গোলাম কিবরিয়া পিনু’র গুচ্ছকবিতা
মৃত্যুর দণ্ডাদেশ
মৃত্যু খিড়কি দুয়ার খুলে
ঘরের ভেতর প্রবেশ করছে না!
সে এখন— ক্রেন ও বুলডোজার নিয়ে
ঢুকে পড়ছে—উঠানে উঠানে,
বাড়ির ভেতর— ঘরের ভেতর!
যাকে তাকে তুলে নিচ্ছে দ্রুত—যখন তখন,
একসাথে বহুজনকে!
কাছা পরে এসেছে সে—
তার শরীরে পুরো পোশাক নেই,
সে অনেকটা নেংটা!
মৃত্যু যেন লাঠি হাতে—কারফিউ দিয়ে—শিস দিয়ে
তার দণ্ডাদেশ মানতে বাধ্য করছে;
মানুষেরা বিচলিত—দিশেহারা!
সে অনেকটা যথেচ্ছাচারে—দ্রুত পা ফেলছে,
যেখানে-সেখানে!
লম্পট
দুষ্ট ও লম্পট—
বিকৃত রুচিতে প্রণয়ের স্নিগ্ধফুল নষ্ট করে,
অষ্টধাতু দিয়ে তৈরী আংটি পরে থাকে!
কত ছলনায়— চাতুরিতে
গুণনিধি সেজে,
নটখটে কাজে ব্যতিব্যস্ত হতে থাকে!
তাদেরই কেন মঞ্চে তুলি?
তাদেরই কথায় আমরা কীনা ভুলি!
নটরাজ! ও নটিয়া! কী যাচ্ছে ঘটিয়া!
ঝুমকোজবার বাগান
সে কতদূর যায়—
আমি কতদূর যাবো?
তা আমিও দেখতে চাই!
সে ভেবেছে— তার উঠানে পা না রাখলে
আমি ঝুমকোজবার বাগানে
পা রাখতে পারবো না!
সে ভেবেছে— তার মঞ্চে জায়গা না হলে
আমাকে আর কেউ দেখবে না
আমার কথা কেউ শুনবে না!
তাদেরই মঞ্চ— একমাত্র মঞ্চ নয়!
মুরলী বাজাতে বাজাতে—তারা ভুলে যাচ্ছে!
এইযে তারা আমাকে কতভাবে
আটকাতে চাইছে— কত রকমের বাঁধ!
আমার জলের শক্তি ও স্রোতে তা ভেসে যাবে!
ও হে, আমার শক্তিকে— শুধু আমি টের পাইনি,
আমার শক্তিকে আরও কতজন অভিনন্দিত করেছে
তা তুমি জানতে পারোনি?
কে কাকে কতক্ষণ আটকে রাখে?
ধোঁয়ার ভেতর— ভূকম্পনের ভেতর?
ধোঁয়া ও ভূকম্পন—একসময় শেষ হয়ে যায়!
মূল্য ও যোগ্যতা— তোমার দ্বারাই নিরূপণ হবে না
আমার থাকা না থাকা— অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ব,
তোমার ওপর নির্ভর করে না!
আমার হাতেও আয়ুধ রয়েছে—
আমিও আমার শোণিতে বেঁচে আছি।
আমার ললাটে মেঘছায়া থাকলেও—
আমিও তো অতসী পাথর আমারও গায়ে কিরণ লাগে।