শাম্মী খান’র পত্র কাব্য
শাম্মী খান
প্রিয়,
আজ পয়লা বৈশাখ রোদ ও বৃষ্টি দুটোই আকাশ ফাটা
তেমনি আমার মনেতেও
তোমার আকাশ ও কি তাই রোদ বৃষ্টি ঝরে আমারি মতো
আমার টিনের চালের বৃষ্টির শব্দ সানাইয়ের মূর্ছনার সুর তোলে
কাকের ঠোঁট দিয়ে যখন টিনের চালে আঁচর কাটে
তখন আমার পঞ্চ ইন্দ্রিয়তে ব্যাথা অনুভুত হয়
তোমার প্রাসাদ চত্বরে বসে কি এমন কোন কাক যার ঠোঁটের আঁচড়ে অনুভুত হয় হৃদয়
বছর ঘুরে আবার জৈষ্ঠ্য এলো মধুমাখা ঘ্রাণে
যে ঘ্রাণ স্বরন করিয়ে দেয় তোমার আমার মধুর প্রনয়নের সুর
তোমার রাজ্যে কি এখনো আগের মতো জৈষ্ঠ্য আসে মধুর রসে ভরে
আষাঢ় সেতো ভাসিয়ে নিতো কলার ভেলায় করে
জল কেলিয়ে শরীর ভিজানোর কথা মনে কি পড়ে?
শ্রাবণের অঝোর ধারায় ছোটাছুটি করে হঠাৎ লুকিয়ে যেতাম আমি
তুমি তখন চিৎকার করে ডাকতে আমায়
কণা তুমি কোথায় কোথায় তুমি
আজোও কি এ নামে খুঁজো আমায়।
নাকি হারিয়ে গেছে সময়ের বালুচরের নীচে
ভাদ্রের খরা রোদ গায়ে পড়তে দিতে না আমায়
ব্যাগে রাখা পত্রিকা টা মাথার উপর ধরে রাখতে আহা যদি আমি পুড়ে যাই
আজ পুড়ে পুড়ে অংগার আমি ছায়া দেবার কেউ নেই
আশ্বিন মাসের কোন এক বিকেলে আমরা দুজন হেঁটে ছিলাম একসাথে
শক্ত করে ধরা ছিল দুজনার হাত
আজও সে হাতে তোমার স্পর্শ পাই
তুমি ও কি তাই পাও
কার্তিক এর নবান্নের পিঠা উৎসবে রেশমি চুড়ি পরে ঝুনঝুনিয়ে জানান দিতাম আমি এসেছি তোমার পাশে
তুমি আলতো করে চুল ধরে টান দিয়ে পাশে দাঁড় করিয়ে রাখতে
শাসনের স্বরে বলতে কণা একটুখানি ও সরবেনা পাশ হতে
অগ্রহায়ণ মাসের শেষের দিকে ঘুরে ছিলাম শালবনে শুধু তুমি আর আমি
পৌষ পার্বণের উৎসব সে তো তুমি ছাড়া জমতোই না। প্রিয় আজ কি মনে পড়ে সেই সব দিনের কথা
মাঘ মাসে রাশ পুর্নিমা রাতে মেতে ছিলাম দুজন রাশ উৎসবে
পয়লা ফ্লাগুন তোমার আমার আরেক স্মৃতি মধুর দিন।
নানান ফুলের কাবরী এনে আমায় পরাতে আর মুগ্ধ চোখে চেয়ে থাকতাম দুজনেই
আজ ভীষণ মনে পড়ে তোমায়
প্রতি টা মাস ও ঋতু ছিল গভীর প্রেমের সাজানো বাসর
এলো চৈত্র নিঠুর চৈত্র — পুড়ে ছারখার করে দিলো তোমার আমার সাজানো ভুবন
প্রিয় তুমি সুখে থেকো ভালো থেকো
আর জেনে রেখো শুধু ই বেঁচে আছে তোমার কণা।।