কাজী নজরুল ইসলাম : দ্রোহ, প্রেম ও অসাম্প্রদায়িক মানসলোক ।
রেখা আক্তার
প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর পৃথিবীতে মানুষের হতাশা অর্থনৈতিক বিপর্যয় এবং মূল্যবোধের অবক্ষয়ের প্রতিবেশে বাংলা সাহিত্যে যিনি ধূমকেতুর মতো আবির্ভূত হলেন, উল্কার মতো নিভে গেলেন তিনি দ্রোহের কবি প্রেমের কবি অসাম্প্রদায়িক কবি কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬)। জঞ্জালের মতো জড়িয়ে ধরেছিল যে সাম্রাজ্যবাদ তা দূর করতে না পারলে মানব মুক্তি অসম্ভব। কিন্তু তিনি একা কেমন করে ক্ষমতার টুটি চেপে ধরবেন? তিনি যেন রবীন্দ্রনাথের সেই অমোঘ বাণী থেকে চেতনা ধার করলেন, “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলরে ”
এবং লিখলেন,.
“আমি চির বিদ্রোহী বীর,
বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির উন্নত মম শির।”
-বিদ্রোহী
তিনি এমন সময় কবিতা লিখতে এলেন যখন গণ-মানুষের অধিকার রাষ্ট্রীয়ভাবে হরণ করা হচ্ছে। প্রবাদ প্রতীম নজরুল পরাধীনতাকে নিয়তি ভেবে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারলেন না। নিদারণ পীড়নে পীড়িত মানুষকে মুক্ত করতে অনাচার, দূরাচারের বিরুদ্ধে কলম ধরলেন । তাঁর ভেতরের দ্রোহী -মানস জেগে উঠলে অত্যন্ত বৌদ্ধিক চেতনা প্রসূত বাণীবন্ধ শৈল্পিক আঙ্গিকে উত্থাপন করলেন। এই প্রথম নতুন উপস্থাপনে শোষকের বিরুদ্ধাচ্চারণ দেখলো পুরো বিশ্ব। শোষিত মানুষের অন্তর্বেদনার গল্পে এঁটে দিলেন দ্রোহের বাণী । দৃপ্ত শপথে ঘোষণা করলেন-
“আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল
আমি দলে যাই যত বন্ধন যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল,
আমি মানি নাকো কোনো আইন,
আমি ভরা তরী করি ভরা ডুবি
আমি টর্পেডো, আমি ভীম, ভাসমান মাইন।” -বিদ্রোহী
সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে তাঁর ওই উচ্চারণ ভিত্ কাঁপিয়ে দিয়েছিল রাষ্ট্রযন্ত্রের । তাঁর কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে তাঁকে বারবার পাঠানো হতো জেলে। কিন্তু তাতে তাঁর কলম থেমে থাকেনি।
তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনা ঋদ্ধ ভাবাবেগে যেমন ভেসেছেন তেমনি তাঁর কবিতায় আছে, রোমান্টিকতার অসামান্য দ্যোতনা।
“মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য। ” -বিদ্রোহী
নতুন ভাবে জাগ্রত বাঙালি মুসলিম মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানস মৃত্তিকায় তাঁর চেতনার শিকড়টি গভীর ভাবে প্রোথিত হয়ে গিয়েছিল।
“মানুষের হৃদয় থেকে বড় কোন মন্দির-কাবা নাই”
একথা তিনি শুধু তাঁর কবিতায় ছন্দবদ্ধ করেই দায়িত্ব শেষ করেননি, অন্তস্তলে লালন করতেন। বিয়ে করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীকে। মানুষকে তিনি সর্বদেশের সর্বকালের জ্ঞাতী হিসেবে জেনেছেন মেনেছেন। উচ্চারণ করেছেন দৃঢ় চিত্তে –
“গাহি সাম্যের গান
যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাঁধা-ব্যবধান।
যেখানে মিশেছে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-ক্রীশ্চান।” -সাম্যবাদী
কথায় আছে, ঈশ্বর যাঁকে বর দেন তাঁকে কেউ পরাজিত করতে পারে না। সমস্ত বাঁধা অজুহাতকে পিছনে ফেলে সম্মুখে ধাবিত হয়েছেন ঠিক বীরের মতো। পৃথিবীর সকল অত্যাচারির প্রতি যেমন তিনি বিষোদগার করেছেন তেমনি অত্যাচারিতের প্রতি তাঁর ছিল সীমাহীন দরদ, মমত্ববোধ, অন্তর নিংড়ানো প্রেম । সমস্ত অনাসৃষ্টির মাঝে খুঁজেছেন, সৃষ্টিসুখের উল্লাস। তাই তাঁকে বলতে শুনি-
“আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে
মোর মুখ হাসে মোর চোখ হাসে মোর টগবগিয়ে খুন হাসে।”
উপনিবেশিক শক্তির শোষন বঞ্চনাকে তিনি মানতে পারেননি কখনো । তাঁর ‘জীবন বন্দনা’ কবিতায় শ্রমজীবী মানুষের জয় গান এভাবেই গেয়েছেন-
“শ্রম কিনাঙ্ক কঠিন যাদের নির্দয় মুঠিতলে
ত্রস্তা ধরণী নজরানা দেয় ডালি ভরে ফুলে ফলে”।
মাত্র আট বছর বয়সে পিতাকে হারিয়ে কবি চরম দারিদ্র্যে পতিত হন।
লাঙল, নবযুগ, ধূমকেতু সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সম্পাদনার কাজটি করেছেন সিদ্ধহস্তে।
অগ্নি-বিণা, বিষের -বাঁশি, সাম্যবাদী, সর্বহারা, সিন্ধু হিন্দোল চক্রবাক, সন্ধ্যা, প্রলয় শিখা ইত্যাদি কাব্যে তাঁর কবি প্রতিভা অসাধারণ নৈপূণ্য প্রকাশিত হয়েছে। মৃত্যক্ষুধা, বাধন হারা, কুহেলিকা, জীবনের জয়যাত্রা ইত্যাদি তাঁর ভিন্ন স্বাদের উপন্যাস।
অভাব-অনটন তাঁর নিত্যসঙ্গী হলেও মনের দৈন্য কোনদিনই ছিল না। প্রখর মেধা আর স্মৃতিধর এই ব্যক্তিত্ব প্রথম শ্রেণি পড়েই শিক্ষকতা করেছেন। আট বছর বয়সে লেটোর দলে যোগ দিয়ে পালাগান রচনা করেছেন।
কমল-কঠিনের অসাধারণ মেলবন্ধনে গঠিত ছিল তাঁর মানস লোক। অভাব ক্লিষ্ট মানুষকে যেমন অন্তর দিয়ে ভালোবেসেছেন আবার উপনিবেশিক শক্তির পাতা ফাঁদকে তিনি গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। অত্যাচারিকে ভস্ম করেছেন দীর্ঘশ্বাসে ।
তাঁর মানুষ ও মানবতার সম্পর্কে যে ঔদার্য্যপূর্ণ ইশতেহার তা বাংলা সাহিত্যে বিরল। তিনি চেয়েছেন সমতা মাতৃত্বের বন্ধনে সকল মানুষকে এক কাতারে দাঁড় করাতে। যখনই তাঁর ব্যত্যয় ঘটেছে তখনই তিনি দ্রোহের ঝাণ্ডা নাচিয়ে বিশ্ব- বীরদের আহ্বান জানিয়ে লিখেছেন –
“কোথা চেঙ্গিস, গজনী-মামুদ, কোথায় কালা পাহাড়?
ভেঙে ফেল ঐ ভজনালয়ের যত তালা-দেওয়া দ্বার ”
-মানুষ
এভাবে দ্রোহ আর প্রেমকে একই পৃষ্ঠায় সমান ভাবে কে আঁকতে পেরেছেন নজরুল ছাড়া? তিনি বিদ্রোহী কবিতায় বলেছেন-
“মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য।” -বিদ্রোহী
তাঁর সাহিত্য সাধনার জীবন মাত্র তেইশ বছরের। ১৯১৯- ১৯৪২ সাল পর্যন্ত।
অসম্প্রদায়িক ও সাম্যের এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল তাঁর “নারী” কবিতা। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় নজরুল নারী বিদ্রোহের ডাক দিয়েছিলেন ১৯২৫ সালে। তিনি সমস্ত নারীকে আহ্বান করেছেন –
“মাথায় ঘোমটা ছিঁড়ে ফেল নারী, ভেঙে ফেল ও শিকল
যে ঘোমটা তোমা করিয়াছে ভীরু ওড়াও সে আবরণ!
দূর ক’রে দাও দাসীর চিহৃ ঐ যত আভরণ!”
একই কবিতায় তিনি মানব জাতিকে হুশিয়ার করেছেন,-
“যুগের ধর্ম এই –
পীড়ন করিলে সে পীড়ন এসে পীড়া দেবে তোমাকেই
শোনো মর্ত্যের জীব!
অন্যেরে যত করিবে পীড়ন, নিজে হবে তত ক্লীব।”
-নারী
সাহিত্য সাধনার বেলাটুকুতে সৃজন করেছেন অসামান্য সকল কর্মযজ্ঞ। কাব্য, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, গান, শ্যামা সংগীত, গজল ইত্যাদি সাহিত্যকর্মে বাংলা সাহিত্যের ভান্ডারকে করেছেন সমৃদ্ধ। ১৯৪২ সালে তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। অথচ, তখন তিনি সাহিত্যিক হিসেবে অনেক বেশি পরিপক্ব এবং সিদ্ধহস্ত। তাঁর স্বাধীনতার অদম্য স্পৃহা উপনিবেশিক শাসকের পীড়নের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ও অদম্য এই কবির কণ্ঠে উচ্চারিত হলো বিদ্রোহের নব বাণী। ব্রিটিশ নাগরিক প্রিন্স অব ওয়েলস ভারতে এলেন। বিক্ষুব্ধ, ভারতীয়রা পালন করলেন ধর্মঘট।
নজরুল লিখলেন-
“লক্ষ্য যাদের উৎপীড়ন আর অত্যাচার
মোর নারায়নে হানে পদাঘাত
হেনেছে সত্য প্রত্যাশার
অত্যাচার, অত্যাচার।”
তারও পূর্বে সাপ্তাহিক বিজলী এবং মোসলেম ভারত পত্রিকায় নজরুলের বিদ্রোহী কবিতাটা প্রকাশিত হয়ে কবিকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে।
অবরুদ্ধ পৃথিবীর ক্ষোভ আবেগ এবং বেদনা বিদ্রোহী কবিতা সমুদ্র জলতরঙ্গের মতো ফুসে উঠেছিল। তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে উচ্চারণ করলেন- “আমি বিদ্রোহী আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব বিধাতৃর।” নজরুলের মুখে এ কবিতাটা শুনে রবীন্দ্রনাথ ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। নজরুল যে আঙ্গিকে ও ভাষায় বিদ্রোহ প্রকাশ করলেন এমনভাবে কেউ কখনো করতে পারেননি।।
রবীন্দ্রনাথ চেষ্টা করেছেন নজরুলের মতো লিখতে –
আমি আগন্তুুক
আমি জনগনেশের প্রচন্ড কৌতুক।”
জীবনানন্দ লিখেছেন-
“একদিন শুনেছ যে সুর পরানো তাই,
আমি আসিয়াছি আমার মতন আর কেউ নেই।”
নজরুলের” আমিত্ব “সকল কবির আমিত্বকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। বস্তুুত, তাঁর আমিত্ব প্রকাশ করবার ধরণ ও কৌশল হৃদয়গ্রাহী। অন্তর মাঝে লুকায়িত আমিত্ত্ব যা কবির সৃজনী কল্পনার মধ্যে জগতের যাবতীয় শাস্ত্র, পুরাণ, জ্ঞান-বিজ্ঞানের সর্বাধিক উপকরণের যোগে এক ভাব। চির-দুরন্ত-দুর্দম, দুর্মর এক কবি যিনি নিজেকে ছাড়া কাউকে কুর্নিশ করেন না। শক্তিশালী এই আমিত্ত্বের মাঝে তিনি দ্রোহ ও প্রেম এই দুটি সত্তাকে সমানভাবে লালন করেছেন। তাই কবিতায় বলতে শুনি –
“মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য।”
এই জাত বিদ্রোহী কবির কাব্য পঙ্গক্তির পরতে পরতে অত্যাচারীর প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ পেয়েছে “আমার কৈফিয়ত” কবিতায়-
“প্রার্থনা যারা কেড়ে খায় তেত্রিশ কোটি মুখের গ্রাস
যেন লেখা হয় আমার লেখায় তাদের সর্বনাশ।”
-আমার কৈফিয়ত
কবি পুরান, ইতিহাস-ঐতিহ্য থেকে শক্তি সঞ্চয় করে নিজের দ্রোহকে পরিমাপক হিসেবে ব্যবহার করেছেন। কাজী নজরুল ইসলাম “আমার কৈফিয়ত” কবিতায় লিখেছেন তিনি ভবিষ্যতের ‘নবি’নন বর্তমানেরই কবি।
নজরুলের কবি সত্তার মাঝে আরেকটি চমৎকার সত্তা তাঁর অসাম্প্রদায়িকতা যা আমরা তাঁর “কান্ডারি হুঁশিয়ার” কবিতায় দেখি-
“হিন্দু না ওরা মুসলিম জিজ্ঞাসে কোন জন
কান্ডারী বলে ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মার।”
-কাণ্ডারী হুঁশিয়ার
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করে যারা তাদের উদ্দেশ্য করে তিনি লিখেছেন -“মানুষ এনেছে গ্রন্থ, গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো।”
তিনি “সাম্যবাদী “কবিতায় লিখেছেন ¬-
“গাহি সাম্যের গান
যেখানে এসে এক হয়ে গেছে সব বাঁধা ব্যবধান। ”
নজরুল দুঃখকে জয় করা এক প্রবাদ পুরুষ। দুঃখের সাগরে খেয়া ভাসিয়ে সাফল্যের মুক্তো খুঁজেছেন। এক্ষেত্রে তিনি সঙ্গে নিয়েছেন রক্তমাংসের প্রেমিকাকে। যে রোমান্টিকতা নজরুলে ছিল তা তিনি শেলি কিটস বা বায়রন থেকে থেকে ধার করেননি। তা তাঁর মানসলোকে জন্মগত ভাবেই ছিল।
অপরিসীম দরদ ছিল বলেই অসম্প্রদায়িক কবি লিখেছেন অবলীলায় শ্যামা সংগীত গজল ব্যাখ্যা করেছেন তৌহিদের একেশ্বরতত্ত্ব।
বিভিন্ন ধর্ম সম্প্রদায়ের মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন প্রকাশের জন্যই ছিল তাঁর আয়োজন। অন্ত্যজ শ্রেণি, ব্রাত্যজনগোষ্ঠীর ব্যথা-বেদনা তিনি জন্মগত ভাবেই অনুভব করেছেন। তাই কুলি-মজুর কবিতায় বলতে শুনি-
“দেখিনু সেদিন রেলে,
কুলি বলে এক বাবু সা’ব তারে ঠেলে দিলো নিচে ফেলে।”
চোখ কেটে এলো জল, এমনি করিয়া জগৎ জুড়িয়া কী মার খাবে দুর্বল!” -কুলি মজুর
আবার নারী-পুরুষকে এক সুতায় গেঁথেছেন শৈল্পিক স্বাতন্ত্র্যে-
“এ পৃথিবীতে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।” -নারী
নজরুল আগাগোড়াই ছিলেন একজন রোমান্টিক প্রেমিক। নারীসত্তাকে তিনি গার্হস্থ্য জীবনে বাঁধতে চেয়েছেন আশায় ভরসায় ভালোবাসায়। নজরুল যখন যুবক। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম ছাত্রী ফজিলাতুন্নেছার প্রেমে পড়েন। তখনো নজরুলের কবিখ্যাতি সর্বত্র পৌঁছেনি। ধনীর দুলালী ফজিলাতুন্নেছা নজরুলকে প্রত্যাখ্যান করলেন। তাতে তিনি বেশ হৃদয়াহত হয়েছিলেন।
মূলত বিদ্রোহী কবি নামে পরিচিত হলেও তাঁর জীবনেও প্রেম এসেছে বারংবার কখনো প্রকাশ্যে কখনো নিঃশব্দে। তাঁর প্রেমমূলক কাব্য ও সঙ্গীত ভাবনায়, প্রেমিক নজরুলের বিরহী অভিমানী অতৃপ্ত ও ক্ষুধার্থ রূপ দেখা যায় তাঁর বিভিন্ন সৃষ্টিকর্মে
কবি নার্গিসের কাছ থেকে কষ্ট পেয়ে ফিরে গেছেন প্রমীলার কাছে যিনি তাঁর সকল দুঃখের চির সারথী। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর সঙ্গেই ছিলেন। তিনি কোনো কিছুর বিনিময়ে নিজেকে বিকিয়ে দেননি। নার্গিসের সাথে বিয়ের আগমুহূর্তে উঠে চলে আসেন। “চক্রবাক” কাব্যের বিভিন্ন কবিতায় তাঁর হৃদয় আঘাতের কথা লিখেছেন। “সাজিয়াছে বর মৃত্যুর উৎসবে” কবিতায় তাঁর বেদনা বিধুর গাঁথা তারই প্রমাণ। তিনি যখন অচেতন হয়ে যান তখন স্ত্রী আশা লতাই তাঁকে পরম মমতায় স্ত্রী এবং প্রেমিকার ভালবাসায় মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে রেখেছেন।
১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট এই মহান ব্যক্তিত্বের চির প্রস্থান ঘটে। নজরুলের কবি সত্তা যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবে তাঁর শিল্পকর্মের মাঝে। ২৫ মে এই ক্ষণজন্ম প্রবাদ পুরুষের জন্মদিন। জন্মদিনে অতলান্তিক শ্রদ্ধাঞ্জলি।