পৃথিবীর পানশালায়
অনিতা দাস
আমি নেশাগ্রস্থ মদ্যপ মাতাল নই
তবু বহু কাল ভালোবাসা পাইনি
কেউ আসেনি আমায় ভালবাসতে।
গির্জায় ঘণ্টা বাজলে মনে মনে
খুব অসহায় লাগে,
কেউতো স্নান করিয়ে দিয়ে বলেনি!
এসো গা মুছে দেই,
শাড়ি পর, টিপ পর , চলো
গির্জার প্রার্থনায় যাই।
আমি নিঃশব্দে চুপচাপ
গির্জার পিছনের বেঞ্চিতে বসে
যীশুকে বলেছি
কেউ কি ভালোবাসতে আসবে না আমায়?
কেউ কি অপরাজিতা ফুল এনে
বলবে না এসো খোপায় পরাই,
আমি প্রতীক্ষায় ভগ্ন মনোরথে
নিজের আস্তানায় ফিরি।
দিন গিয়ে মাস, বছর, যুগ পেরুয়,
ভাবি পৃথিবীর পানশালায়
হয়তো আর দেখা হবে না!
মৃত্যুদূত এলে কাকে বলব জল দাও!
বয়স বাড়ছে, মনে হলেই কান্নায় দেহ ভাঙে
বুকের বাম পাশে কষ্টের মোচড়,
উঠোনজুড়ে বৃষ্টি নামে
বুকের ছাতি ভিজে যায়
খিড়কি দিয়ে হাত বাড়াই
শ্রাবণী এসে আসছে পরে!
রাত্রি স্বপ্ন ভেঙে খানখান।
নতুন ভোরের সূর্যের আলো মুখে পড়ে
আঁখি মিলে দিগন্তে তাকাই,
দিব্য কান্তি জ্যোতির্ময় এক পুরুষ
দ্বার খুলে সামনে এসে দাঁড়ায়,
দুহাত বাড়িয়ে করতল ছুঁয়ে বলে
ভালোবাসি তোমায়।
যীশুকে মনে মনে কৃতজ্ঞতা জানাই
পৃথিবীর পানশালায় তোমার আমার
আচমকা দেখা হয়ে যায়।
রাত্রি ও স্বপ্নের সন্ধিক্ষণ
আত্ম কথোপকথনে মগ্নতা পায়,
অতীতের যত বিষাদ গ্লানি
নিমিষেই দূরে সরে যায়।