বাতিল হয়ে যাক অতিতের সকল ইতিহাস, সকল দিবস, সকল অসৎ রাজনৈতিক নিয়ম
অথই নূরুল আমিন
২০২৪ এর পূর্বের শুধু ৮টি দিবস নয়। সকল দিবস বাতিল ঘোষণা করলেও আমার ব্যক্তিগত কোনো প্রতিবাদ নেই। কারণ আওয়ামী লীগ গত পনেরো বছর রাষ্ট্র চালিয়ে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষের জীবনমান যেমন দারিদ্র করে দিয়েছে। তেমনি করে দিয়েছে বিষণ্ন। এককথায় ভুল রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন শেখ হাসিনা যা স্বজ্ঞানে করেছেন একথাটি বলা চলে।
১. বিশেষ করে সাস্থ্য সেবা, গত বছরে একচুল পরিমাণ সাস্থ্য সেবা উন্নত হয়নি। বরং আরো দুর্গতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
২. গত বছরে সরকারি রেলওয়ের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এমনকি রেলটা যে সঠিক সময়ে চলবে। তাও করতে পারেনি পনেরো বছরে।
৩. শিক্ষাব্যবস্থা শতভাগ ধ্বংস করে দিয়েছে একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। শিক্ষাটা এমন ভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। আগামী পঞ্চাশ বছরের মধ্যে কোনো ছেলে বা মেয়ে আর শিক্ষা নিতে চাইবে না।
৪. বিচার ব্যবস্থা অচল করে দেয়া হয়েছে। মামলা হবে। কিন্তু এটা তিন যুগেও আর শেষ হবে না। যার জন্য ন্যায় বিচার থেকে দেশের সকল মানুষকে বঞ্চিত করেছেন একমাত্র শেখ হাসিনা।
৫. কৃষি খাত, মৎস্য ও খামারিরা আজকে সবাই হতাশ। এখানে সরকার লোক দেখানো মন ভোলানো কাজ করেছে। প্রকৃতপক্ষে দেশের বারোটা বাজিয়ে দিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
৬, মেগা প্রকল্পের নামে শেখ পরিবারের পকেট ভারী করা হয়েছে।
৭. দেশের সকল শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তারা ঘুসের নামে জনগণের পকেট কেটেছে প্রতিদিন। জনগণের ভোটে নির্বাচিত একজন প্রধানমন্ত্রী দেশে থাকা অবস্থায় সরকারি কর্মকর্তারা ঘুস খায় কি করে? এদিকে পুলিশের চরিত্র হয়েছিল পাগলা কুকুরের মতো। বাদী বা আসামি কেউ রেহাই পায়নি পুলিশের ঘুস বাণিজ্য থেকে। আমার প্রশ্ন হলো আওয়ামী লীগের মতো একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় ছিল পনেরো বছরের বেশি সময় ধরে। তাদের কাছে দেশের ৯২ শতাংশ জনগণ কিছুই পায়নি।
৮. গত পনেরো বছরে নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ফলে ধনী আরো ধনী হয়েছে। গরিব হয়েছে আরো গরিব।
৯. আওয়ামী লীগের সবচাইতে বড় দোষ হলো তারা দেশের সকল মানুষেরে রাজাকার বলে গালী দিত সবসময়। আমার কথা হলো, আমাদের দেশের রাজনীতি অঙ্গনে এক ভাই আওয়ামী লীগ আরেক ভাই বিএনপি অন্য জামায়াতে ইসলামী, এখানে আমরা সবাই বাঙালি এই বিষয়টা আওয়ামী লীগ মানেনি কখনও।
১০. ঢাকা শহরে প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস। গত পনেরো বছরে ওয়াসা বা সরকার মিলে এক গ্লাস ও পরিস্কার পানি দিতে পারেনি। যা খাওয়ার যোগ্য হতে পারে। ওরা যে পনেরো বছর উন্নয়ন উন্নয়ন করেছে। সেই উন্নয়ন তো জনগণের এক পয়সার কাজেও লাগছে না।
১১. দেশের পঞ্চায়েত বিচার ব্যবস্থায় আওয়ামী নেতারা ঘুসের বাণিজ্য চালু করেছিল। টাকা ছাড়া কোনো বিচার হতো না।
১২, প্রসঙ্গ জন্ম নিবন্ধন। এই জন্ম নিবন্ধন নামে একটি প্রকল্প চালু করে দিয়ে দেশের সকল শ্রেণির মানুষের সাথে অর্থ আত্মসাত সহ নানা মুখী করা হয়েছে। যার ভূক্তভোগী হয়নি। এই দেশের একজন লোকও বলতে পারবেন না। অথচ এই জন্ম নিবন্ধন বিষয়টি একটি অহেতুক বিষয় ছিল।
১৩. গত বছর ধরে দেশের মন্ত্রী এমপি মেয়র উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সহ সকল জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদের আর দপ্তর সম্পাদক বিব্লব বড়ুয়ার মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন। আমার প্রশ্ন হলো। একজন জন প্রতিনিধি হবে দলীয়। যার কাজ হবে জনসেবা করা, সেই জন প্রতিনিধির কাছ থেকে কেন টাকা নিলেন শেখ হাসিনা? শুনেছি গাজীপুরের জাহাঙ্গীর দুইশ কোটি ঢাকা উত্তর সিটির আতিকুল ছয়শ কোটি যেকোনো মন্ত্রী পঞ্চাশ থেকে একশ কোটি। যারা টাকা দিয়ে মনোনয়ন কিনে নিয়ে এমপি মেয়র চেয়ারম্যান হয়েছে। তাদের দিয়ে তো চুরিটাই চলবে। জনসেবা তো গাছে কাঠাল গোফে তেল। জনগণের হায় হায় তো থাকবেই। সমগ্র জাতির সাথে শেখ হাসিনা গত পনেরো বছরে যেমন করেছেন প্রতারণা তেমনি করেছেন সব বিষয় নিয়ে মাশকরা।
১৪. সরকারি নিয়োগ বাণিজ্য। সরকারি চাকরি হবে প্রার্থীর যোগ্যতায়। এখানে ঘুস কেন লাগবে? আর এই ঘুস সব নিয়েছেন শেখ হাসিনা, শুনেছি তিনির একটি মাত্র ছেলে তাহলে এতো টাকা দিয়ে তিনি কি করেন?
এককথায় গত পনেরো বছরে দেশের মানুষেরা খুবই অসহায় ছিল সর্বক্ষেত্রে। কোথাও একটা বিচার দেবার জায়গা ছিলো না। কোথাও কোনো ভরসা ছিলো না। গত পনেরো বছর ধরে যারা মন্ত্রী এমপি রাজনৈতিক নেতা নেত্রী ছিল ওরা প্রায় সবাই ছিল একধরনের অমানুষ। যেমন ছিল লোভী তেমন ছিল বেয়াদব।
ওদের কাছে দেশের সাধারণ মানুষেরা ছিল খুবই তুচ্ছ। সমাজের কোনো মানুষ দেশের সরকারি কোনো সেবাই উচিৎ টাকা দিয়েও পায়নি। যা দুঃখজনক। আওয়ামী লীগের কাছে গত পনেরো বছরে এই দেশের সাধারণ মানূষেরা যে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তা ভুলতে লাগবে তিরিশ বছর। এই তিরিশ বছরের ভিতরে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা ও দেখছি না।
অথই নূরুল আমিন
কবি কলামিস্ট ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানী
১৭/১০/২০২৪ মোহাম্মদপুর, ঢাকা থেকে।