জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন’র জন্মদিনে নিবেদিত কবিতাটির জন্যে ধন্যবাদ জানালো বেবী নাজনীন।
আঞ্চলিক ভাষায় রূপান্তরের আহ্বান– পাঠকবৃন্দের প্রতিও ♦ সালেম সুলেরী
বেবী নাজনীন ব্ল্যাক ডায়মন্ড-খ্যাত জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী।
‘মেরিল প্রথম আলো’ অনুস্ঠানে নায়িকা পূর্ণিমা খেলা দেখালেন। বেবী’র কন্ঠ নকল করে গাইলেন বহুচেনা গানটি।”কাল সারারাত ছিলো স্বপনেরও রাত…”। দর্শক দারুণ উপভোগ করলেন। কিন্তু অনেকের আক্ষেপ– প্রিয় শিল্পী বেবী কোথায়! কতোদিন ধরে বাংলাদেশ তাকে পাচ্ছে না। সেই যে বেগম জিয়ার কারাবরণের পর গেয়েছেন কারামুক্তির গান। সেই থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে পড়েছেন। তবে না, হয়রানিমূলক কোন মামলা-মোকদ্দমা নেই।
দীর্ঘদিন ধরে সার্বজনীন শিল্পী হিসেবে বিচরণ বিদেশে। বিএনপি দলীয় রাজনীতিসিক্ত হলেও গানের বেলায় ভিন্নচিত্র। অনুষ্ঠান-আয়োজনে বেবী পাচ্ছেন সর্বদলীয় আমন্ত্রণ। এখন নিউইয়র্ক-নিউজার্সির পথমেলা মানেই বেবীর গান। সে থাক আর না থাক, মঞ্চে-মাইকে ‘বেবী সঙ’!
গত ২৩ আগস্ট ছিলো বেবী’র পঞ্চাশোর্ধ প্রিয়দিন জন্মদিন। আমি (সালেম সুলেরী) পোস্ট করি শুভেচ্ছাকাব্য। বেবী তখন নানা আয়োজনে অন্যত্র ব্যস্ত ছিলো। সাক্ষাৎ হলো সম্প্রতি নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে। কাছে বসালো, আপ্যায়ন করালো, ধন্যবাদও জানালো। বললো, ভাইও, এতো যতন করি কবিতাখান লেখিলু। মোর জানটা জুড়ায় গেইছে ভাইও। খা, খা একখান মোগলাই পরাটা খা। মনে কর্ জন্মদিনের জিয়াফত, খা বাহে।
জ্বি, রংপুরের আঞ্চলিক ভাষাতেই সংলাপ বিনিময়। হবে না, আমাদের উভয়ের পৈতৃকবাস উত্তরবঙ্গের নীলফামারী জেলা। বেবীর বাড়ি সৈয়দপুর উপজেলায়, আমার ডোমারে। এজন্যে, আমাদের সাক্ষাৎ মানে রংপুরের ‘মুই-তুই-বাহে’। মুক্তিযুদ্ধের কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথকে পেলেও একই ভাষাচর্চা।
সেদিন বেবী’র আহ্বানে ফের শোনাতে হলো নিবেদিত পদ্যটি। সে চায়, এটি আন্চলিক ভাষাতেও রূপান্তরিত হোক। রংপুরের আঞ্চলিক ভাষার পুঁথিসুর– অগ্রগণ্য। আমি বিষয়টি সহৃদয় কাব্যযোদ্ধাদের ওপর ছেড়ে দিলাম। মনযোগানো তর্জমাকারীরা পাবেন আকর্ষণীয় পুরস্কার। আশাকরি গানের কোকিল বেবী তা নিজ হাতে তুলে দেবে। এবার সেই বহুজন-প্রিয় মৌলিক কবিতাটি পরিবেশন। সঙ্গে ‘নর্থবেঙ্গলের দোয়েল’-খ্যাত গানকন্যার জন্যে সাগরশুভেচ্ছা♠
গানের দেবী বেবী নাজনীন ♦ সালেম সুলেরী =====
{২৩ আগস্ট প্রিয়দিন জন্মদিনে}
গানের দেবী বেবী নাজনীন– কন্ঠসেবী নারী,
কেউ ডেকেছে ‘বঙ্গদোয়েল’, সুরের স্বপ্নচারী।
স্বরগ্রামে ভিন্নতা তাঁর, ভর-উদ্যমে চর্চা,
পিতার ছিলো বাঁশির বাদন, গাঁ সবুজের পড়চা–
উত্তরে যে বঙ্গ আছে– জন্ম এবং শৈশব,
রংপুরে বা সৈয়দপুরে মন রাঙা দিন– কৈ সব?
সবটা ঢেলে গান বেঁধেছে, প্রাণ বেঁধেছে সুরে,
সুর-পাখিদের পিঠ-আরোহী– আকাশ সমুদ্দুরে।
রাজধানী মায় বিশ্বব্যাপক, প্রবাস-স্বদেশ সেতু,
কৃষ্ণহীরক মঞ্চ মাতায়, সঙ্গীতে ধূমকেতু।
দু’চোখে আর ঘুম আসে না, ‘মরার কোকিল’ জাগে,
বাতাস যেনো এলোমেলো সুরের অনুরাগে।
কী সিনেমা, টিভির কাঁপন, সিডি’র আপনজনা
মুগ্ধ শ্রোতার ‘প্রিয়তম’– ভুলবোনা ভুলবোনা..
কী কারুকাজ সুর-দ্যোতনায়, মহাপ্রভুর দান–
বলছে লোকে চাঁদ উঠেছে, গাইছে সে চাঁদ গান।
কী আধুনিক, ভাওয়াইয়া মায় সবার পাশে গজল,
গান-গরিমা’য় ধ্যানের রাণী, দু’চোখ অশ্রুসজল।
দেশ-মাটি আর মানবতা– সৃষ্টিকলায় ন্যস্ত,
গানের পাশে কাব্যকলায় লেখায়-বলায় ব্যস্ত।
মন রাঙাতে গীত-বিনোদন, দেশ রাঙাতে কৃতী,
উন্নয়নে উৎপাদনে চায় দিতে রাজনীতি।
সূর্য যেমন আলোক বিলায়, বাতাস বিলায় শ্বাস,
‘গানের বেবী’ চায় বিলাতে– মাঠ-সেবা, বিশ্বাস।
চায়না কিছুই বিনিময়ে, নেই চাহিদা নিজ,
একটি ছেলে– বীর মহারাজ, দেশের রক্তবীজ।
স্বদেশ-প্রবাস মহান সেতু– তেইশে আগস্ট হাসে,
দিন-প্রিয়দিন জন্মদিনে শুভেচ্ছা-মেঘ ভাসে।
কীর্তিমানের সুর-অবদান, দেশ-সমাজের ঋণ,
নাও শুভাশিস, সর্ব আশিস– হে বেবী নাজনীন। ♥
♦স্বরবৃত্ত, নিউইয়র্ক, অগাস্ট ২০২০
# salemsuleri.ss@gmail.com