ছুঁয়ো না মাধূরী যমুনার জল
শাহ্ নাজমুল
এক বিরল জোছনায় ভেসে যায়
এই চিরন্তন ভালোবাসা সৌধ- তাজমহল।
গুটিকয় রোমান্টিক যুগলের সাথে
ইমার হাত ধরে দেখছি ধরণীর বিস্ময়।
আজ আকাশও যেন পেখম মেলেছে
উপরে হালকা নীলে অযূত নক্ষত্র
তাজ এর শুভ্র পাথরে ঠিকরাচ্ছে
মায়াবী জোছনা।
চতুর্দিকে সজ্জিত পূষ্পিতা বৃক্ষরাও
আমাদের বিস্ময়ের আবহে স্হির।
আমরা কি রয়েছি এই নিগ্রহ ভূবনে?
দুঃখ- জ্বরা, খুনোখুনি হতাশার দ্বীপে?
যুদ্ধের বিভীষিকায় যেখানে রক্তের নদী
ঢেকে দেয় সুফলা জমিন।
সহচরীর কম্পিত কর-এ কিসে খেলা করে?
তার সুডৌল গ্রীবা, পানপাতা মুখে কিসের উদ্ভাস?
তার কপাল- কপোল জুড়ে কিসের পূলক?
স্তব্ধ প্রকৃতি আর মুগ্ধ পর্যটক সারি।
পশ্চাতে যমুনার জলের কালোতে
ভেসে চলে জোছনার ফুল,
তাজের আড়মোড়া ছায়ায় কত বিবমিষা,
আমি গলে যাচ্ছি অজস্র মায়ায়।
আমার প্রাত্যহিক মানবীকে মনে হয়
জান্নাতি আদিবাসী হুর।
মনে হয় আমি, ইমা, এই একসার নরনারী
আমরা এই পৃথিবীর কেউ না,
হঠাৎ অদৃশ্য মোহনীয়া তাজ।
শুধু যমুনার অঢেল জলে বিচ্ছুরিত চাঁদের কিরণ,
অকস্মাৎ আতংকে অসাড় হয়ে দেখি
রক্তের লালিমা স্রোত ধীর লয়ে বহমান
তাতে অগনিত আতংকিত ভয়ার্ত মুখ।
ইমার হাসিমুখ বদলে যাওয়া
জওহর খাওয়া এক নবাবজাদীর।
অনেক অনেক দুর থেকে ভেসে এলো
হাতকাটা, গলাকাটা মানুষের আর্তনাদ।
জল ছুই ছুই ইমার নোয়ানো হাত
ঝট করে ধরে ফেলি,
হাসির ভারে সে গলে গলে কুপোকাত।
যমুনার জলে কেন এতো বিলাপ
এসব কি শতাব্দীর গলিত, গর্হিত পাপ?
না না ছুয়ো না প্রিয়া, আমার মাধূরী,
এই লাশে ভরা অসূচি যমুনার জল।