স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর এবং একজন ভুলু (নারগিস দোজা) পঞ্চাশ বছরের বঞ্চনা বয়ে বেড়ানো মানুষটা শেষমেষ চলেই গেল জীবনের ওপারে। অভাবে অনটনে কেটে গেছে জীবন। একজন মুক্তিযোদ্ধার কেউ খোঁজ রাখেনি। লাখ লাখ লোকের ভুয়া লোকের মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট জোগাড় হলেও একজন জেনুইন মুক্তিযোদ্ধার হাতের নাগালের বাইরেই থেকে গেছে সেটা। পঞ্চাশ বছর আগে সতেরো বছরের গহর রাতের আঁধারিতে বাড়ি ছেড়েছিল মুক্তযুদ্ধে যোগদিতে। সিমান্ত পাড়িদিয়ে বহু কষ্টে পৌছেছিল ওপরে। সেখান থেকে যুদ্ধে যোগদান। প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদের ফাই ফরমাশ খাটা তারপর সরাসরি যুদ্ধে। সতেরো বছরের ভুলু তার বয়সি আরও কয়েকজন সহ বাংলাদেশের ভিতরের ঢুকে পাকিস্তানি আর্মি অবস্থানের খোঁজ খবর জোগাড় করে আনে। পরে সেখানে সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধারা…
Author: প্রতিবিম্ব প্রকাশ
যেই লাউ সেই তো কদু ।।সুরমা খন্দকার।। চলবে আরো চলছে যেমন বনানী, সাভার সীতাকুণ্ড। বরাদ্দ তো আছে দেবার যেই লাউ সেইতো কদু! কে করবে রক্ষা আর কে করবে ফলো-আপ? পোড়া গন্ধে ঘুম আসে না কে মানে নীতি নির্ধারক? প্রায়ই ঘটে কিছুই হয় না জবাব দিহি করবে কে? বারে বারে কতো বারে এর শেষ কোথায় বলবে কে? যে সন্তান হারিয়েছে বাবা যে মা হারিয়েছে কলিজার বাচাধন । যার গেছে সে তো বুঝে, বুকের ভিতর কতো আগুন লেলিহান! স্তব্ধতার হাহাকার বার বার বলে আমি পারি না কিছু করতে। বহু সীমাবদ্ধতা আছে তবুও চাই সবুজ ধরায় বাঁচতে।
মোবারক আমার কেউ না (রাজু আহাম্মেদ) রাত তখন ১২ টা।বিশেষ কিছু জায়গায় বাতি জ্বলছে তাছাড়া স্বর্ণলতা টেক্সটাইলের সম্পূর্ণ ভবনই অন্ধকার। সবাই বেরিয়ে গেছে। কোলাহলময় পরিবেশ এখন নিঃস্তব্ধ। মমতাজ মিয়া প্রতিদিন এই সময়টার অপেক্ষায় থাকেন। সবাই বের হয়ে গেলে গেট লাগিয়ে তিনি চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়েন। ঝিরঝির বৃষ্টি পড়ছে, তিনি জানালা খুলে দিলেন। রাস্তায় দু একটা গাড়ি তখনো চলছে।কিছুক্ষণ ফাঁকা রাস্তার দিকে চেয়ে থেকে পাল্লা আটকাতে যাবেন, তখনই তিনি জানালার পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে নড়েচড়ে বসলেন। প্রথমেই আওয়াজ না দিয়ে, আড়চোখে দেখার চেষ্ঠা করলেন। দেয়ালে হেলান দিয়ে পিচ্চি একটা ছেলে বসে আছ। ঠান্ডায় কাঁপছে দেখে মমতাজ মিয়া বললেন,”কেরে তুই? এই পানির…
হৃদয়ের আঙ্গিনাতে। ।।দিলীপ গমেজ।। হরিণ শিশুর মতোই আজকাল কেঁপে কেঁপে উঠি, নীলাভ স্বপ্নগুলো কেমন যেন নীলচে সময় ধরে হাটছে। উদাসী হাওয়ায় শুধুই একটা মুখই ভেসে উঠে বারবার, ঘুম জেগে আর খুঁজে পাই না তাকে। মনের আয়নায় লুকায় সেই মুখ, দুচোখের পাতায় ভাসে স্বপ্নিল ছায়া। একখণ্ড নক্ষত্রের টুকরো বিষণ্ণ আঁধারে হারালেও, আহত কন্ঠের ধ্বনি বেজে উঠে প্রতিক্ষণে, শব্দহীন এ মন, কথা বলে উঠে শ্বাশত সুপ্ত বাসনায়, মন চক্ষুর পর্দায় ভাসে পরস্পরের আঙুল, আমি খুঁজি, চোখ বুজি, আবার জেগে উঠে এই অন্তর। সময় বয়ে যায়, তবু মনের অস্থিরতা কমে না, বাতাসের গায়ে বিষণ উদাস বেলা, ক্ষণে ক্ষণে উপচে পড়া ঢেউ এসে থমকে…
অগ্নিকাণ্ড [রবিউল ইসলাম] শোকাহত হৃদয় এখন জলে ভরা নয়ন ভাণ্ড, বাতাসেতে লাশের গন্ধ সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ড। ছাই হয়েছে কতো মানুষ গেছে কতো অঙ্গ পুড়ে, অঙ্গহানি কারো হাত পা বিস্ফোরণে গেছে উড়ে। আপনজন আজ হারিয়েছে স্বজনেরই আহাজারি, নিথর দেহে পড়ে আছে কতো শতো লাশের সারি। উদ্ধারকর্মী সেও তো আজ চলে গেছে লাশের দলে। অগ্নিদগ্ধ বাবার ঐ লাশ ডাকবে না আর খোকা বলে। সন্তান হারা কতো মায়ে আছে কতো পথো চেয়ে। থামে না তো কান্না কভু অশ্রু ঝরে দুচোখ বেয়ে। রচনাকাল ৫-৬-২২ রাত্রি
ঋণ শাহান আরা জাকির চুলায় হাঁড়ি চাপিয়ে দু’চোখে অন্ধকার দেখে নিলীমা। পানি ফুটে টগবগ করছে। ঘরে এক মুষ্টি চাউলও নেই। ডাল, আলু, শব্জি কিছুই নেই। পানি শুকিয়ে যায়। আবার পানি দেয়। ফুটফুটে দুটি ছেলে মেয়ে নিলীমার। শান্তুনু আর অতনু। আজ চার পাঁচদিন স্কুলে যায় না। স্কুলের বেতন বাকী। রিক্সা ভাড়ার অভাবে পায়ে হেঁটে হেঁটে স্কুলে যাওয়া আসাতে দুজনেরই গা’টা গরম। জ্বরজ্বর ভাব। সকালে নাস্তাবানানোর মত আটাও ছিল না। পাশের দোকান থেকে বাকীতে চানাচুর মুড়ী এনে সবাই নাস্তার কাজ সেরেছে। নাস্তা খেয়ে শান্তনু আর অতনু আবার ঘুমিয়ে পড়েছে। নিলীমা বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে চোখ মোছে। দুজনের পেটটা কেমন অভূক্ত মানুষের মত লেপটে…
নৈতিক শিক্ষা শূন্যের ঘরে (শীরীন আক্তার) ০৬/০৬/২০২২ জাতি আজ শোকে স্তব্ধ, হতবাক। অশ্রু বিসর্জন করতেও ভুলে গেছে। নির্বাক বিষণ্ণ চোখ মেলে আছে টিভি ও মোবাইলে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপোর মুহুর্মুহু বিস্ফোরণ আর লাফিয়ে লাফিয়ে আগুনের আজরাইল ছড়িয়ে পড়েছে ওই অঞ্চলের কয়েক মাইল পর্যন্ত। ১৪ ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ২৯টি ইউনিট মিলেও পারছেনা সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কখনও লাশ হয়ে যেতে শোনা যায়নি। অথচ সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোর আগুনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও নিমেষেই লাশ হয়ে গেছে! কারো পা,কারো হাত সহ পুরো মানুষটিই কয়লা হয়ে গেছে। মোবাইলে ভিডিও ও কথা বলতে বলতে হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণে নিখোঁজ হয়ে গেছে সে যুবক।এইযে…
গোলাম ফেরদৌস মনির [হাল ছেড়ো না] ০৫.০৬.২০২২ যতো সমস্যা ততো সমাধান! পড়িয়া দেখো আল-কুরআন!!! মানবের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান দুঃখ, শোক, অভাব বোধ–পার্থিব যাতনা, রোগ-বেদনা–প্রিয় বান্দাদের জন্য পরীক্ষা! মুনাফিকের জন্য গজব!! শুনতে কী লাগছে আজাব??? ভালো মানুষেরা সাময়িক বিপদ কাটিয়ে উঠতে সামর্থ হয়; অভিশপ্তরা ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত রয়! এইতো বিধির-বিধান; আমরা “প্রজা-রাজা” সবাইতো গোলাম! শুধু তিনিই সারা জাহানের মালিক,চির মহিয়ান- বুঝে-শুনে, পড়ে দেখো “আল-কোরআন !!” হাল ছেড়োনা বন্ধু! বরং ধর্য ধরে ত্যাগের মহিমায় নিজেকে করো বিকশিত জীবন তবে তোমার-হবে চির প্রকাশিত! অগুনে পুড়ে পুড়ে হয় যে “খাঁটি সোনা” সেতো তোমার-আমার–সকলেরই জানা! কি হবে অধিক চিন্তা করে-নিজেকে সপে দাও-ঐ মহান মাওলার তরে-…
বাংলাদেশ শিশুসাহিত্যিক ফোরামের আয়োজনে গ্রীষ্মের ছড়া-কবিতা পাঠ: গতকাল ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯, ০৪ জুন ২০২২ শনিবার বিকাল চারটায় রাজধানীর পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে বাংলাদেশ শিশুসাহিত্যিক ফোরাম আয়োজিত ‘গ্রীষ্মের ছড়া-কবিতা পাঠ, আড্ডা ও আলোচনা’ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। আজকের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শিশুসাহিত্যিক নুরুদ্দীন শেখ। ফোরামের সভাপতি শিশুসাহিত্যিক হুমায়ূন কবীর ঢালীর প্রারম্ভিক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কবিতা পাঠ ও আলোচনা করেন জনাব ইকতিয়ার চৌধুরী, ড. সরকার আবদুল মান্নান, তৌহিদ আহমেদ, নুরুদ্দীন শেখ, জ্যোতির্ময় সেন, সোহাগ সিদ্দিকী, সোহেল মল্লিক, তুষার দাশ, রমজান মাহমুদ,…
নির্ঘূম রাত [রতন চন্দ্র রায়] কপালের সিঁধুর মুছে ফেলো হাতের শাঁখা ভেঙ্গে ফেলো শুধু পড়িয়া থাকিও না, সাদাথান… তুমি ছাড়া, এ জীবনে ছিলো না কেউ আপন জন। আজ আমি যাচ্ছি চলে তোমায় একা করে কত যে, বাসনা ছিলো হৃদয় পিঞ্জিরায় একসাথে থাকবো মোরা সবুজ দুনিয়ায়। ক্ষণে-ক্ষণে পড়বে মনে চঞ্চল স্মৃতিগুলো, নির্ঘূম রাত কাটাবে, তুমি সবার অগোচরে। উদাসী মন নিয়ে দাঁড়াবে কড়িডোরে, পূবালী বাতাসে লাশের গন্ধ আসিবে তোমার, নাকের ডগায়… মন থেকে সব মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু কর, হেঁয়ালীতে নষ্ট করিওনা তোমার ভবিষ্যৎ…
