গান্ধীপোকার কীর্তিকলাপ
— মোশাররফ হোসাইন সাগর
গান্ধীপোকা দেখেছে যারা, সাথে পেয়েছে তার বিষাক্ত পরশ,
জানে তারা, কি যে গন্ধ ও জ্বালা, সব পোকার চেয়ে সরস।
আমাদের সমাজে মানুষরূপী রয়েছে এমন কত গান্ধীপোকা,
যাদের দুষ্কর্মের জ্বালায় মানুষের কঠিন হয় শান্তিতে থাকা।
গান্ধীপোকা যদি হয় কারো নিজের-ই ছেলে কিংবা মেয়ে,
পিতা-মাতার প্রাণটাকে তেলে ভাজা করে ফেলবে খেয়ে।
গান্ধীপোকা যদি হয় নারী, স্বামীর সংসারে আগুন জ্বালায়,
পুরুষ হলে তার অত্যাচারে স্ত্রী নিজসংসার ছেড়ে পালায়।
গান্ধীপোকা হয় যদি কারো প্রতিবেশী এবং আত্মীয়-স্বজন,
সুখ ও শান্তি কেড়ে নিয়ে অতিষ্ঠ করে তুলবে তার জীবন।
গান্ধীপোকা যদি হয় কখনোবা অফিসের প্রধান কর্মকর্তা,
কর্মচারীদের জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে জীবনটাকে করবে আলুভর্তা।
গান্ধীপোকা হয়ে থাকলে মোড়লশ্রেণীর কোনো সমাজপতি,
তার হাজারো অপকর্ম দ্বারা রুখে দেয় সমাজের অগ্রগতি।
আর যদি হয় সে জনগণের নির্বাচিত একজন গণপ্রতিনিধি,
কী বলবো ভাই, সে মানুষের জন্য হয়ে দাঁড়ায় মরণব্যাধি।
গান্ধীপোকা যদি হয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত এক ব্যক্তি,
কল্যাণের চেয়ে জনগণকে দমন-নিপীড়নে ব্যয় করে শক্তি।
আর হয় যদি বিচারক, সাজানো রায় দিয়ে মিথ্যা মামলায়,
নিদোর্ষ মানুষকে কারাবাস করায় নয়তো ফাঁসিতে ঝোলায়।
গান্ধীপোকা হলে সরকারী কাজের কোনো রাক্ষুসে ঠিকাদার,
কোটি টাকার কাজে অর্ধেক ব্যয়, বাকি সব করবে সাবাড়।
গান্ধীপোকা ব্যবসায়ী হলে সে পণ্যে ভেজাল, মাপে কম দিবে,
পণ্য মজুদ করে দামটা বাড়িয়ে ভোক্তার পকেট কেটে নিবে
গান্ধীপোকা হলে কোনো বাসের চালক ভাড়া আদায়কারী,
যাত্রীগণের পকেট কেটে নিয়ে নিজের পকেট করবে ভারি।
গান্ধীপোকা যদি হয় হাসপাতালের মালিক কিংবা ডাক্তার,
কত যে কুকীর্তি করে তারা, বলে শেষ করবে সাধ্য কার।
স্বার্থলাভে অপ্রয়োজনেই নানারকম পরীক্ষা করাতে দিবে,
ছলে-বলে রোগীদের থেকে বেশুমার টাকা বের করে নিবে।
মানবজাতির মহাদুর্যোগ করোনাকে নিয়েও ব্যবসা করে,
কী বলবো যে এই গান্ধীপোকাদের অপকর্ম-কুকর্মের তরে!
গান্ধীপোকা যেখানে যাবে, সবখানেই দিবে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে,
হাত দুর্গন্ধময় হবে কেউ যদি তাকে দিতে যায় তাড়িয়ে।
আরও যত গান্ধীপোকা আছে সমাজে বয়ান করবো কত,
চাইলে দিবা-রাতি সদা বয়ান করা যায় সেসব অবিরত।
সমাজদেহের দুষ্টক্ষত ওসব গান্ধীপোকা সবাই ধ্বংস হোক,
আলোঝলমল জোনাকীপোকায় দেশটা মোদের ভরে উঠুক।
১৩৮ বার পড়া হয়েছে
১ Comment
Congratulations