জুতার দাম (নাহিদা ইয়াসমিন) তাং১৭~১~২২ইং চামড়ার জুতার দাম বেশি খরিদ্দার নতুন-তাই দোকানী বিরক্ত মুখে বললেন, পুরানো ডিজাইনের চামড়ার জুতা আছে দাম কম, মান ভালো-চলবে? ফোনের ডিসপ্লেতে সময় দেখে আমিও অনেক বিরক্ত-দশটা আটান্ন! বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়ার সময় কি ভেবেছিলাম একজোড়া চামড়ার জুতা কেনার মুরোদ হবে না। পিতার মুখে কিসের একটা প্রত্যয় দেখে নিয়ম ভাঙ্গতে ইচ্ছে করে কিন্তু পারি না। তাই জুতা আর কেনা হল না।
Author: প্রতিবিম্ব প্রকাশ
গোধূলি লগ্নের ছোঁয়ায় (শফিক রহমান ) ১৬ জানুয়ারি ২০২২ হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি অস্ত্রপচারের অপেক্ষায় গুণছি প্রহর একটি দ্রুতগামী টয়োটা স্বপ্ন নিয়ে গেল হার না মানা গাঙ চিলের বাঁধা সে ঘর। মাথার উপরে ফ্যানের চড়কগাছ অবিরাম তার রাতদিন ছুটে চলা সকাল সন্ধ্যায় ডাক্তারের আনাগোনা রাতে রোগীদের যন্ত্রণা,চিৎকার,কথা বলা অর্থোপেডিক ওয়ার্ডের হল রুম চারতলা বেড়ে চলে গাড়ির চাকায় রোগীর তালিকা অজ্ঞানপার্টি,রিক্সা সিএনজি সড়কদুর্ঘটনা হাত,পা,ভাঙ্গা,অস্থিমজ্জা,ভরা শলাকা। আমার দুধারে রোগীদের বিছানার সারি আত্মীয় স্বজনের উপস্থিতি আনাগোনা রাতে ঘুম নেই,হাঁড়ভাঙ্গার ব্যথা,আর্তনাদ দুজন রোগীর গজল,পুঁথিপাঠের গঞ্জনা । কত বিচিত্র কায়দায় নিপূণ হাতে গড়া শেষ বিকেলের গোধূলি লগ্নের ছোঁয়ায়, রংবেরঙের লাল নীল বেগুনির পশরায় একটু হাঁটাহাটি…
ক্ষণ কালের বনভোজন মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম রচনা কাল ০৮.০১.২০২২ খ্রীঃ এখন আর সুখ খুঁজি না বেদনার হাটে দু’পা বাড়াই দ্বিধাহীন চিত্তে কষ্ট ফেরী করে বেড়াই শূন্যে দাড়াই, জীবন যে করে গেছে পর উদাস পথিক গনে মৃত্যু প্রহর, হৃদয়ের গহীন পথে নিঃসঙ্গতার নান্দনিক স্মৃতির বহর, আদতে হিসাবের ধারাপাতে মনটা বড় বেশি আনাড়ী, সুন্দর ভুবনের প্রাপ্তি প্রত্যাশা সেই কবে দিয়েছে আড়ি, আলো হয়েছে আলেয়া সেই হতে আঁধারে বসত বাড়ি । হিরা ছুড়ে ফেলা কর্ম দোষে মরীচিকার পিছে ছুটে চলা, নিভৃতে নিজের মনেতে ছলাকলা তারার সনে কথা বলা। হলোনা তো সাধন বোধন নিন্দিত অপলাপে অচলায়তন অবহেলায় খোয়া গেছে সাধের বৃন্দাবন কত মানিক রতন,…
নেশা। কবিতা। (কামরুন্নাহার বর্ষা) প্রেমাত্মক পৃথিবীর প্রেমে পড়াটা কোন অবাস্তব নয় পৃথিবীর প্রান্তরে দীর্ঘশ্বাস জুড়ে গভীরতা খোঁজায় ব্যস্ত, নেশার ঘোরে খুঁজে পাই নিরবতা আর নিঃসঙ্গতাকে আদল। চাকচিক্য আমাদের বসন্ত বেলায় আর কৃষ্ণচূড়াকে ফুটতে দেখিনা, রজনীগন্ধারা ঘুমিয়ে পড়েছে দীর্ঘ রজনী ধরে, তাই আবেগ আজ তার শহরটাকে সাজসজ্জা দিয়ে মুড়িয়ে নেয়, অস্তিত্ব পুড়িয়ে হত্যা করে আবেগ শহর। এখান বাস্তব খোঁজার নেশায় অস্তিত্বের প্রমাণ বহাল দৃশ্য তার অদৃশ্যের ছোঁয়া লিখে যায় কবিতায়। সংসার খুঁজতে গেলে আবেগ হারিয়ে যায় শিশির ভেজা ঘাসে লুটিয়ে পড়ে আবেগ শীতার্ত শহর মুখে, ব্যস্ত খুব কর্মব্যস্ত এই শহর ব্যস্ততাকে লুকিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে, কেউ অপেক্ষাকে লুকিয়ে রাখে চোখের…
ভালোবাসার মোহ (তসলিমা হাসান) তুমি ছিলে বিশাল এক আকাশ নামক মোহের নাম, আমি সেই মোহে জড়িয়ে পড়েছিলাম, রোজ নিয়ম করে আকাশ দেখতাম, আমার মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল, সূর্য ওঠার পর তোমার রং টা কেমন হয়, ভর দুপুরে খাঁ খাঁ রোদ্দুরে তোমাকে কেমন দেখায়, গোধূলী লগ্নে কেমন করে সাজো তুমি, আর রাতের তারা ভরা আকাশে বা তোমায় কেমন লাগে? আমার এসব অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। তুমি যেন একটা নেশা, তুমি নামক নেশায় আমি রোজ আশক্ত হতে থাকি, নিজ ইচ্ছায় তোমার কাছে আমি তোমার বিনিময়ে নিজেকে বন্ধক রাখি! তোমার হাসি আমাকে টানে, তোমার কথা আমাকে বাঁধে, আমি বুঝতে পারাতাম না তুমি কি কখনো আমাকে…
ছায়া সঙ্গী আজিজুন নাহার আঁখি ১৬/০১/২০২২ প্রত্যেক মানুষের জীবনে এমন একজন থাকা প্রয়োজন যার কাছে মনের সব সুখ দুঃখ অবলীলায় বলা যায়, জীবনের আনন্দময় ঘটনা যেমনি উচ্ছ্বসিত হয়ে বলা যায়, তেমনি চরম কষ্টের ক্ষণও অনায়াসে ব্যক্ত করা যায় , যাকে বিশ্বাস করে একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় অকপটে বলা যায়। তার সাথে না থাকুক পারিবারিক বন্ধন, না থাকুক সামাজিক বন্ধন,না থাকুক পেশাগত সম্পর্ক থাক শুধু হৃদয়ের সম্পর্ক, জীবনে চলার পথে এমনই কাউকে প্রয়োজন। যার হাতে হাত রাখলে মনে সাহস জাগে, যে স্পর্শে থাকে শুধু স্নিগ্ধতা, থাকে শুধু দুজনের মাঝে আত্মীক সম্পর্ক। বুকের চাপা কষ্ট লাঘবে যাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করা যায়, যার…
আজটা ভীষণ এলোমেলো ফাতেমা ইসরাত রেখা একদিন এখানে দেখেছিলাম ঠিক সবুজ পাতার বুকে ফুটেছিল কত রক্ত করবী শিউলি দোলন চাঁপা ঝরতো শিশির ফোটায় ফোটায় মুক্তো দানার মতো সকাল দুপুর বিকেল পেড়োনো সন্ধ্যামালতির শোভা চাঁদের আলোর ঝিলিকে ঝিলিকে ছিলো বেশ মনোলোভা। আজ বহুদিন আকাশের চাঁদ হাসে না যে মন খুলে মানুষের পীড়ায় মানুষ মরছে বে-ঘর আস্তাবলে। একদিন এমনও দেখেছিলাম যে রেললাইনের দু’পাশে থরে বিথরে সবুজ ঘাসের জড়াজড়ি অবহেলায় প্রখর রোদে ঝলসে যেতো কচি মেয়ের ডাগর আঁখি পৃথিবীর অবুঝ বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাঁদে অঝোরে সুখ নীড় ভাঙা ঢেউয়ে ভেসে যায় সময়ের বাস্তবতার মুখ। এখন এমন দিন এসেছে যেন মুখর বাদল শেষে নক্ষত্র মনে…
নিধন আরজু আরা আশা নিরাশা আছে মিলেমিশে । তবুও ছাড়ি না, আশা ! গহীন জলে ভরা নৌকা ডুবি পাই যদি একটি পাট খড়ি! ঠাঁই নেই তারই উপর আঁকড়ে ধরি, হয়ত এটাই সম্ভব বাঁচার কর্ণধার। ঘণ কালো রাত কাজল কালো? নাহ্ ঠিক যেন কৃষ্ণবর্ণ গভীর অথৈ জল হয় যদি প্রচন্ড শীতল কন কনে শীতের আবির মাথা জাগি চোক্ষু জুগল দৃষ্টিপাতকরণে ঠাহর পাই শুধু কুল কুল ঢেউ গহীন জলের উপরিখানকে লাগে মকমলের চাদর মনের মধ্যে দাগা দেয় পাই যদি একটি কুল এবারের মতন হয়ত বাঁচব, থেকে থেকে জাগে কিন্চিত আবির্ভাব দু’হাত আছরে মারি পাখির ডানার মতন শরীরটাকে দেইনা অসার হতে মনে রাখি…
আকুল প্রবাহ (আজমেরিনা শাহানী) মনে হয় কত সহস্রকাল আমাদের দেখা হয় না, অমৃতসরে আমাদের ঝরে পড়ার শব্দ কেবলই জানে কতটুকু সন্ধ্যা নেমেছে জীবনে ! বিকিয়ে গেছে ধূসর অপরাহ্ণের মায়া নিয়ন আলোর শব্দহীন একাকীত্বে। আমার একলা শূন্য অন্তঃপুরে কেবলই দাঁড়িয়ে আছি আমি একা …! আমার চোখের কোনের সামুদ্রিক মায়ায় এক নিঃসঙ্গ চরাচর জেগে উঠে, নগ্ন পায়ে ভালোবাসা ও উদ্বাহু ভাবনারা এসে হাতছানি দেয় ব্যকুল সম্ভাষনে সব “মায়া” রা অন্তঃপুরে এসে জমা হয়, আমার বুকের ভেতর তোমার বিশুদ্ধ জমিন শব্দহীন স্পর্ষের সম্পূর্ণ মর্মরে কেঁপে ওঠে। শুধু ক্লান্ত প্রাণ জানে তুমিই আমার অচেনা গন্তব্যের শেষ…। শুধু আমাদের হারানো দিনের সুখটুকুর দিগন্তব্যপী বিন্যস্ত ব্যকুলতা……
মনচুরি থেকে মনছুরি মুহম্মদ নূরুল হুদা (মুনূহু) তোমার কথা বুঝি না আমি, বোঝো না তুমি আমার কথা; কথায় কথায় ঘোর দূরত্ব, নিকট কেবল নিরবতা। কথার বাহন যদিও ভাষা সকল ভাষা অভিন্ন নয়, মায়ের মুখে যা শোনা যায় তাকেই মানুষ মা-ভাষা কয়। ভাষার অনেক রকম আছে, চোখের ভাষা, বুকের ভাষা, সকল ভাষার ব্যর্থ ভাষা তোমার আমার মুখের ভাষা। দেখার ভাষা শেখার ভাষা কেবল একার ভাষা সে নয়, মনে মনে মন মিললে তবেই ভালো ভাষারও জয়। বলার ভাষা চলার ভাষা গলার ভাষা বটে, বলতে বলতে যায় না বলা সবকিছু যা ঘটে। সব যুক্তি সুযুক্তি নয় সব রায় নয় রায়, সব কথাই কথার…
