কবি জেবুন নাহার’র দুইটি কবিতা:
১) একটা কবর
একটা কবর, ভিতরে ক্ষয়ে যাওয়া হাড়।
তোমার সারাটা শরীর ছিন্ন ভিন্ন খুলি ,
উপরে ঘাসের ছিটেফোঁটাও নেই,
কিন্তু, আমার চোখ দেখতে পায়,
তোমাকে সুশোভিত আচ্ছাদনে।
বসে মিটিমিটি হাসছো
পরম সুখে, দুনিয়ার তাপ, যন্ত্রনা,দাহ , কান্না কিছুই
স্পর্শ করে না তোমাকে
মানুষ বলে, কবরে সাপ, বিচ্ছু
কঠিন আযাব_
আমি জানি না
আমি জানি তুমি ভালো আছো।
আর আমি পাগল পারা এপারে
চোখে মুখে রাজ্যের যন্ত্রনা।
বুদ্ধিহীন, এখানে ধাক্কা খাই, ছিটকে পড়ি,
অপেক্ষা তোমার কাছে যাবার
দেখা কি হবে আমাদের আবার
হবে কি কবরে আরও একবার?
২) এখানে আকাশ নেই
এখানে আকাশ নেই,
সূর্যের আলো ভীষণ পুড়ায়।
চারপাশে দুর্গন্ধময় ধুলা,
সুবাতাসের কোন চিহ্ন নেই।
এখানে শুধু হাহাকার, কান্না
ঘুরে ফিরে আসে অবিরাম।
এখানে কৃষ্ণচূড়া হাসে না
শুধু রক্ত হয়ে ঝড়ে পড়ে।
এখানে শূন্য শিমুল ডালে
দাড় কাক বাসা বাঁধে।
এখানে বৌ কথা কও পাখির মধুর ডাকে
নতুন বৌ চঞ্চল হয়ে জেগে উঠে না
এখানে বাতাসে শো শো করে
মানুষের বোবা কান্না
এখানে মৃত্যু পথযাত্রী পিতার কান্না সন্তানের কর্ণ স্পর্শ করে না
এখানে কোথাও অর্থের বাড়াবাড়ি ব্যবহার,
আবার কোথাও চরম সংকটে
সংগ্ৰামী পিতা মূর্ছা যায় সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তায়।
এখানে দুমুঠো ভাত যোগাড় করতে ঘাম ঝরায়,
সন্তানের জন্য ইটাখোলায়
স্বামী পরিত্যক্তা নারী।
আবার এখানেই পাঁচ তারকা হোটেলে উঠে
প্রেমের বিশাল জোয়ার
এখানেই আবার সস্তা টিকটক ভিডিও-তে
লাইক, কমেন্ট পড়ে হাজার হাজার।