লুকানো বসন্ত শিরীনা ইয়াসমিন কে কাকে আগে চিনেছিলো? কখন হৃদয় বাঁধা পড়েছিলো? কখন বুকের মাঝে লুকানো বসন্ত জেগে উঠেছিলো? টের পায়নি দুজনের কেউ। বারবার পথের টানে ফিরেছে একই পথে। আজ আবার সেই পথে হাঁটছে যখন — একটু ছোঁয়ায় শিহরণ জাগলো মনে! কাঙ্ক্ষিত স্পর্শে গগনে জলধি উঠছে ডেকে বাকশক্তিহীন, অবস দেহ, বয়ে চলেছে সর্বশক্তি নিয়ে। আনন্দে ভাসছে, শরীর টলছে, আকাশ কাঁপছে দু’ফোটা বৃষ্টি যেন আজন্ম কাঙ্ক্ষিত। আকাশ যেন প্রতীক্ষায় ছিলো এই মোহময় ক্ষণের! আকাশ আর মনের দেয়া গর্জে চলেছে কম্পিত হৃদয়, আবেশে চোখ এলো বুঁজে। অজান্তেই হাতের মুঠোয় হাত, পরস্পর হাত ধরাধরি করে হাঁটছে– কী হতে চলেছে? জানেনা ওরা! যেন কল্পিত…
Author: প্রতিবিম্ব প্রকাশ
০১) বীভৎসতায় আতঙ্ক স্মৃতির কপাট খুলে যায় মস্ত হা করা চোয়ালে স্বাধীনতা শব্দটির উন্মিলনে— অপ্রতিরোধ্য অস্ত্রের ঝনঝনানির শব্দ, সারিবদ্ধ মাথার খুলির দৃশ্যচিত্র চোঁখে মুখে বীভৎস আতঙ্কে হিম জড়ায় । খেই হারানো মনের চিপাগলি ঘর্মাক্ততায় ভিজে জনপদের ঘাটে ঘাটে শকুনের ঠোঁটের তৃষ্ণার প্রতিচ্ছবি ছায়া হয়ে ভাসতে থাকে— চিন্তাগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে অচেনা রাজ্যের প্রবেশ পথে; নিজের মধ্যে নিজেকে হাতড়াতে থাকি মগ্ন অচৈতন্যে। শহীদের রক্ত স্রোত,ভাসমান লাশের দুর্গন্ধ শিরার মাঝে স্বগোতক্তি হয়ে চিৎকার করে— হাড়ের জীবাশ্ম মাটি ভেদ করে বলতে থাকে স্বাধীনতা অর্থ কী —দাও বলে ত্যাগীর আত্মার হাহাকার বায়ুর বুকে ঘুরছে! শহীদ জননীর চোঁখে নদীর জল ঠিকানা পায়, অশ্বত্থ বৃক্ষের তলায়…
নীরব অশ্রুরেখা কাকলী কর ঝুমা নির্ঘুম রাত, অপূর্ণ স্বপ্ন! চারিদিক গভীর শূন্যতার সিন্ধু জল, চোখের অন্তরীণে বিমূর্ত আগুন ছবি, এ যেন ধুসর আকাশে ঘননীল অশ্রুপাত! আমার একাকিত্বের আর্তচিৎকার তুমি শোননি, শুনেছিল মেঘ, গর্জে উঠেছিল বারংবার ক্রোধের অনলে! ঝাঁকরা চুল উড়িয়ে ভেসে এসেছিল হাওয়া; আকাশে উঠেছিল ঝড়ঝম্পা। ইন্দ্রের ধনুক দৃপ্ত প্রতিবাদ করেছিল লুন্ঠন-উল্লাসে! আমার কম্পিত চোখ তোমার জন্য প্রতীক্ষা করেছে সহস্রবার, প্রতিবার হয়েছে রক্তাক্ত! তোমার মনের অতল জল স্পর্শ করতে যেয়েও পারিনি, হয়েছি পালছেঁড়া নৌকা! অবশেষে হলাম নিকষ নিস্তব্ধ রাতের ঘূর্ণিঝড়, অন্ধকার শ্মশানের ফসিল।
নাম, সর্বনাম। সুরমা খন্দকার। খেদোক্তি নিয়ে খুঁজিনি কখনো কোনো প্রত্যাখানের মানে। পারিনি কিছুই করতে বেজায় ব্যকুল মনে দু’হাতে অবলীলায় ঝরে যাওয়া সময়, সে সব জানে…. ভালবাসি বলায় যে শক্তির পরিচয় তা এই দূর্দশাগ্রস্ত মনে একান্তে লালিত শক্তি আমার গোধূলি জমা দু’চোখে স্বপ্ন নাকি দুঃস্বপ্ন? না অজানা দুর্গতি যাচাই করিনি কভু, মেনে নিয়েছি অবলীলায় … তুমি না বললেই না হয়ে রয় কথারা সাজেনা গোলাপ কুঁড়িতে তুমি এগিয়ে আসলেই তোমার পাদ দাগ পড়লেই,সৃষ্টি গোলাপ বাগানের একেই, এতো কিছুর পাওয়া ও সর্বহারা…. জানি, তুমি উদাস নও স্থির পথিক — বললেই বেরিয়ে আসে জীবন থরোথরো প্রেম, অস্থির দিক্কিদিক প্রাণ পায় মরু সমতলে বেখেয়ালে ছুঁয়ে…
কাল বৈশাখী ঝড় বিজন বেপারী আকাশ জুড়ে মেঘ করেছে ঈশান কোণে ঐ, ঘোড়ার বেগে ছুটবে যে ঝড় কইরে তোরা কই? বৈশাখ মাসের হঠাৎ এই ঝড় কাল বৈশাখী নাম, হঠাৎ এসে ধ্বংস করে গাছের ছোট আম। রাস্তা ঘাটের যতো ধুলা থাকবে সবার আগে, এক নিমিষেই পৌঁছে যে যায় সকল গৃহে জাগে। গুড়িম গুড়িম ডাক দিয়ে যায় আকাশ ভেঙ্গে আসে, আবালবৃদ্ধ আঙ্গুল দিয়ে কানতো বাঁধে পাশে। বিজন বেপারী ঝালকাঠি, বরিশাল।
পথের ঠিকানা তাসরীনা শিখা এখন আর ইচ্ছে হয় না পথের দিকে তাকাতে। ভয় লাগে বড্ড ভয়। পেছনের পথটা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে আর ছোট হয়ে যাচ্ছে সামনের পথটুকু। ছোট হতে হতে মিলিয়ে যাবে সামনের পথটুকু কোন এক অজানা ঠিকানাতে। তখন কি হবে আমার পথের ঠিকানা ? জানিনা। কেউতো সে ঠিকানা থেকে ফিরে এসে বলেনি কেমন পথের শেষের ঠিকানাটি। সে অজানা পথের ঠিকানার চিন্তা আমার দেহ মনে পরগাছার মতো শক্ত হয়ে জড়িয়ে আছে। তাকে যে কোন ভাবেই ছাড়াতে পারছি না আমার দেহ মন থেকে। আজকাল মনে হয় মৃত্যু সংখ্যা অনেক বেড়ে যাচ্ছে । প্রতিদিনিই শুনি কেউ না কেউ চলে গেছে পৃথিবী…
“তুমি কোন কাননের ফুল” শাহানা জেসমিন বাইরে এখন তীব্রতর কনকনে শীতের হাওয়া নেই। কুয়াশায় স্মৃতিগুলো শৈশবের নরম তুলতুলে গন্ধ নিয়ে আশ্চর্য বিপন্ন হৃদয়ের অন্ধকারে নক্ষত্রের মতোন তাকিয়ে থাকে একেবারে নিজের একান্তেই। পাতা ঝরা শব্দের সাথে নিঃশব্দের হাত ধরে নিরুদ্দেশ হয় ভোগবাদী জীবনের স্বপ্নেরা।জীবনের গল্পে সময়ের অমোঘ টানে জীবন ছুটে চলে অহরহ তাগিদে। শীতের শেষে বসন্ত আসে এক শারীরবৃত্তীয় নেশায়। তখন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে নিজের ভেতরে ভেতরে। সাইরেন বাজিয়ে যায় সেই সুখ নিজের ভেতর বাড়ি। দীঘল শীতল রাত শেষ হয় বসন্তের উষ্ণতায়।হাওয়ায় হাওয়ায় বৃক্ষ -বাকলে বাসন্তী অভিসারে ছড়িয়ে পড়ে সেই প্রিজম সুখ। আমি আর অর্নব পাশাপাশি বসে আছি ট্রেনে। খোলা জানালায়…
তিনি আসলেন জয় করলেন, আবার চলে গেলেন। সংগীত শিল্পী, কবি যুথিকা বড়ুয়া ভারতের কলকাতার বাটানগর (বাপের বাড়িতে) বেড়াতে এসে 18 April 2023 পরপারগত হন। সাথে তাঁর বড় মেয়ে ইন্দিরা বড়ুয়া ও ভ্রমণে এসেছিলেন। এক নজরে সংগীত শিল্পী, কবি ও গল্পকার যুথিকা বড়ুয়া’র পরিচিতি: কবি যুথিকা বড়ুয়া শীলঘাটা গ্রামের কৃতি সন্তান লেখক, গবেষক, ধর্ম দর্শন ও ইতিহাস বিষয়ে অত্যন্ত প্রাজ্ঞ, বিশ্ব বৌদ্ধ সৌভ্রাতৃত্ব সংঘ (WFB) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রাক্তন লাইব্রেরিয়ান ও সহসাধারণ সম্পাদক বর্তমান কানাডা প্রবাসী শ্রদ্ধেয় দাদা সোনা কান্তি বড়ুয়ার সহধর্মিণী। কবি ও গল্পকার যুথিকা বড়ুয়া’র জন্ম, শিক্ষা, দীক্ষা, বেড়ে ওঠা পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতায়। দেশের বাড়ি বাংলাদেশের চট্টগ্রামের শ্রীপুর জৈষ্ঠপুরা গ্রামে। লেখিকা…
১) কমলা রঙের রোদ্দুর কমলা রঙের রোদ্দুরে দাঁড়িয়ে ভালোবাসার স্টেশন খুঁজছি। পুড়ছি না — তাবদাহে! তালপুকুরের ভাবের আনন্দে মাতাল হচ্ছি! কেননা — বাতাসের আঙিনায় মেঘ নেই! আমার ত্রি- মাত্রিক যোজনা অপ্রত্যয়ী —ভালোলাগার অভিক্ষেপণ — মর্ত্যলোকে অবগাহন করিনি শুধু সূর্যকে পুঁজি করে মনের আরাধ্য শুধু দর্শনভিলাষ — ধর্ষিত স্থির নয়না পাতাল রেলে চড়ে — দূরে গমন করছি! মনের পঞ্চঘরের —তালাটা খোলাই থাকে কখনো মর্দ আসে কখনো স্বর্গিয় ( পুরুষ) হুরের খুসবো ভেসে আসে — অল্প স্বল্প গল্পের ঝাঁপি খুলে —! কখনো সখনো আসে চাপানো দোষে দুষ্ট হয়ে! শাপভ্রষ্ট আমি— তাই মিঠে রোদেই থাকি — তরতাজা হৃষ্টপুষ্ট — কমলা রঙের রোদ্দুর —…
একটা তুমি তসলিমা হাসান প্রচন্ড মনখারাপে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে স্বান্ত্বনা দেবার মতো একজন ভালোবাসার মানুষ খুব দরকার সবার ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাওয়া ভীষণ কষ্টের মুহূর্তেগুলোতে কাছে টেনে নিয়ে চোখের জল মুছিয়ে দেবার জন্য যত্নবান কাউকে দরকার হয় নিজের অব্যক্ত কথা, লুকোনো ব্যাথা, মনের গভীরে লুকিয়ে রাখা হাজারো গল্প নির্দ্বিধায় বলতে পারার মতো বিশ্বস্ত একজন দরকার শিশির ভেজা সকালে, বৃষ্টিস্নাত দুপুরে, পড়ন্ত বিকেলে, পূর্ণিমার রাতে পাশাপাশি হাঁটার জন্য বন্ধুর মতো একজনের সঙ্গ দরকার নিজের সমস্ত ভালোবাসাটুকু, পরম যত্নটুকু, মূল্যবান বিশ্বাসটুকু দেয়ার মতো একজন একান্ত সৎ মানুষের দরকার সুখে-দুঃখে, অসুখে কিংবা মনখারাপে ছায়ার মতো পাশে থাকার মতো…
