হতাম আব্বির কাছে । সব জিজ্ঞাসার জবাব ঠিকঠাক মিলে যেত ঐ একটি আস্তানায়। মুক্ত মনের আধুনিক মানুষ ছিলেন তিনি। নিয়ম কাকে বলে সেটা শেখানোর পর সেটাকে পালন করা শুধু নয়, নিয়মের বাইরে গিয়ে তাকে ভাঙার ধারণাটাও তাঁর কাছে পাওয়া। প্রথাগত চিন্তার বাইরে গিয়ে নতুন কিছু চিন্তা করার স্বাধীনতার ধারণার বীজ তিনিই লাগিয়েছিলেন আমার মননে। সেই সাথে তাঁর দেওয়া সাহসী হয়ে ওঠার দীক্ষার কথাও না বললে নয় । ‘ভয় ‘ শব্দটা কিংবা ভয়ের ধারণাটা ছেলেবেলায় ছিল অপরিচিত। জগতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই এমনই নির্ভীক বার্তা হৃদয়ে এখনও আলো জ্বালে। বার্তা প্রেরণাকারী মানুষটা আব্বি ছাড়া আর কেউ নন”।