অদেখা প্রেম
রোজিনা খাতুন
ফোনটা বেজে উঠায়, কে… আমি আকাশ। এটা আবার কোন নাম্বার। এটা অন্য ঐ নাম্বারে ব্যালেন্স নাই। একটুখানি অপেক্ষা কর পরে ফোন দিচ্ছি। ব্যস্ত আছি। আচ্ছা। কাজ শেষ করে ছায়া আকাশকে ফোন দিবে এ সময় মোবাইলটা বন্ধ হয়ে গেল। পরের দিন ফোন দিবে নাম্বারটা যেন কি ও হ্যালো আকাশ কালকে অনেক ঝামেলা গেছে ফোন দিতে পারিনি, শোন ভার্সিটিতে যাবি।আমার নোট গুলো লাগবে আরো অনেক কথা আছে। সরি আমি আকাশ নই… মানে, নাম্বারটি একটু চেক করেন। ওরে নয় এর বদলে ছয় এটাতো অন্য নাম্বার। ধেৎ কোথায় গেল নাম্বারটা। মিষ্টি কন্ঠ শুনে লোভ সামলাতে না পেরে ফোন দেয় সবুজ। এ ভাবে দিন মাস বছর। অদেখা প্রেমে পড়ে দুজন। সবুজ বিসিএস দিয়েছে, ছায়া শোন যদি পাশ করি সঙ্গে বিয়েটাও করবো আচ্ছা। আমরা পরশু দেখা করছি কেমন।ঠিক আছে। তবে এতদিন পরে দেখা কেমন যেন ভয় লাগছে কেন আমি বাগ নাকি, তবে না দেখা করাই ভালো। আরে সারাজীবন কি এভাবে কথাই বলবো দেখা করবো না। দীর্ঘ নিঃশ্বাশ ছেড়ে ছায়া বলে। হু তাই তো।
যেই কথা সেই কাজ পরের দিন ভার্সিটিতে শহীদ মিনারের কাছে দেখা করার কথা। কিন্তু নাটকের দ্বিতীয় দৃশ্য। দু’জনেই দুজনকে পরীক্ষার জন্য আলাদা দুজনকে সবুজ ছায়া হিসেবে পাঠায়। পরিচয় হয় আলাপ হয় মোবাইল ফোনটাও দুজনকে দুজনেই দেয়। কিন্তু এরাদুজন আলাদা মানুস কথা আলাদা হবে। দেখা করার পর দুজন যখন বাসায় ফিরে তখন কি খবর সব জানতে চায় ভালো বলে দুজন। কিন্তু সবুজের চাকরির জন্য তাড়াতাড়ি ঢাকা যেতে হবে তাই রাতে বাসের টিকিট কাটে।সারাদিন নানা ঝামেলা ফোন দিতে পারিনি। বাসে বসে ফোন বের করবে এমন সময় ফোন নাই একি কিছু করার নাই তাই চুপচাপ ঢাকা যায়। কাজ সেরে দুদিন পর ফিরে। নতুন ফোন ছিম কিনে লাগিয়ে নাম্বার টা বের হয় না কি করি ঐ নকল সবুজের কাছে ফোন দেয় ঐ নকল সবুজ আবার ঢাকায় যায়। ছায়া সবুজের ফোনের অপেক্ষা করতে করতে রেগে বসে আছে। এক মাস পরে নকল ছায়া সবুজের বিয়ে। আসল ছায়া সবুজকে ঐ বিয়েতে আমন্ত্রণ। দুজনে অবাক… দুজনের উপর অভিমানে তারা মনেমনে ভাবে চিনতে ভুল করেছি। তাদের অবস্থা দেখে সইতে না পেরে বিয়ের আসরে দুজনেই বলে আসল ছায়া আর সবুজকে। আমরা সবুজ ছায়া নই। শিমা আর নকুল। তোমরা অভিমান ভুলে দুহাত এক করে নাও।দুজনে একে অপরের দিকে তাকিয়ে কাঁদতে লাগলো।