তোমাকে আঁকব বলে
সাদ্দাম বিশ্বাস
তোমাকে আঁকব বলে
মেঘলা আকাশের উঠান থেকে ছিনিয়ে এনেছিলাম বিজলির সোনালি সুতো।
একটা সমস্ত চাঁদনি ধোয়া রাতে মরুভূমির মতো বিশাল বালুচরে পেতেছিলাম ক্যানভাস
তোমাকে আঁকব ভেবে ভেবে নিদ্রাহীন কেটেছে অজস্র নিশি।
অথচ
আমাকে আঁকতে তোমার সময় লেগেছিল মাত্র দশটি মাস!
কি নিখুঁত বুনন তোমার অন্ধকার ঘরে
হাত এঁকেছ, পা এঁকেছ, চোখ এঁকেছ,
এঁকেছ সাড়ে তিন হাত দেহে সাতানব্বই হাজার মাইলের শিরা উপশিরা।
মোনালিসাকে নিখুঁত করে আঁকতে পারেনি ভিঞ্চি
ভুরু যুগলে এঁকে দিয়েছিল বৃদ্ধতন্ত্রের ছাপ
একটা প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে মোনালিসা নারী না-কি পুরুষ?
ভ্যান গগ পাহাড় থেকে সবুজ এনে রাঙাতে পারেনি তাঁর মনভূমি।
আমি তোমাকে এমন করে আঁকতে চাই,
যেন মহাশূন্য স্টেশন থেকে জ্বলজ্বল করে দেখা যায় তোমার মুখাবয়ব
পামির মালভূমির গায়ে এমন করে টানিয়ে দিতে চাই সে ছবি
যেন শুভ্র হিমালয়ের মতো ময়ূখ-দ্যূতি ছড়িয়ে পড়ে দূর বহুদূর থেকে।
তোমাকে আঁকতে চাই তোমার সর্বস্বটুকু দিয়ে
যেখানে নেই কৃত্রিমতার ছড়াছড়ি।
ভোরের রক্তিম সূর্যের লাল এনে রাঙাব তোমার পদযুগল
হেমন্তের শুভ্র শিশিরের চাদরে জড়াব তোমার অঙ্গ
মমতার বাউটি খুলে পড়াব স্বপ্ন সেতার।
তোমার হাত আঁকব বিশ্বাসে!
তোমার শরীর আঁকব মমতায়!
তোমার জিহ্বা আঁকব অদম্য সাহসে
অথচ আজও কিছুই আঁকা হলো না
জানি,
তোমাকে আঁকতে কেটে যাবে আমার সমস্ত জীবন।