সাবধান হে কান্ডারী
– কাজী আবদুল্লাহ-আল-মামুন (ফারাক্কা মামুন)
কৃষক-শ্রমিক-সৈনিক
লড়বে তারা একসাথে,
সমাজ বদলের এ সংগ্রামে!
রুখে দাড়াও!
পরাধীন এ দেশে
শোষক শ্রেনীর বার বার
পালা বদলে ক্ষমতার?
মাঠে আছে সংশোধনবাদী আওয়ামী-বাম,
লাল পতাকা ল’য়ে বিভ্রান্ত ছড়ানোই আসল কাম;
লাল পতাকার পৃষ্ঠে, এরাই আবার ছুরিকাঘাতকারী!
পিচ্ছিল এ প্রগতীর পথ, সাবধান হে কান্ডারী!
থেকে দিল্লীর পদতলে-
ক্ষমতাসীন আর ক্ষমতাচ্যুতদের
ক্ষমতার এ পালা বদলে!
কি ভয়ঙ্কর দাবী ধনীদের, এ সংগ্রাম এক দফার:
আসবে আবার ধানের শীষ, রং বদলিয়ে নৌকার!
পাতানো এ আন্দোলন আর সংগ্রামে
লাভ কি থেকে,
৯৫% ভাগ শোষিত-গরিব-জনতার?
কালো টাকার এ নির্বাচনী মার্কা কেনা-বেচার!
এরশাদ পতনে নব্বই-এর ‘গনঅভূল্থানে’
ছিল সেই ‘এক দফার রাজনীতি’ :
এক দফা এক দাবী, এরশাদ তুই কবে যাবি?
দাবী আদায়ের সকল দফা গেলো ঢেকে
এক দফার এক দাবীর সেই ডামাঢোলে!
দিল্লীর পুতুল, সুচতুর এরশাদ ক্ষমতা ছাড়লো
পালা ক’রে খালেদা-হাসিনারা ক্ষমতায় এলো;
মার্কা কেনা-বেচার নির্বাচনী সার্কাস চলতে থাকলো!
মাঝে দিল্লীর চাকর মইন ক্ষমতায় এসে
হাসিনাকে আবার বসিয়ে ক্ষমতায় ফিরে গেলো!
হাসিনা-মইন ‘বিডিআর জেনোসাইড’ সফল করলো!
আওড়িয়ে সে পুরানো বুলি হুজুকে,
আজও দেখি সেই পুতুল নাচ!
এক দফা, এক দাবী: হাসিনা তুই কবে যাবি?
গিয়েছে কি ভুলে মেহনতি জনতা?
কলঙ্কে ভরা নির্বাচনী ফাঁদের প্রতারনা
কলকাঠি নেড়ে ফাঁদ পাতে
দিল্লী-ওয়াশিংটনের পরিকল্পনা!
সমাধান নয় মার্কিনী সেংশনের রাজনীতি
আন্দোলন-সংগ্রাম ছাড়া নেই এর কোন গতি!
শোষিত-প্রতারিত জনতার
বার বার সে পথে হাঁটবার –
আছে কি আর কোন যুক্তি
যে পথে আসেনি কোন মুক্তি?
ক্ষমতাচ্যুত লুটেরা-দূর্বৃত্তরা যায় পেয়ে,
তাদের সকল কৃত অপরাধের দায়মুক্তি –
নাম লেখালে একবার বিরোধী দলে!
এভাবেই কি সাধারণ জনতা অতীত ভুলে?
হাসিনা-খালেদা,
এরশাদ-গোলাম আযমদের রাজনীতি –
চারধারী তলোয়ারের চার ধারে ব’সে
জনগনকে লুটেপুটে খাওয়ার রাজনীতি!
৯৫% ভাগ কৃষক-শ্রমিক-সৈনিক জনতা
অভিজ্ঞতা দিয়ে জেনেছে তারা,
ধনীক-শোষক-লুটেরাদের
‘গনতন্ত্রে মোড়া’ ধনিক শ্রেণির সেই একই বীষ:
নৌকা, লাঙ্গল, দাড়ি-পাল্লা আর ধানের শীষ!
ভোটের আগে তাই ভাত চাই- আর
সকল দাবিদাওয়ার বাস্তবায়ন চাই!
লড়াই করে বাঁচতে চাই!
মজলুম ‘বোকা জনতা’
ভোট দিয়েছে অনেকবার,
মুক্তি আসেনি কোনোবার!
‘ভোটের বাক্সে তাই লাথি মারো’
দিল্লীর শৃঙ্খল থেকে সর্বাগ্রে
‘স্বাধীন বাংলা’কে মুক্ত করো!
রক্ষা করতে
স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্বের এ সংগ্রাম-
একই সূত্রে গাথা এই শোষন মুক্তির শ্রেনী-সংগ্রাম!
হুজুক নয়, দীর্ঘস্থায়ী শ্রমিক শ্রেনীর নেতৃত্বে –
সফলতার চূরান্ত বিকল্প একমাত্র এ সংগ্রাম!
উৎখাত ক’রতে ফ্যাসিবাদী-পরিবারতন্ত্র!
দ্বিতীয় পর্যায়ের এ মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র:
কৃষক-শ্রমিক-সৈনিক ও শোষিতের গনতন্ত্র!
মুক্তির এ পথে ভাসানী-সিরাজের পথ ধ’রো!
কৃষক-শ্রমিক-সৈনিক, সবে মিলে ঐক্য গড়ো –
দিল্লী থেকে ‘স্বাধীন বাংলা’ মুক্ত করো!
আফ্রো-এশিয়া লেটিনো-আমেরিকার সংগ্রাম:
আমাদের সস্মিলিত এ মুক্তির সংগ্রাম!
‘স্বাধীন বাংলা’র সংগ্রাম:
ভারতীয় দখল মুক্তির সংগ্রাম!
‘স্বাধীন কাশ্মীর’-এর সংগ্রাম:
ভারতীয় দখল মুক্তির সংগ্রাম!
‘স্বাধীন পেলেস্টাইনের সংগ্রাম:
ইসরাইলী দখল মুক্তির সংগ্রাম!
আর পরিশেষে সমস্বরে আওয়াজ তুলো:
‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’!
লড়াই করো, সমাজতান্ত্র কায়েম করো!
সবাই মিলে বাঁচতে চাই, বাঁচার মত বাঁচতে চাই!
যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই!
____________
প্যারিস, ০৫।১১।।২০২৩