প্রেমিক ঘড়ি (মেহবুবা হক রুমা) সবাই সব পায় না। যেমন আমার আর তোমাকে পাওয়া হলো না। তোমার কাছে যাবো বলে যতবার তৈরি হয়েছি। আকাশ জুড়ে মেঘ নেমেছে,পথ ভরেছে জলে কাদায়, আবার ফিরে এসেছি। এই তো সেদিন ভাবলাম ফিরি। খবর এলো তোমার বাড়ির কাছে বিস্ফোরিত হয়েছে আগ্নেয় গিরি। খুলে ফেললাম কপালের লালটিপ আর সবুজ শাড়ি। আরেকদিন ভেবেছি আজ সারাদিন, তোমার জন্য তোমার হব, কিছু ছোট কথা কব। তাও হলো না তুমি অনেক ব্যস্ত থাকো, সময় কোথায়? সময় থাকে অনেক বেশি তাকিয়ে থাকি ঘড়ির কাটায়। রাত দিন চব্বিশ ঘন্টা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে থাকি। ঘড়ি হঠাৎ ধমকে বলে ,, আরে মেয়ে তুমি বোকা…
Author: প্রতিবিম্ব প্রকাশ
নারীলিপ্সুক (জাহানারা বুলা) হাত ধরে থাকো আমার। অথচ, তাকিয়ে থাকো তুমি অন্য কারোর দিকে! কি হবে চেয়ে থেকে অবশেষে আশ্রয় প্রশ্রয় সবই তো আমার তা তুমি জানো আমি জানি জানে মধ্যবর্তিনীরাও। ঘ্রাণ শুঁকে শুঁকে শিকারের অভ্যেসটা পালটাও নাহয় মানুষ থেকে তুমি প্রাণী হয়ে যাবে- ঠ্যাং উঁচিয়ে মুত্রত্যাগী প্রাণী। হলেও ভালো কিন্তু, সম্পূর্ণ বিশ্বস্ত কি তুমি থাকতে পারবে কোথাও তোমার তো দেহ জুড়ে প্রেম তুমি যে নারীলিপ্সুক। ২১ জানুয়ারি, ২০২২ ঢাকা।
দুঃসাহস (জেসমিন সুলতানা চৌধুরী) আমি দুঃসাহস! তোমরা আমার বিচার চাও? নির্বোধ! শান্তিতে খাও, ঘুমাও মুখে তালা লাগাও। আমাকে তোমরা ধিক্কার দাও? কেন দাও ধিক্কার? আমি এদেশের অহংকার! অদৃশ্য শক্তি বানিয়েছে আমায় হাতিয়ার, আমিই ঢাল,আমিই তলোয়ার। আমি শুধু প্রাণ হন্তারক নই, লাশ টুকরো টুকরো করতে কাঁপে না হাত, উচ্চ হাস্যে উল্লাস করি, করি বাজিমাত। আমি নই কুলাঙ্গার আমি গর্বিত সন্তান এদেশের। আমি মায়ের সামনে মেয়েকে করি ধর্ষণ ভাইয়ের সামনে বোনকে। স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে হত্যা করি স্বামীকে, বাবার সামনে ছেলেকে। তোমরা আমাকে ঘাতক বলো, ধর্ষক বলো, কেন বলো? আমি লজ্জা নই আমি এদেশের অলংকার! আমাকে ছাড়া চলে না হলদখল, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, পেট্রোল…
এক জীবন ঝরে যায় সুরমা খন্দকার। ঝরাপত্র পল্লবী সম এক জীবন ঝরে যায়, এক পাঠ কাব্য অন্তঃসারশূন্য। মাঝখানে পুলকিত মন কত-শত পাওয়া, চাওয়া চাহিদা অজস্র হাজার উন্মাদ বন্য। এক পালি চাঁদ হাসে তীর্যক জীবন সূর্য পোড়ায় দ্রোহে, ম্রিয়মান` মায়াবী বিকেল মৃদু সমীরণ চুপচাপ জীবন হায় একা ফিরে যায় প্রতি শব্দের একই অর্থে ভীষণ শূন্যতায়। দেউলিয়া তৃষ্ণা। তোমাকে চাইতে চাইতে তৃষ্ণা বিতৃষ্ণায়, কি ভীষণ রকম কাঙাল হয়ে যাই। অতৃপ্তি, বিচ্ছেদের যে আসক্তি, বেগানা ব্যাথা দোল দেয় দিনের শেষ বেলায়। তীরে উঠা কতো কঠিন যে বুঝে, সে তো পরে ব্যাথার এ অঞ্জলি।। সংঙা হারিয়ে ফেলা অনন্তকালকে যে ভালোবাসে, আকাঙ্খা ও তার…
আধুনিক সংবাদপত্র ও বহুমাত্রিক সাংবাদিকতার প্রবাদপুরুষ প্রিয় শ্রদ্ধেয় নাঈমুল ইসলাম খানের আজ জন্মদিন। শুভ দিনে আবারও শুভ কামনা জানাই, প্রিয় নাঈম ভাই নাঈমুল ইসলাম খান (জন্ম: ২১ জানুয়ারি ১৯৫৮) বাংলাদেশের একজন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। তিনি ১৯৮২ সাল থেকে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে সক্রিয় রয়েছেন। তিনি বর্তমানে বাংলা ভাষার দৈনিক আমাদের নতুন সময় এবং ইংরেজি ভাষার দৈনিক দ্য আওয়ার টাইমসের সম্পাদক।
নিয়তি (নিপা খান) হে মানবজাতি কিসের এত বড়াই আজ মরলে কাল দিন হবে আড়াই। এত অন্যায় আর পঙ্কিল মানসিকতায় মাথা নোয়াতে হবেই একসময় না একসময়। সত্যের জয় আছেই আছে। এখনো আকাশ নীল ফুল ফোটে পাখি গায়। এখনো পৃথিবীর কোথাও না কোথাও প্রতি সেকেণ্ডে সেকেণ্ডে আজানের ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়, আমরা বেঁচে আছি সেই অধিপতিরই ছায়ায়। অন্তরের হায় আর প্রকৃতির শোধ হবেই হবে, বুঝেনা যে সে বরাবরই নির্বোধ! আজ হয়তো সময়, ক্ষমতা সবই আছে তোমার, কাল যে থাকবে কে, তা বলতে পারে?
আমি হেঁটে চলি শেষ ঠিকানার পথে ফরিদা আক্তার আমি হেঁটে চলি অজানা পথে কিছু পাওয়ার আশা, কিছু স্বপ্ন নিয়ে ব্যর্থতা, দুঃখ, কষ্ট, পাওয়া না পাওয়া দেখছি চলার পথে দেখলাম এক আনন্দ মিছিল আসছে এগিয়ে এত আনন্দ দেখে জানতে চাইলাম আগ্রহে নতুন বছরে হৈ-হুল্লোড়ে মাতানো এক তরুণ বলল এসেছে নতুন বছর, নতুন আনন্দ, নতুন পাওয়া, তাই আছি আমরা হর্ষে। আমি হেঁটে চলি আনন্দচিত্তে জানতে চাই জীর্ণশীর্ণ কাপড়ের এক বালকের কাছে নতুন বছর হয়েছে শুরু তোমার কাছে এর কি মানে? নতুন-পুরনো বুঝি না আমি একবেলা খাবার আমার কাছে দামি। উত্তাপহীন পথে আমি হাঁটি আনমনে যেতে যেতে পথে পরিপাটি যুবকের কাছে বললাম অকপটে…
অতলস্পর্শ মিরা মাহমুদ সহসা পাখি হয়ে উড়ে যাবো আকাশে মিলে যাবো প্রচন্ড ধুলি ঝড়ো হাওয়াতে ফিরবো না আর কখনও এই অতলস্পর্শে জমবে না বুকে অন্ধকারাচ্ছন্ন তুষারপাত ভাঙবে না মন ঝরবে না ঝর্ণাধারা অশ্রুপাত উদাসী বাঁশরীর বাঁশি আর বাজবে না নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে নিদারুণ মর্মপীড়া কেউ তা জানবে না …
আদিম বিলাসিতা (আজমেরী) আমি শুধু চোখের জলেই বলতে চেয়েছিলাম যা বলার; সবটুকুই নীরবে… নির্জন নিস্তব্ধ রাতের বুক মথিত করে রাতের বাতাসে মিশে গিয়েছিল সে জলের আদ্রতা… জোছনার গায় আর শিশিরের ডগায় মিশে তা হয়ে গিয়েছিল পরিযায়ী কোন দুঃখ… দুঃখ দের কোন নির্দিষ্ট রং থাকা ভালো না- তাইতো ভুলে যেতে পারলেই যে কোন বিচ্ছেদই সুখময় হতো বিরহের গায়ে লাগতো গোলাপের হাওয়া… ভুলে যেতে পারলেই আমাদের সকল অস্তিত্ব, সুখ এত পরনির্ভরশীল হতো না- সবকিছু ভুলে যেতে পারলেই জন্ম নিতো – দারুণ এক বোধ, অনবদ্য আরেক ব্যক্তিগত সম্পর্ক… ভুলে যেতে পারলেই ঋদ্ধ হতো ভালোবাসার শর্তহীন সমর্পন ঘুচে যেত জীবনের যাবতীয় লেনা-দেনার হিসেব !…
স্বোপার্জিত দুঃখ বেদুইন পথিক নিঃশব্দেই ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়েছে অখণ্ড মানবসভ্যতার মতো নিঃস্বপ্ন নিদ্রা-অলীক বেদনায় পাশ ফিরেছি জবুথবু শীতার্ত শরীর নিয়ে তোমার উষ্ণ লাভায় আচমনের নিমগ্ন প্রত্যাশায়। ক্ষণকালের জৃম্ভণে জাগে যে শরীর-চকচকে বালুর দ্বীপ বাৎসায়ন বিলীন সুপুষ্ট হিমালয়ে আচমকা তুষারপাতে। দীর্ঘ নিশির শিশি ভরে ওঠে কানায় কানায় শিশিরের স্রাবে। বর্ষার শেষে কঙ্কালের মতো ভেসে ওঠে যে চর-আলুথালু ঘনকেশা রমণীর মতো কাশ আর ঝাউয়ের বন শারদীয় কাশফুল খোঁপায় জড়িয়ে সলজ্জ পদক্ষেপে ফেরে ঘরে দুধকুমারের এঁটো জলে প্রক্ষালণ শেষে অষ্টাদশী হাসনা বানু। স্রোতধারে পানার মতো ভেসে যায় স্নিগ্ধ জলের প্রথম রোমাঞ্চিত পরশ। তরুণি’র আকাশে খেলা করে পেঁজাতুলোর মতো মেঘদল মঞ্জীরধ্বনি ওঠে সলজ্জ…
