কেউ নেই আজ পাশে ৷। সুরমা খন্দকার।। এক রাস্তায় হাঁটছিলাম তুমি, আমি, আমরা, অনুজরা। শেষ লোকটা চলে যাবার পর আর কেউ নেই আমাদের দেখার। কাঁদছি, হাসছি, একই গ্রহে, সবই আছে তবু কী যেন নেই একা হাঁটছি একা…. লোকটি যাবার পর রাস্তা ভীষণ ফাঁকা। এক পারলৌকিক স্তব্ধতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছে অনাবৃত হতে, উপেক্ষা করতে, অনাদৃত করতে আমাদের একে অপরকে। আমরা নিস্তরঙ্গ নদীর মতো, পিছনের আকর্ষণ ভুলে আমরা ক্ষিপ্ত হই, অতীত ভালোবাসা আমাদের পায়ের কাছে দম খিছে পড়ে থাকে- অর্থহীন সমস্ত কথামালা আমরা গুছিয়ে রাখি দুরারোগ্য দুঃখ ভেবে। বিমূর্ত অনিয়ন্ত্রিত শব্দাবলী আমাদের অতি প্রাকৃত দূঃখে নিমজ্জিত আকাশ। মিথ্যের সাজানো সুচারুতায় আমাদের আত্মার…
Author: প্রতিবিম্ব প্রকাশ
আমারও অভিমান হয়। গল্প। [ফারজানা ইয়াসমিন] দুই দিন ধরে অসুস্থ। মা কল করে বলে, বাচ্চারা কেমন আছে? ঠিক মতো খাওয়াই কিনা? ওরা দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। একদম খেয়াল রাখি না।কী করি সারাদিন? আরও দশজনের বাচ্চার উদাহরণ দিয়ে বসে।মাথা নষ্ট হয়ে যায়। সেদিন শরীর মন দুটোই চরম খারাপ ছিল। তাই বললাম, মা আমিও একটা মানুষ। কতদিন জিজ্ঞেস করো না আমার কথা? হাজার দোষ ধরো সবাই। একবার ভেবে দেখেছো আমিও ক্লান্ত হই?সব মানুষ এক হয় না।আমি হয়তো একটু বেশি অকেজো মানুষ। বলে ফোন রেখে দিলাম। মা ফোন দিল আবারও। আমি বন্ধ করে রাখলাম। এখন আদর, স্নেহ, মায়া, মমতার কাঙ্গাল হয়ে যাচ্ছি। এগুলো…
বন্ধনে মায়া এই ফুলটারে ভুল করে খোঁপায় পরিস না তুইতো জানিসরে মেয়ে ওটা শুকিয়ে যাবে কিম্বা মারিয়ে দিবি শুয়ে-বসে। বরং ওটা লুকিয়ে রাখ সযত্নে বইয়ের ভাঁজে মনের ভেতর মায়া নিয়ে। তুইতো জানিসরে মেয়ে প্রেমের ভাঁজে লুকিয়ে থাকে শিল্পীর কারুকাজ – ভালবাসা! সময়ের স্রোতে ভেসে যায় ভালবাসা আর প্রেমের অমোঘ টান। সংগোপনে মায়ার টানে ফিরে পায় তার স্থান। ছায়া আহ্বান কে যেন ডাকে শুভ উল্লাসে হৃদয় তারে বিরহের তানে বাজায় অহর্নিশি। ফিরার পথে ফিরায় না তারে বসত তার অন্তরের ঘরে । তার ঘরের আড়ালে মরে পিরিতে ভরা সুর মূর্ছনা! আলো-আঁধার ভুলতে ভুলতে ভুলেই গেছি তবু ভুলের মাঝেই বেঁচে আছি।…
মানবতার জয় [মোঃ হেদায়েতুল ইসলাম] আমি স্বপ্নবাজ তাই মানবতার স্বপ্ন দেখি, ছন্দে ছন্দে কিছু মানবিক স্বপ্ন যাই লিখি। আলসেমি করে স্বপ্ন কভু দেখো না, উদ্যমী হতে কভু ভয় পেয়ো না। সুনীতি যার নাই তার সাথে মিশো না, অত্যাচারীকে কভু ছাড় দিও না। সময়ের অপচয় যে করে সে চরম বোকা, ঠকে যাবে ঠেকে যাবে খাবে সে ধোঁকা। জ্ঞানী-গুণী যারে দাও তারে ভালোবাসা, অন্ন-বস্ত্রহীনকে দাও অন্নবস্ত্র পূরণ হোক এ আশা। যার নাই গৃহ তারে দ্রুত গৃহদান করো, আমরন দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রাণপণে লড়ো। চিকিৎসা যার নেই তারে সেবা দাও, এতিম,অসহায়দের বুকে টেনে নাও। সবার জন্য শিক্ষা বাস্তবায়ন করা চাই, মানবতার জয় হোক এসো…
বৃষ্টিতে ভিজবো বলে [তসলিমা হাসান] বৃষ্টির দিনে তোমার সাথে একদিন ইচ্ছেমত ভিজবো, আমি তোমায় উপহার দিব কদমফুল। আমি বলবো শহরের বুকে বৃষ্টি নেমেছে, চলো ভিজি; কেউ কিছু ভাববে,তারা ভাবুক! মধ্যরাতে একদিন জানালার ওপাশে রাস্তায় দাঁড়িয়ে, চিৎকারের সুরে ডাকবো তোমায়, আমি তোমাকে উপহার দিবো একটা রাত। আমি বলবো চলো শহরে দু’জনে ঘুরি— দেয়াল থেকে মন খারাপের কারণগুলো মুছে দেই; কেউ-কেউ পাগল ভাববে,তারা ভাবুক! যেদিন শহর কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাবে, সেদিন আমি আসবো ‘ভালোবাসা’ উপহার নিয়ে। আমি বলবো যা কিছু হোক,আমায় ভালোবাসবে তো? লোকে বারণ করবে, বাঁধা দিবে; যে যা বলবে, তারা বলুক। তবুও, সারাজীবন আমায় ভালোবাসবে তো? কানাডা: ০৩-০৫-২০২২
নিয়তি [উম্মুল খায়ের] আমি তো মরেছি মরার আগেই রঙিন হতাশা ডাকছে আদেশে আঁধার জগতে আশার ঠিকানা কোথায় লুকায় নিবাস থাকতে? টুকরো পাথর বুকের ভেতর সেঁধিয়ে যাচ্ছে কেবল টানছে অচেনা কষ্ট; কান্না পাচ্ছে আমি তো ছুটেছি পুরোনো ছন্দের পেছনে শুধুই এমনি করেই চলে যাব দূরে সুরে সুরে ঠিক ভুলে যাব পথ, ভুলে যাব সব থেমে যাবে জানি, জীবন বাজনা, মধু-কলরব নীরবে নিভৃতে স্বপ্নের পাপড়ি ঝরে যায় কিছু ঘুমের ভেতর মায়ার রহস্য থাকে পিছু পিছু গোপন নিয়তি টেনে নিবে তবু দূরে- বহুদূরে।
জুম্মাবার নামায জুম্মাবার নামায গরীবের হজ্জ জুম্মাবারের নামায নামাযের বস, জুম্মাবারের নামাযে নেকির নেই অন্ত জুম্মাবার নামায নামাযে আনে বসন্ত। জুম্মাবার নামায করো না ক্বাযা জুম্মাবার নামায ক্বাযা হলে পাবে অনেক সাজা জুম্মাবার নামায পাওয়া কপাল জুম্মাবার নামায শান্তির পাল। জুম্মাবার নামাযে গরীব- ধনী আসে সমতায় জুম্মাবার নামাযে কেউ থাকে না একক ক্ষমতায়, জুম্মাবার নামাযে পাবে সম্প্রীতির স্বাদ জুম্মাবার নামায না পড়লে পরকাল বরবাদ। তোমার ইঞ্জিনিয়ার স্বামী তোমার ইঞ্জিনিয়ার স্বামী তোমার স্বামীর শরীরের কল- কব্জায় টাকা করে বাস! আমি দুই টাকার কবি আমার থেকে টাকা পাবে না পাবে শুধু হতাশ। তোমার ইঞ্জিনিয়ার স্বামীর টাকার নেই অভাব, আর আমি…
ও মন [রুবী শামসুন নাহার] আমার হঠাৎ মনে হলো একটা তোতা পখি হলে কেমন হয়?কথা বলা তোতা? চিলের ডানায় চড়ে, ধূসর পৃথিবী তো, অনেক , দেখলাম। এবার নাহয় চাতক পাখি হয়ে চাঁদের সাথে সনধি করতাম। মানুষ জন্ম বৃথা হয়ে গেল- প্রহর গুনতে গুনতে, চতুর শেয়াল শকুনের পেছনে, ছুটতে, ছুটতে বৃথা অপেক্ষার সানাই বাজানো, শুনতে শুনতে। ঘাস ফড়িং হলেও আপত্তি নেই, ঘাসে ঘাসে ঘুরবো কাঁচপোকা খাবো- সাথে মুক্ত বাতাস- বলি,বাড়ি, ঘর দালান -কোঠারও দরকার নেই। নাহ, থাকবে দামী গাড়ি – বাড়ি করার নিত্য ফিকির ফন্দি- না থাকবে, মানুষ হয়ে বেঁচে থাকবার কঠিন লড়াই। একটা জীবনে কত কসরত, একটু ভালো, থাকার জন্য…
সোনালি অতীত [তসলিমা হাসান] অনেক-অনেক দিন আগে আমি কারো অপেক্ষায় ছিলাম, যে হৃদয়ের সবগুলো দরজায় কড়া নাড়বে; আমার সব অবরুদ্ধতা ভেঙে দিয়ে, আমায় উজাড় করে ভালোবাসবে, কোন কিন্তু থাকবে না; কোন দ্বিধা থাকবে না; কোন অপূর্ণতায় কিছু যায় আসবে না। কোন বৈষয়িক হিসাব নিকাশ যেখানে থাকবে না, যেখানে মন ছুটে যাবে সাইক্লোনের মতো, সুনামির মতো, ভাসিয়ে নিয়ে যাবে আমায় নিশ্চিন্তে, সীমাহীন আত্মবিশ্বাসে, ঠিক যেমন অভ্যুত্থান রুখে দেয় বিপর্যয়। যুগ যুগ ধরে সেই অবধারিত আগমন, অনুরণন, সমর্পন, স্পন্দন সে তুমি। তসলিমা হাসান কানাডা: ০৬-০৫-২০২২
সময়ের পালাবদল [ফাতেমা ইসরাত রেখা] আমি জানি, আমার অনেক কিছুই তোমার ভালো লাগে না আবার তোমার অনেক কিছুই হয়তো আমারও ভালো লাগে না আচ্ছা মানুষের সব কিছু যদি মিলে যেতো তাহলে কি হতো! মানুষের আকাঙ্ক্ষারা কি নিবৃত্ত হয়ে যেতো! তাহলে কি দু’টো মানুষের অবয়ব আলাদা থাকলেও মানুষ দু’টোর আলাদা সত্ত্বা থাকতো! হিসেবটা কেমন গরমিল, তাই না? তোমাকে আজকাল বুঝি না খুব একটা। অনেক দূরের কেউ মনে হয়, কখনো বা খুব কাছের তোমারও কি এমন হয় মাঝে মাঝে ? তুমিও কি কাছে টেনে আবার হারিয়ে ফেলো আমাকে! নাকি তোমার ভাবনা জুড়ে আমি নেই আর আগের মতো। আসলে সময়ের হেয়ালিতে আমরা হেঁটে…
