চলে গেলেন কবি মাকিদ হায়দার, পাবনায় দাফন।
কবি মাকিদ হায়দার (৭৭) আর নেই। গতকাল বুধবার সকালে ঢাকার উত্তরার নিজ বাসায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
সতীর্থ এবং সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কবি মাকিদ হায়দারের মরদেহ বাংলা একাডেমিতে নেওয়ার কথা থাকলেও সেই পরিকল্পনা বাদ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার চাকরিতে ‘কোটা সংস্কার’ আন্দোলনের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবরোধ থাকায় ঢাকায় জানাজার পর মাকিদ হায়দারের মরদেহ দেশের বাড়ি পাবনায় নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উত্তরায় নিজের বাসায় মারা যান কবি মাকিদ হায়দার। তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন ছোট ভাই আরিফ হায়দার।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আরিফ হায়দার বলেন, ” আমার ভাই কিছুদিন আগেও হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছিলেন। আজ সকালে বাসাতেই মারা যান।”
বাদ জোহর উত্তরায় জানাজার পর ভাইয়ের মরদেহ পাবনায় নেওয়া হবে বলে আরিফ হায়দার। তিনি বলেন, “পাবনায় পারিবারিক কবরস্থানে মাকিদ হায়দারকে দাফন করা হবে।”
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, “প্রথমে ঠিক করা হয়েছিল বাংলা একডেমিতে কবি মাকিদ হায়দারের মরদেহ আনা হবে। কিন্তু পরিবার থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, আন্দোলনের (কোটা সংস্কারের আন্দোলন) কারণে রাস্তার অবস্থা বিবেচনায় মরদেহ বাংলা একাডেমিতে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”
পাঁচ দশক ধরে সাহিত্যচর্চায় যুক্ত মাকিদ হায়দারের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, ‘রোদে ভিজে বাড়ি ফেরা’ ‘আপন আঁধারে একদিন’ ‘রবীন্দ্রনাথ: নদীগুলা’ ‘বাংলাদেশের প্রেমের কবিতা’ ‘যে আমাকে দুঃখ দিলো সে যেনো আজ সুখে থাকে’ ‘প্রিয় রোকানালী’ ‘মমুর সাথে সারা দুপুর’।
সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখায় মাকিদ হায়দার বাংলা একাডেমিসহ দেশের উল্লেখযোগ্য সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
কবি মাকিদ হায়দারের জন্ম ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর পাবনার আরিফপুরের দোহারপাড়ায়। তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও বাংলা সাহিত্যকে আলোকিত করেছেন এবং তারা স্বনামে পরিচিত।
মাকিদ হায়দারের ভাইদের মধ্যে প্রয়াত হয়েছেন নাট্যকার জিয়া হায়দার ও রশিদ হায়দার। আরেক ভাই কবি দাউদ হায়দার। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন জাহিদ হায়দার, আবিদ হায়দার ও আরিফ হায়দার। তারা প্রত্যেকেই সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত।