কষ্ট তসলিমা হাসান পৃথিবীতে সবারই কষ্ট আছে, কেউ কষ্টের রঙে হাসে কেউ কষ্টের রঙে ভাসে কারো কষ্টের রঙ নীল আবার কারো কষ্ট বর্ণহীন কেউ সামান্যতেই কষ্ট পায় কেউ হাজারো কষ্ট বুকে লুকায় কেউ আবার পাহাড়সম দুঃখ বুকে নিয়ে হাসি মুখে বলে আমি বেশ আছি কেউ কাটার আঘাতে মূর্ছা যায় কেউ আঘাতে আঘাতে রক্তাক্ত হয়েও মুখে উফফ শব্দটি পর্যন্ত করে না কেউ আবার অন্যের তরে নিজের জীবন উৎসর্গ করে হাসিমুখে কোন প্রতিদান চায় না। তবুও কোন এক অদৃশ্য ব্যাথায় বুকটা চিনচিন করে, কিছু একটা বলতে চায়, কিন্তু বলা হয় না বলা যায় না আসলে শোনার মানুষ কোথায়! _______________ তসলিমা হাসান কানাডা,…
Author: প্রতিবিম্ব প্রকাশ
বিজন অন্ধকার জাফর রেজা আমার কোনো স্বপ্ন নেই আছে কিছু স্মৃতি, কিন্তু স্মৃতিরা আমার মনের অতল স্পর্শ করে না। সবুজ দিগন্তের অপরূপ ছুঁয়ে যায়না আমার হৃদয় পূর্নিমার চাঁদ- সেও অধরা কাশবনের এলোকেশী কন্যার নূপুরের ছন্দ রক্তে জাগায়না শিহরণ। আমি দাঁড়িয়ে আছি নিশ্চল নিঃশব্দ গাছের মতো, আমার একাকীত্ব বুক ভরা কান্নার এক শীতল জলপ্রপাত বয়ে চলে অবিরাম। সমস্ত ধ্বংসের পর অবশিষ্ট কি’ই বা থাকে আর? দিনশেষে রাতের নিস্তব্ধতায় আমি জেগে রই, নিদ্রাহীন চোখে সাথী হয়ে থাকে বিজন অন্ধকার।
আত্ম-প্রবঞ্চনার ধূপ মহিউদ্দিন আহমেদ প্রাণপণে করেই যাচ্ছি করেই যাচ্ছি, জীবনের সহজ সরল সমিকরণ, প্রচণ্ড ঘোট পাকিয়ে ফেলে, দুরহ ত্রিকোণমিতির ধারা, কালো মেঘের আঁধারে মুখ লুকায়, প্রাণের সন্ধ্যাতারা, বিফলে যায় সবক’টি, আরতির ফুল সহজ বশিকরণ। ধমনীর রক্ত স্রোতে বাঁধা নীড়, ভেঙে ফেলে নিষ্ঠুর কালবৈশাখি ঝড়, সূর্যস্নানের গল্পকথন ঘিরে ফেলে, বিরহের কালো কূয়াশায়, আশার চাঁদনি ঢলে পড়ে, অন্তহীন হতাশার দ্রাঘিমায়, বিষের যাতাকলে পিষ্ট হয়, পোষা ময়নার ধড়। বর্ণিল ঝর্নার রূপকথারা পথ হারায়, ধেয়ে আসে দুর্ভাবনার অথৈ বালুচর, শীরদাড়ায় বয়ে চলে, কনকনে তুষারের ঢল, বিশ্বাসের বাবুই পাখির ঝাঁক, করে চলে অদ্ভুত বুননের ছল, বিষের সুতানলি, কি করে যে খুঁজে নেয় লক্ষিন্দরের ঘর। আগাম…
০১) কিছু কথা কাকে বলবে ভদ্র! আর কাকে বলবে সরল! ভেতরটা যার মিথ্যে কালো ছলনায় ঘেরা জীবনটা যার গরল। মানুষ চেনা নয়তো সহজ খাঁটি মানুষ! এখন যেন বিরল। কথা দিয়ে কথা রাখি না, অন্যকে উপদেশ দেই নিজে মানি না পরকে বুঝাতে পারি নিজে বুঝি না। অন্যের টাকায় প্রাসাদ গড়ি, লোভ যে আমার অন্তর ভরি। কালো টাকা আছে কাড়ি কাড়ি, একেতে নই তুষ্ট তাই সঙ্গী অধিক নারী। কেনো নেই হুঁশ হচ্ছি বেহুঁশ, নিজ দোষে দুষ্ট পরিবেশ। আমার দোষেই পরিবার ও সমাজ নষ্ট, আমার গুণেই সুন্দর দেশ সৃষ্ট। আসুন তবে শপথ করি নিজকে শুদ্ধ ও সুন্দর করি আমার চারপাশ সুন্দর রাখি এবং…
শতাব্দীর চুম্বন সাঈদা আজিজ চৌধুরী পৃথিবীর অন্দরে নীলিমার বন্দরে কি বিস্ময়করভাবে বেঁচে আছি ! শতাব্দীর সিঁড়িপথে কার্নিশে পদযুগল, ধাপগুলো ধীর লয়ে হেঁটে চলেছি উদয়াস্তের কালান্তরে শিশিরের ঝরে পড়া, সোনালি সূর্য ঋতুর পাখিদের আসা যাওয়ার পথে পথে পাহাড়ের বুকে নিরোদপুঞ্জ বেঁচে আছি রক্ত জবার দোল খাওয়া পুষ্প রেণুকুঞ্জ বিদ্যুৎ তরঙ্গ খেলে অতৃপ্তির উষ্ণ সমুদ্র স্নান অখণ্ড আনন্দ মানবিক অস্তিত্ব মিশে আছে কাব্য অভ্যন্তর। নিশ্ছিদ্র অমানিশা ছিন্নভিন্ন করে জোনাকের গুঁড়ি গুঁড়ি আলোর পথ আরণ্য গন্ধ মাদকতা ছড়ানো জারুল হিজলের বন, সোনালি মহার্ঘ্য জলস্রোত। হেঁটে বেড়াই বিস্ময়ে সহস্র মানুষের মুছে যাওয়া ক্ষয়ে যাওয়া পদচিহ্নে মেঘের ওপারে সিঁড়ি সজীব সতেজ শৈল গিরি পথ ধরে…
ছাতার ফি। বিপ্লব মৈত্র ছোট বেলার বন্ধু আজাদ। মোটাসোটা গড়ন। খুব আনন্দ প্রিয় ছিল। ওর বাবা দাউদ তখন একটা বেসরকারি কলেজের পিয়ন। কলেজটা আমাদের উপজেলা সেমি শহরে। অল্প বেতন।পায়ে হেটে ছয় মাইল পথ যায় ও আসে।তিনিও বেঁটে, মোটা গড়নের। চাচা বেশ জোরে হাঁটতে পারতেন। হাঁটার সময় ভূরি টা বেশ সুন্দর দুলতো। বছর পাঁচেক হলো চাচা গত হয়েছেন। ছোট বেলার অনেক স্মৃতি আছে তার সাথে। তিনি আমার বাবার ছাত্র ছিলেন।সে হিসাবে আমাকে একটু বেশিই আদর করতো। চাচা রোজ একটা পুরাতন ছাতি (শত ছিদ্র) মাথায় দিয়ে কলেজে যেতেন। দূর থেকে মনে হতো একটা ছাতাই যেন সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। একদিন দেখি চাচার…
বৃদ্ধাশ্রম মুহাম্মাদ আনোয়ার হোসাইন বৃদ্ধাশ্রম থেকে বলছি শোনো লক্ষ্মী শোনা খোকা তোকে আজ বলছি না বলা কিছু কথা নয়তো তোকেও খেতে হবে পদে পদে ধোকা। একটি জায়নামাজ ও কিছু খেজুরের মোহরানা দিয়ে তোর বাবার সাথে সেদিন আমার হয়েছিল বিয়ে দিনমজুর স্বামীর সাথে শুরু হলো অভাবের সংসার অন্ন বস্ত্রের অভাব থাকলেও অভাব ছিলোনা ভালোবাসার সময়ের ব্যবধানে ধরনী আলোকিত করে এসেছিলি যেদিন গরু বিক্রয়ের টাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছিলাম সেদিন তোর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিভিন্ন প্রতিবেশীর বাসা থেকে তোর বাবা ভাতের মাড় আনতেন হাত পেতে তোর সুখের জন্য বাসায় করেছি ঝিয়ের কাজ রাস্তায় পিঠা বিক্রি করতেও করিনি শরম লাজ এক কাপড়ে পার করেছি দুই…
“ন্যায্যতা” “বৃষ্টি মিনা” আমি করতে চাই এক যুদ্ধ যুদ্ধ করে করতে চাই সব শুদ্ধ, কাঠ যেমন পুড়ে হয়রে কয়লা সাবান দিয়ে ধুলে যায় যেমন ময়লা। ন্যায্যতার যুদ্ধ বড় কঠিন তামা এখানে পুড়ে হয়রে টিন, এখানে সত্যিকারের রূপ রাখা যে দায় সবাই দাঁড়ায় সুযোগ সুবিধার নায়। আমি চাইনা কোন পদ সামনে আমার আসুক যত বিপদ, সৎ পথে মরে যাওয়াই ভালো যদি আমার জীবনে না জ্বলে কোন আলো। দিতে চাই না কোন কুপরামর্শ তাতে আমি পাই না কোন হর্ষ, কষ্ট দেখলে হইয়ে বিমর্ষ তাতেই আমি পাই নতুন আদর্শ। ন্যায্যতার যুদ্ধে কেউ দেয়না সায় দূর থেকে সবাই করে হায় হায়, যেদিকে ভার, সেই…
অভিনন্দন – শাওন মাহমুদের জন্মদিন আজ — মেসবা খান —————————————————- শাওন মাহমুদ কালজয়ী সুরকার আলতাফ মাহমুদের মেয়ে। একজন ফ্রিল্যান্স কলাম লেখক তিনি। সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি পারিবারিক সহিংসতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং বাগান বিষয়ক লেখালেখি করে থাকেন শাওন। বাগানের বিষয়ে শাওন মাহমুদের এতটাই আগ্রহ যে নিজেকে তিনি চাষী হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। কিংবদন্তি পিতার মতো বাংলাদেশ নিয়েও প্রায়ই লেখালেখি করেন শাওন মাহমুদ। শাওন বুকে ধারণ করেন বাংলাদেশকে। আলতাফ মাহমুদ যখন ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানে সুর দেন তখন তাঁর জন্মই হয়নি। সেটা ৫২’র ভাষা আন্দোলনের কথা। আর শাওন মাহমুদ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৬৮ সালের ৬ আগস্ট। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি…
দীর্ঘদিন দোকানি বাবার সঙ্গে চায়ের দোকানে যে ছেলেটার ভোর থেকে সন্ধ্যা কাটত, যার শৈশব-কৈশোরের অধিকাংশ পড়াশোনা বাবার দোকানে বসেই করতে হয়েছে, সেই ছেলেটাই গতকাল ৪১তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত ও শিক্ষা ক্যাডারে মেধা তালিকায় দর্শন বিভাগে হয়েছেন দ্বিতীয়। বেলায়েত হোসেন ইমরোজ শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার বিনোদপুরের শামসুল তালুকদারের ছেলে। তিনি ৩১ নম্বর পশ্চিম বিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০৬ সালে প্রাথমিক বৃত্তিলাভ করেন। ২০১২ সালে বিনোদপুর মৌলভী কান্দি দাখিল মাদরাসা থেকে তিনি জিপিএ-৫ পেয়ে দাখিল এবং ২০১৪ সালে শরীয়তপুর সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। দরিদ্রতার…
