০৬ জুলাই এই দিনে জলাতঙ্ক রোগের টীকা আবিষ্কার করেন লুই পাস্তুর
লুই পাস্তুর (ডিসেম্বর ২৭, ১৮২২ – সেপ্টেম্বর ২৮, ১৮৯৫) একজন ফরাসি অণুজীববিজ্ঞানী ও রসায়নবিদ। তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেন যে
অণুজীব অ্যালকোহলজাতীয় পানীয়ের পচনের জন্য দায়ী। জীবাণুতত্ত্ব ও বিভিন্ন রোগ নির্মূলে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষেধক আবিষ্কার করে স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন।
দিনটি ছিল ৬ জুলাই ১৮৮৫, বহুদূর থেকে একজন মা উপস্থিত হলেন প্যারিসে বিজ্ঞানী লুই পাস্তুরের গবেষণাগারে। তাঁর সঙ্গে ৯ বছরের সন্তান জোসেফ মিয়েস্টার। দুদিন আগে স্কুলে যাওয়ার পথে এই বালকটিকে পাগলা (সংক্রামিত) কুকুর ভীষণভাবে কামড়ে দিয়েছে। ডাক্তাররা একবাক্যে বলে দিয়েছেন, ছেলেটির বাঁচার মোটেই কোনো সম্ভাবনা নেই, কারণ বালকটির দেহে মোট ১৪টি কামড়ের দগদগে দাগ। এমন কামড়ে অচিরেই তার ভাইরাসজনিত রোগ জলাতঙ্ক দেখা দেবে এবং অসহনীয় যন্ত্রণায় তিলে তিলে মারা যাবে ছেলেটি। সে সময় তা-ই হতো, জলাতঙ্কের রেবিস ভাইরাস ঠেকাবার কোনো উপায় জানা ছিল না মানুষের। রেবিসের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে তীব্র খিঁচুনি ও পক্ষাঘাতে দুঃসহ কষ্টে রোগীর মৃত্যু হয়। প্রতিবছর জলাতঙ্কে অগণিত মানুষ প্রাণ হারায়।
লুই পাস্তুর অনেক দিন আগে থেকেই এমন মারাত্মক রোগের প্রতিষেধক উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি রেবিস ভাইরাসে সংক্রামিত খরগোশের অস্থি-মজ্জা শুকিয়ে নিয়ে (দুর্বল) রেবিস ভাইরাসকে টিকা হিসেবে সংক্রামিত কুকুরের দেহে প্রয়োগ করে বেশ কিছু কুকুরকে সংক্রমণমুক্ত করেছিলেন। অনেকটা বিষে বিষক্ষয়। তিনি বুঝতে পারলেন, জলাতঙ্ক নিরাময়ে মহৌষধের সন্ধান তিনি পেয়েছেন। এখন বাকি শুধু মানবদেহে এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করা।এদিকে সন্তানকে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনার একান্ত আশা নিয়ে একজন অসহায় মা যখন তাঁর দ্বারে এসে দাঁড়ালেন, তখন তিনি অনেকটা বাধ্য হয়েই বালকটির দেহে নিজের উদ্ভাবিত প্রতিষেধক প্রয়োগ করলেন। পরবর্তী কয়েক দিন ধরে নির্দিষ্ট মাত্রার প্রতিষেধক টিকা প্রয়োগ করে বালকটিকে সুস্থ করে তুললেন আর আতঙ্কগ্রস্ত মায়ের মুখে হাসি ফিরিয়ে আনলেন। আবিষ্কার হলো জলাতঙ্কের কার্যকর প্রতিষেধক টিকা, মানুষের হাতে পরাভূত হলো আরেকটি অতি ভয়ংকর ভাইরাসঘটিত রোগ।
এমন আর একটি আবিষ্কারর এখন এই অতিমারিতে বড় প্রয়োজন।করোনা বশিকরণ/দূরীকরণ
( গুগল সহায়তা, pics: FB)