পরকিয়া প্রেম
এম ইদ্রিস আলি
আমার কোনো পরকিয়া প্রেম নাই
কাদম্বরী দেবীর মতো কোনো
চিরস্মৃতিময়ী রমনীর সাথে,
অথবা ক্লিওপেট্রা বা মেরিলিন মনরোর মতো
জীবন্ত উর্বশী অপ্সরার প্রতি আকৃষ্টতা নাই।
তবে ভালোবাসায় কমতি নাই
কোন সংস্কারহীন নান্দনিক জাতপাতে।
আমার প্রেম আছে শৈল্পিক সৃষ্টির প্রতি
জগদ্বিখ্যাত লিউনার্দো এবং জয়নুলের চিত্রকর্মের প্রতি
আমার ভালোবাসা গেঁথে আছে শার্ল বোদলেয়ারের জাহাজের ডেকে
ডানা ঝাঁপটানো আলবার্ট পাখির প্রতি।
বদনাম হলেও আমার প্রেম সৈয়দ সামসুল হকের নিষিদ্ধ লোবানের প্রতি।
আমার ভালোবাসা শামসুর রহমানের
স্বাধীনতার জীবন্ত পঙক্তিমালার প্রতি।
বুদ্ধদেবের মতো দুর্ভেদ্য ভালোবাসা আমার
আকৃষ্ট হই জীবনানন্দের চিলের ডানায় মাখানো রৌদ্রের রগরগে গন্ধের প্রতি।
আমি প্রেমে হাবুডুবু খাই শিশিরের সাগরে, জোনাকির জ্যোৎস্নায়
রবীর কমলে আটকে যায় জ্যোতি,
আমি বার বার হোচট খেয়ে কাঙ্ক্ষিত দিক হারা হই
আমি ভালোবাসায় নিয়ত আড়ষ্ট হই
শহীদ কাদরীর বন্য শুকুরের প্রিয় কাদায় লেপটানো
অদম্য মিলনহীন রোমান্টিকতার প্রতি।
কবিতা লিখেও কবি হতে পারলাম না
অতৃপ্ত হৃদয়ে বড় আফসোস!
ইচ্ছে করে পরাবাস্তববাদী হয়ে কবরের ফোকর থেকে টেনে আনি
রোদের মিষ্টি আলিঙ্গন বৈদগ্ধ্যমনে।
মিটবে হয়তো তাতে কবিতার জোস!
ইচ্ছে করে মহাকবির ঐশ্বর্যময় শব্দগুলোকে অগোচরে
প্রেমালিঙ্গনে টেনে আনি কবিতায়
কিন্তু আমার নিজস্ব কবিতার পরিচিত শব্দেরা দূর্বার প্রতিবাদ করে
নিষিদ্ধ ভালোবাসা ও পরকিয়ার অপবাদ দেয়
ঘরের মাঝের প্রিয়জনের মতো!