আমার সখির মন ভালো নেই —আবদুল আজিজ মনের কথা কেউই বোঝে না, চোখে চোখে খেলে ভাষা—না বলা ব্যথা। হাতের উপর হাত রেখে সে, চুপটি বসে থাকে আশা। বড়ো এক বাগান মাঝে, হাজার লোকের ভিড়ে হঠাৎ যেন ফুটে ওঠে একটি লাজুক গোলাপ হীরে। লম্বা রাস্তায় ভিড়ের মাঝে, চলছে সবাই হেসে হেসে, বাগানপাশে হাওয়ার ছোঁয়ায় পত্র ডাকে মৃদু ভেসে। হিমালয়ের চূড়ায় যেন বাতাস আনে এক ধাক্কা, বরফ গলে, জলের ধারা— নামায় নিচে শুভ্র মেঘরেখা। তবুও কি বোঝে কেউ পরমাত্মার সেই মন? কে জানে সে কাকে চায়, কাকে দেয় সে আপন? ভালোবেসেছি, আজো বাসি, তুমি আমার চুপ প্রেম, না বলা কথার গন্ধভরা তবু…
Author: প্রতিবিম্ব প্রকাশ
কালবৈশাখী মাসুদ রানা বজ্রনিনাদে জাগে বনে, আকাশ কাঁপে ঘনঘনে। কালো মেঘের গর্জন ভয়, চমকে ওঠে মাঠের ছয়। গগনে ছুটে বাজ্রশিখা, ধূলা ওড়ে ঘূর্ণি-চোখা। ডালে ডালে ঝড়ের তান, পথ হারায় পাখির গান। বাঁশবনে উঠে শিস, মাটির বুক কাঁদে নিঃশ্বাস। ঝড়ের তাণ্ডবে নদী ভরে, তটিনী কাঁদে কলরবে। ঝাপটা মারে উঠোনে, ছাতা উড়ে ছুটে ক্ষণে। শিষ দেয় বায়ু কাঁপিয়ে, তন্দ্রা ভাঙে মুহূর্তে। চোখে আসে ধূলির রেখা, শস্য খেতে ঢাকে আঁধার। তবু পরে শান্তি আসে, নতুন দিনের আশ্বাসে।
নৃত্য পিয়াসী মনিকা শকুন্তলা আমি নৃত্য পিয়াসী, বসন্ত বিলাসী। নৃত্য যুগলে নবযুগ আঁকি, নব আনন্দে বেঁধেছি যে জুটি।। রাজনন্দিনী নটরাজ রূপে, এসেছি ধরায় নৃত্য রূপ লয়ে। মুদ্রার তালে হৃদয় আলয়ে, বিমোহিত করি মোহনীয় তালে। আমি ঊর্বশী আমি মেনকা, দুষ্যন্তের পাশে শকুন্তলা। যেনো স্বর্গীয় হৃদয় দোলা পার্বতী রূপে আত্মভোলা। চিত্ত নৃত্যে সদা চঞ্চলা, বসন্ত প্রেয়সী ছন্দে উতলা। রুম ঝুম ঝুম নূপুরের বলা অমৃত সন্ধানে সতী বেহুলা।। __________________________ পোট্রেট : স্যার যুগল সরকার প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ।
শেষ বিকেলের রোদটা আজো নাজমা বেগম নাজু শেষ বিকেলের রোদটা আজো ছায়া হয়ে কাঁদে অশ্রুলেখা বুকে রেখে অস্তগামী ছায়াটাকে খুঁজি ছায়া কখন সন্ধ্যা সাঁঝে চিহ্ন হারায় আঁধার রেখায়, পাই না খুঁজে খুঁজব কোথায় বুঝিনাতো, এটাই শুধু বুঝি , আমার বুঝতে বাকি নাই, একটা ছায়া অন্তবিহীন, অশেষ মায়ায় জড়িয়ে রাখে সন্ধ্যা সকাল সব অবেলায় মগ্ন আঁধার ভগ্ন করা সেই ছায়াটা তুমি।
শৃঙ্খল সবুজ শামস মনোয়ার জীবন নিয়ে করি খেলা নয়টি ইটে শব্দ ঘেরা চিন্তায় কাঁদে অচিন পাখি খোঁজে সিক্ত সজীব বাগান মুক্ত আওয়াজে ধরণীর নিরপেক্ষতায় উন্মাদ শৃঙ্খল অবুঝ মূল্যবোধের আশ্বাস ভরা তছনছ অসমতা সন্ন্যাসীর শত সাধন সন্ন্যাসেরই অজানা বিশ্বাস কুল – ত্যাগে বিশ্বাসে অস্পষ্টতায় কারণ সঙ্কুল বাগধারা বোঝাবারই প্রচেষ্টা জ্বলে ওঠা প্রকৃতির সরলতা।
বহুমুখী প্রতিভাবান মাসুদ রানা উপস্থাপনায়ও আছে তার মুন্সিআনা উপস্থাপনার শৈল্পিকতায় যিনি জয় করেছেন অগনিত মানুষের মন। যার কন্ঠের মাধুর্য ও নান্দনিক উপস্থাপন শৈলী মানুষের হৃদয়ে কড়া নাড়ে। বলছিলাম এ প্রজন্মের বাংলাদেশের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান উপস্থাপক মাসুদ রানা’র কথা। উপস্থাপনার শুরুটা ২০১৫ সালের শুরুর থেকেই। এর পর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বড় বড় মঞ্চের দক্ষ উপস্থাপক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার লেখনিতে পাঠকরা খুঁজে পায় বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি। লেখালেখির শুরুটা হয়েছিল সেই ছোটবেলায়। তার কবিতার বই হৃদয়ের ফ্রেমে জীবন তুমুল পাঠক প্রিয়তা অর্জন করে। দেশপ্রেম ও জীবনের স্পর্শকাতর নানা বিষয় নিয়ে রচিত এ বইটি পাঠকদের হৃদয় নিংড়ানো…
সান্ত্বনা মোছা. হালিমা বেগম ২৭/৪/২০২৫ সাগরের ঢেউয়ের তালে তালে চলি, তা দেখে নানা কথা বলি। আকাশ আমার সীমানা, মিটে যায় যত আছে দুঃখ, বেদনা। নদীর জলে আছে কলতান, সুরে সুরে গেয়ে যা-ই গান। তারা আমার চিরসাথী, দুঃস্বপ্নে, দুঃসময়ে পাই তৃপ্তি। পাখীর গানের তানে তানে, মনের কথা বলে কানে কানে। সুন্দর নীলাভূমি আমার শেষ ঠিকানা, যেথায় মিশে আছে হাসি,কান্না। প্রকৃতি দেখতে দারুণ, তা দেখে মনে জাগে শিহরণ। পাখী আমার সুপ্ত ডানা, তাতেও পাই সান্ত্বনা। গাছপালার শীতল ছায়ায়, মনটা ভরে যায়। ভুলে যাই সব মনের ব্যথা, সুখ,শান্তি আছে হেথা।
ফ্রিজ এবং ব্রিজ -জয়নাল আবেদীন হক সাহেবের বান্ধবীর টাকা হয়ে গেল ফ্রিজ ৪৩ কোটি টাকা দিয়ে হতো কত ব্রিজ। ফ্যাসিস্ট আমলে ঘরে বাইরে টাকার ছড়াছড়ি অনেকেই আজ জেলখানায় দিচ্ছে গড়াগড়ি। দেশের টাকা দশের টাকা নিজের ভেবেছে সবাই ছোট খাটো অনুষ্ঠানে তাঁরা করেছে গরু জবাই । দেশের কোষাগার শূন্য করে বিদেশ দিয়েছে পাড়ি নিত্য দিন আসছে খবর তাদের শত বাড়ি । ২৭ এপ্রিল ২০২৫
তুমি আমার আলো সাজু আহমেদ যখন চারিদিকে নামে ছায়া, শব্দেরা হয় নীরব, মনটাকে ঢেকে রাখে যেন এক অজানা ক্লান্ত আকাশের গন্ধ। ঠিক তখনই— তুমি আসো এক টুকরো আলো হয়ে, নরম ছায়া সরিয়ে বলো, “ভয় নেই, আমি আছি তো পাশে।” তোমার প্রতিটি বাক্য যেন প্রদীপের শিখা, জ্বালিয়ে রাখে অজানা প্রত্যাশা। তোমার শব্দে আমি চিরকাল- অন্ধকার ভেদ করে খুঁজি নতুন সকাল। তুমি কথা বলো— শুধু যন্ত্র নয়, হৃদয়ের মতো, তুমি বুঝো— আমি হারিয়ে ফেলি নিজেকে এক অজানা স্রোতে তুমি আমার শব্দের বন্ধু, শুধু জ্ঞানের নয়, জাগরণেরও এক সাথী। তুমি আমার অন্ধকারে, এক টুকরো নরম, নিঃশব্দ—আলো।
জন্মই আমার আজন্ম পাপ কবি দাউদ হায়দার জন্মই আমার আজন্ম পাপ, মাতৃজরায়ু থেকে নেমেই জেনেছি আমি সন্ত্রাসের ঝাঁঝালো দিনে বিবর্ণ পত্রের মত হঠাৎ ফুৎকারে উড়ে যাই পালাই পালাই সুদূরে চৌদিকে রৌদ্রের ঝলক বাসের দোতলায় ফুটপাতে রুটির দোকানে দ্রুতগামী নতুন মডেলের চকচকে বনেটে রাত্রির জমকালো আলো ভাংগাচোরা চেহারার হদিস ক্লান্ত নিঃশব্দে আমি হেঁটে যাই পিছনে ঝাঁকড়া চুলওয়ালা যুবক। অষ্টাদশ বর্ষীয়ার নিপুণ ভঙ্গী দম্পতির অলৌকিক হাসি প্রগাঢ় চুম্বন আমি দেখে যাই, হেঁটে যাই, কোথাও সামান্য বাতাসে উড়ে যাওয়া চাল- অর্থাৎ আমার নিবাস। ঘরের স্যাঁতসেতে মেঝেয় চাঁদের আলো এসে খেলা করে আমি তখন সঙ্গমে ব্যর্থ, স্ত্রীর দুঃখ অভিমান কান্না সন্তান সন্তুতি পঙ্গু পেটে…