তোমার ঠোঁট।
শেখ মনিরুজ্জামান শাওন।
তোমার ঠোঁট জাংলার পুই ভাটার মতো আমাকে আকৃষ্ট করে।
বুকের ভেতর অনুভব করি ১৯৭৪।
চুলায় আউশ ক্ষেতের মোটা চালের বলক উঠা গরম ফ্যানের মতো চেয়ে থাকি অবিরত অতৃপ্ত বেদনায় ।
হৃদয়ের নির্জীব কর্ণে শুনি কারবালার প্রতিধ্বনি স্তব্ধতায়।
ছন্নছাড়ার মতো তন্নতন্ন করে খুঁজে ফিরি তৃষ্ণা ।
চেয়ে দেখি ধরণীর সমস্ত রাতের শিশির জমে আছে যেন,
একটি ঠোঁটের আধারে।
তোমার অমূল্য ঠোঁটের মূল্য ঘুঁচাতে,
নিমিষেই তুলে দেই সাধের জমিদারি নিলামে ।
মৌমাছির মতো উড়ন্ত যৌবন প্রেমিকার হৃদয়ে ঢেলে ,
অবিচল মৃত্যুর পরশমণি গিলে খাই জীবনবোধকে উপেক্ষা করে।
তোমার ঠোঁট জাংলার পুই ভাটার মতো আমাকে আকৃষ্ট করে।
মুছে দেয় এ জন্মের দাসত্বের আগাম ইতিহাস,
উন্মুক্ত করে দেয় অফুরন্ত প্রেম।
আমি জিকিরে জিকিরে ডুবে যাই, ডুবে যাই,
ডাকছে কাছে, বিনম্র ইশারায় ,
দোজাহানের অগ্নিদগ্ধ , নূরানী ঠোঁট।
অবশিষ্ট
শেখ মনিরুজ্জামান শাওন।
তুমি চলে গেলে,
কিছুই কি থাকবে না আমার!
শূন্যতার জলোচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে কি সব?
মৃত্যু ক্ষুধায় যুগল যাত্রীর গাঢ় অন্ধকারে ছায়ার ভিতর ছুটে চলা বহুকালের অন্তহীন পথ।
অভিমানি প্লাবন শেষে বুকের ভিতর প্রেম জমে জমে, জেগে ওঠা প্রতিক্ষীত মহাকাব্যের নতুন চর ।
কিছু প্রিয় ক্ষত, অবাক করা নির্বাক চাহনি,
নিমগ্ন নি:শ্বাস ফেলে যাওয়া নিদ্রিত অন্ধকার।
কিছুই কি থাকবে না আমার?
অশরীরী দেহের ভাঁজে ভাঁজে খুজে পাওয়া সংরক্ষিত বিহবল হাসি।
অসিদ্ধ জীবনের অতল সমুদ্রে ডুব দিয়ে তুলে আনা দহনের পরশমণি ।
মৃত্যুর খুব কাছে দাগ ফেলে যাওয়া জ্যোৎস্নার জল।
শূন্যের উপর বেহুলার নিচ্ছিদ্র বাসর।
জন্ম যোনির ভিতর আজন্মের সাধ।
কিছুই কি থাকবে না আমার?
তুমি চলে গেলে– কিছুই কি থাকবে না আর।