অনুভবে বাংলা।
আজিজুন নাহার আঁখি
দেখিনি ৫২ এর ভাষা আন্দোলন
ভাষার জন্যে যুদ্ধে যাইনি এগিয়ে,
দেখিনি ৬৯ এর গণ অভ্যূথান
আন্দোলনে হাঁটিনি রাজপথ দিয়ে,
কারণ তখন জন্মাইনি আমি,
তবু মনে হয় ছিলাম সবখানে।
শুনিনি ৭ই মার্চের উত্তাল ভাষণ
জীবন বাজি রেখে করিনি মুক্তিযুদ্ধ,
২৫শে মার্চে হায়েনাদের ধারালো ছোবলে
সব হারিয়ে হতে পারিনি স্তব্ধ,
কারণ তখন জন্মাইনি আমি,
তবু মনে হয় ছিলাম সবখানে।
২৬শে মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা
শুনিনি আমি নিজ কানে,
কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সবার সাথে
যুদ্ধ জয়ে যাইনি সম্মুখ পানে,
কারণ তখন জন্মাইনি আমি,
তবু মনে হয় ছিলাম সবখানে।
দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সব
তাণ্ডবলীলা আর যন্ত্রণায় হইনি কাতর,
পথে পরে থাকা ধর্ষিতা নারীর মতো
শোকে কষ্টে হইনি পাথর,
কারণ তখন জন্মাইনি আমি,
তবু মনে হয় ছিলাম সবখানে।
যুদ্ধের দামামা শুনিনি,দেখিনি রক্তের স্রোত
সব হারানো মুক্তিযোদ্ধার শুনিনি চিৎকার,
দেশের জন্যে প্রাণ দিলো যারা
দেখিনি তাদের আপনজনের আর্তনাদ আর হাহাকার,
কারণ তখন জন্মাইনি আমি,
তবু মনে হয় ছিলাম সবখানে।
১৬ই ডিসেম্বরের বিজয় উল্লাসে
দেখিনি বাংলার হাসি মুখ,
জয় ধ্বণিতে মুখরিত বাংলায়
দেখিনি বিজয়ী বীরদের অনাবিল সুখ,
কারণ তখন জন্মাইনি আমি,
তবু মনে হয় ছিলাম সবখানে।
চোখে না দেখে কানে না শুনে
আজও সাড়া জাগে নিজ প্রাণেমনে,
যাদের জন্যে পেলাম স্বাধীনতা
তাদের আত্মদানের কথা রাখবো স্মরণে,
তখন জন্মাইনি আমি,
তাই কি হয়েছে?
এখন তো সব জানি বুঝি
তাই জীবন দিয়ে রাখবো বাংলার মান
গাইবো আমার সোনার বাংলা গান।
মানিকগঞ্জ।