০১) বীভৎসতায় আতঙ্ক
স্মৃতির কপাট খুলে যায় মস্ত হা করা চোয়ালে
স্বাধীনতা শব্দটির উন্মিলনে—
অপ্রতিরোধ্য অস্ত্রের ঝনঝনানির শব্দ,
সারিবদ্ধ মাথার খুলির দৃশ্যচিত্র
চোঁখে মুখে বীভৎস আতঙ্কে হিম জড়ায় ।
খেই হারানো মনের চিপাগলি ঘর্মাক্ততায় ভিজে
জনপদের ঘাটে ঘাটে শকুনের ঠোঁটের তৃষ্ণার
প্রতিচ্ছবি ছায়া হয়ে ভাসতে থাকে—
চিন্তাগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে
অচেনা রাজ্যের প্রবেশ পথে; নিজের মধ্যে
নিজেকে হাতড়াতে থাকি মগ্ন অচৈতন্যে।
শহীদের রক্ত স্রোত,ভাসমান লাশের দুর্গন্ধ
শিরার মাঝে স্বগোতক্তি হয়ে চিৎকার করে—
হাড়ের জীবাশ্ম মাটি ভেদ করে
বলতে থাকে স্বাধীনতা অর্থ কী —দাও বলে
ত্যাগীর আত্মার হাহাকার বায়ুর বুকে ঘুরছে!
শহীদ জননীর চোঁখে নদীর জল ঠিকানা পায়,
অশ্বত্থ বৃক্ষের তলায় বসে ভাবনার দ্বৈরথে
এলোমেলো ইতিহাসে হাবুডুবু খাই।
বীরাঙ্গনা মা,বোনের ইজ্জত পৎ পৎ করে উড়ে
লাল সবুজের পতাকার বক্ষে,,,
কুমারী মাতারাও যুদ্ধ শিশুর ধমনীতে রক্ত
প্রবাহিত করেছে,,, নিয়তি কখনোই ছাড় দেয়নি
জীবনের পরাস্থ কোষাগার থেকে।
স্বাধীনতা,স্বাধীনতা মহা অর্জন
মহামূল্য ত্যাগের ফসল!!
০২) দূর সীমানায়
সময় সংলাপ করতে-করতে এগিয়ে চলে
জীবন তারই মন্ত্রে দীক্ষার মন-বলে,
দূর-সীমানায় কখনো ফানুস-রূপে উড়ে
শূণ্য উপত্যকায় আপন কাব্যকথন চড়ে।
বনভূমে বৃক্ষের সারি আত্ম তৃপ্তিতে
ঠাপিয়ে ঝাঁপিয়ে আকাশের উঁচুতে গড়ায়,
শাল-পিয়ালের আগার ডগায় সূর্যের হাসি
কূহূ-কেকা পাপিয়ার ঠোঁটে রাগিনির চাষী।
প্রেম-পূজারী ভজন সাধনে বিরহে বিবাগী
দূর-সীমানায় ভেসে আসছে পান্থজনের বাঁশরী,
ওই নীলিমা ডাকে পথের বাঁকে বাঁকে —
তানপুরার সুরেলা-কণ্ঠে তাকাই কপাটের ফাঁকে।
স্বপ্নের সুনামিতে সাত রাজ্যের বিস্ময়ে
অনেকটা পথ চলেছি বহুকাল মারায়ে —
বিরামহীন ভাবনাগুলো সাকুল্যে সঙ্গী হয়ে
সন্নিকটে কে আসছে ধুম্রজালে আঁধার লয়ে!
দূর- সীমানায় উদ্ভাসিত ধাঁধানো আলোর বন্যা
কোথা থেকে ধেয়ে আসছে মধুকরী মন-ময়না ,
বিলম্বিত স্রোতে অনিশ্চিত ঘেরাটোপে কাব্যচয়ন
সীমানায় অপেক্ষমান মীনাক্ষী নয়নে কবির-কাহন।