দুর্ভিক্ষ
শাহনাজ পারভীন,
গতবছর পৌষের হিমকুয়াশা দুপুরে তরুণ রোদ্দুরের ঠোঁটে মায়াবী এক ঝলক হাসি দেখেই
আমি ছন্নছাড়া আবেগে রোদ্দুরের প্রেমে পড়েছিলাম
বিশ্বাসের ঝড় সাথে কথার মিছিল,
আর-প্রেমের উন্নয়নে বেহিসেবি সোহাগ!
কলমের সহমর্মিতায় প্রেমপদ্ম লিখে লিখে ভরে গেছে কবিতার খাতা।
কিন্তু কাঁটাছেড়া কবিতার কাছে রয়ে গেছে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছুঋণ!
বহু আগে একবার ঋণ শোধ করে দিতে চেয়েছিলাম-পারিনি!
সূর্যডোবা এক সন্ধ্যায় শালবন ধরে হেঁটে যেতে যেতে গন্তব্যের মাঝপথে
ভন্ড প্রেমিকের মতো রুক্ষমূর্তিধারণ করে আমার পথরোধ করে চটুল বাতাস,
গলায় কুসুমগন্ধি ফুলের মালা দেখে বখাটের মতো লোলুপ রসনায় শিস বাঁজায় ধ্রুবক;
আমি সম্ভ্রম হারানোর ভয়ে অহেতুক বাক্যালাপে না জড়িয়ে বিকেলের হাত ধরে চলে আসি
হোঁচট খাওয়া পথের অন্তর্নিহিত অর্থের দ্রষ্টব্য ভৈরবী রাগে কবিতায় পোষে রাখি প্রতিবাদের বিচ্ছিন্ন শব্দে।
আজ হৃদপিণ্ডের সাহস নিয়ে যেই না সুদে-আসলে ঋণশোধ করে দেবো ভাবছি
অমনি শব্দ নগরে দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড খরা-দুর্ভিক্ষ!
বেশ খানিকটা সময় অবসর
এরই মাঝে দলছুট শব্দেরা বর্ণিল হরষে যেখানে মাতে কারা করেছে সেই পুকুরচুরি?
শোকার্ত শব্দাংশের আকুল নিবেদন,
সর্বজনের ভাষা লুট হয়ে যাওয়া অঞ্চলে বাহাদুরের মতো এগিয়ে গেলে কলম যোদ্ধারা
ক্ষুধাপেট যন্ত্রণায় গিলে খাওয়া সর্বগ্রাসী সাইক্লোনের পেট থেকে পারবে কি উদ্ধার করতে
শতশত সুখের ঘরবাড়ি?
নাকি নির্বাক যন্ত্রণায় বর্ণমালার উপাখ্যানে অনাদিকাল ভোগ করতে হবে কারারুদ্ধ!
ঋতুর অমোঘ নিয়মে অধরা অপ্সরীর মতো মেঝেতে বসে কাঁদি!
পাশে মৌন প্রচ্ছদের নির্মম যাতনা বুকে নিয়ে কাতরায় বিদ্রোহী কবিতা।
১ Comment
very nice poetry; congratulations