জল তরঙ্গ অনিতা দাস জীবন যেন জল তরঙ্গের খেলা হাসি কান্নায় ভরা রুপোর থালা, বুকের কাছে এলে, যত্নে করি কান্না গুটিয়ে গিয়ে পদ্মের মত মেলি পাখনা। উড়তে উড়তে প্রেমিকের হাত ধরে চোখে চোখে চখা চখি, প্রনয়ের খেলায় ভাসি আর ভাসি। নীল বারান্দায় বসে থেকে চায়ের চুমুকে চশমায় আটা এক জোড়া চোখ, হৃদয়ের ক্যানভাসে ভাসে কামনা নিয়ে বুকে, ঘুমাই পূর্বপুরুষের অস্তিত্ব মর্মে মর্মে টের পায়, ঠোঁট থেকে ঠোঁটে উষ্ণ মধু মাখাই গোপন ব্যথায় মন কুঁকড়ায়, মিলনের ঝড় ও জোয়ারে ভিতর ভাসে। ভাদ্রের প্রখর তাপে দেহ তাপাই তুমি বিহীন রাত্রিগুলি গোপন অশ্রু জলে শুধু ভাসাই, জীবনের শেষ দিনগুলো শুধু যেন তুমি আমি…
Author: প্রতিবিম্ব প্রকাশ
আমার পরিচয় – সৈয়দ শামসুল হক আমি জন্মেছি বাংলায় আমি বাংলায় কথা বলি। আমি বাংলার আলপথ দিয়ে, হাজার বছর চলি। চলি পলিমাটি কোমলে আমার চলার চিহ্ন ফেলে। তেরশত নদী শুধায় আমাকে, কোথা থেকে তুমি এলে ? আমি তো এসেছি চর্যাপদের অক্ষরগুলো থেকে আমি তো এসেছি সওদাগরের ডিঙার বহর থেকে। আমি তো এসেছি কৈবর্তের বিদ্রোহী গ্রাম থেকে আমি তো এসেছি পালযুগ নামে চিত্রকলার থেকে। এসেছি বাঙালি পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার থেকে এসেছি বাঙালি জোড়বাংলার মন্দির বেদি থেকে। এসেছি বাঙালি বরেন্দ্রভূমে সোনা মসজিদ থেকে এসেছি বাঙালি আউল-বাউল মাটির দেউল থেকে। আমি তো এসেছি সার্বভৌম বারোভূঁইয়ার থেকে আমি তো এসেছি ‘কমলার দীঘি’ ‘মহুয়ার পালা’ থেকে।…
রূপাই – জসীম উদ্দীন এই গাঁয়ের এক চাষার ছেলে লম্বা মাথার চুল, কালো মুখেই কালো ভ্রমর, কিসের রঙিন ফুল! কাঁচা ধানের পাতার মত কচি-মুখের মায়া, তার সাথে কে মাখিয়ে দেছে নবীন তৃণের ছায়া। জালি লাউয়ের ডগার মত বাহু দুখান সরু, গা-খানি তার শাওন মাসের যেমন তমাল তরু। বাদল-ধোয়া মেঘে কে গো মাখিয়ে দেছে তেল, বিজলী মেয়ে পিছলে পড়ে ছড়িয়ে আলোর খেল। কচি ধানের তুলতে চারা হয়ত কোনো চাষি, মুখে তাহার জড়িয়ে গেছে কতকটা তার হাসি। কালো চোখের তারা দিয়েই সকল ধরা দেখি, কালো দাতের কালি দিয়েই কেতাব কোরান লেখি জনম কালো, মরণ কালো, কালো ভূবনময়; চাষীদের ওই কালো ছেলে সব…
পল্লী কবি জসীম উদ্দীনের ‘নকশী কাঁথার’ মাঠ কাব্যগ্রন্থের রূপাই চরিত্রের আসল রূপা হলেন উনি। নকশী কাঁথার মাঠ কাব্যগ্রন্থে সাজু নামক যে নারী চরিত্র ছিলো, তিনিও ছিলেন বাস্তবের এক নারী। যার নাম ছিলো ললীতা। রূপা ললীতাকে খুব বেশি ভালবাসতো। ললীতা ছিলো রূপার পাশের গ্রাম মশাখালী’র বাসিন্দা। নানা কারনে রূপা আর ললীতার ভালবাসার পূর্ণতা পায়নি। পল্লী কবির “নকশী কাঁথার মাঠ” কাব্যের সাজু নামের ললীতা ২০০৭ সালে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। আর ঠিক পরের বছর বার্ধক্যের কাছে পরাজিত হয়ে পৃৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন পল্লী কবির ”নকশী কাঁথার মাঠ” কাব্যের সেই কালো মানিক রূপা। রূপার পৈতৃিক নিবাস ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার শিলাসী গ্রামে।
সুখের বাসর জসীম উদ্দীন নয়া জমিদার আদিলদ্দীন ধরি সকিনারে হাত, কহিল, চল গো সোনার বরণী, মোর ঘরে মোর সাথ! মালার মতন করিয়া তোমারে পরিয়া রাখিব গলে, পঙ্খী করিয়া পুষিব তোমারে উড়াব আকাশ ভরি, আমার দুনিয়া রঙিন করিব তোমারে মেহেদী করি। সকিনা কহিল, আপনি মহান, হতভাগিনীর তরে, যাহা করেছেন জিন্দেগী যাবে ঋণ পরিশোধ করে। তবুও আমারে ক্ষমা করিবেন, আপনার ঘরে গেলে, বসিতে হইবে হতভাগিনীরে কলঙ্ক কালি মেলে। আসমান সম আপনার কুল, মোর জীবনের মেঘে, যত চান আর সুরুয তারকা সকল ফেলিবে ঢেকে। ধোপ কাপড়েতে দাগ লাগিলে যে সে দাগ মোছেনা আর, অভাগীর তরী ভাসাইতে দিন ভুলের গাঙের পার। আদিল কহিল, সুন্দর…
আমি- কবি লেখক দেবদুলাল বণিক আমি কবি লেখক– তবু বিবর্ণ ধূসর ফেটে যাওয়া দেওয়ালের মতো আমার কপাল রেখা ও রোজ একটু একটু ফেটে যাচ্ছে চারিপাশে হল্লা করে মাতিয়ে তুলে আমার বন্ধুরা – আমার আত্মীয় পরম শুভাকাঙ্ক্ষী শত শত হৃদয়, আমি অনেক বাহু বন্ধন ছেড়ে — চুপিচুপি বের হয়ে যাই – গিনিপিগের মতো। হাজার হাজার আলিঙ্গনে বন্দী করতে চায় অগণিত মন আমার পুড়ে যাওয়া হৃদপিণ্ড কেউ পেতে চায় — কেউ নিতে চায় হাতিয়ে সংগোপনে, কত ব্যর্থতায় আমি দিতে পারিনি মন কেউ অমরাবতীর জোসনা গায়ে মেখে অভিশাপ দিয়েছে কি — জানিনা, আমার দগদগে ঘা কেউ দেখেনি কাউকে বলি না — অনেক পাওয়া…
হাঁটি মনিরুজ্জামান শাওন আমি শুধু হাঁটি, ডান থেকে বাঁ বাঁ থেকে ডান। আমি পিচঢালা পথে হাটি, আমি সবুজ ঘাস মাড়িয়ে হাটি। আমি চৌত্রের খরতাপে তৃষ্ণায় বুকফাটা ক্ষেতের মাঝে হাঁটি। একটি নারী যখন অভিমান করে- আমি তখন হাঁটি। তাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে ভেবে তখনও হাটি আমি চেনা পথে হাঁটি, আমি অচেনা পথে হাঁটি। আমি সম্মুখ পানে হাঁটি। আমি তাকে দেখার জন্য নিরব অভিমানে বারবার পিছু হাঁটি। হাঁটতে হাঁটতে আমার বার্ধক্য ক্লান্ত বাহন দুটি বলে- আর পারব না। আমি তখনও হাঁটি। আমি ওই সুশীল আকাশ পানে তাকিয়ে বলি- হে বিধাতা! আমাকে শক্তি দাও! আমি যেন ওই দিগন্ত না ছোঁয়া পথে হেঁটে…
০১) মা একরাশ স্নিগ্ধতা নিয়ে তুমি বিচরণ করছো আমাদের সবার জীবনে, আজন্ম ঋণী আমরা তোমার কাছে। তোমার পরিপাটি মন আর সৃষ্টিশীলতার কাছে হার মানি প্রতিদিন। তোমার সব প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে আমাদের সবার জন্য, সবার স্বপ্নের চারাগুলো বুনে বুনে তুমি নিজেই হয়ে গেছো এক অনবদ্য মহীরুহ, উপেক্ষা করে গেছো নিজের স্বপ্ন আর ইচ্ছে গুলো। পৃথিবীর সব কাজ ছাড়িয়ে তুমি করে যাচ্ছো অমূল্য এক কাজ, সংসার পরিচালনা, শ্রেষ্ঠতম পদ তোমার, তুমি মা, ঘর, সংসার, সম্পর্ক সবকিছুর পরিচালক তুমি। অভিবাদন তোমায়, নিরন্তর শুভকামনা তোমার জন্য। ০২) নয়নতারা আমার বাবার কবরে ফুটেছে অনেক নয়নতারা ফুল, গাঢ় বেগুনি রঙের মেলা যেন। মানুষটা মিশে গেছে মাটির…
প্রতিদান নাজমা জামাল ফেরদৌসী নিশাত এবছর মাস্টার্স পাশ করেছে। অনেক ইন্টারভিউ দিয়েও কোথাও চাকরি পেল না সে। মা প্রতিদিন বিয়ের জন্য প্রেশার দিয়েই যাচ্ছে। কিন্তু মাকে সে বোঝাতে পারবেনা, নিজের পায়ে শক্তভাবে না দাড়িঁয়ে সে বিয়ে করতে চায় না। বাবা সামান্য দোকান চালিয়ে মোটামুটি সংসারটা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিশাত বড়। তাই মা বাবার নিশাতের উপরই সমস্ত আশা ভরসা। ছোট দুই ভাই একজন কলেজে আর আরেকজন স্কুলে পড়ে। মায়ের একটাই কথা কষ্ট করে তোর বাপ মাস্টার্স পযর্ন্ত পড়িয়েছে। চাকরি না পেলেও ভালো বিয়ে দিয়ে মেয়ের জামাই যদি একটু ভরসা দেয়। নিশাত জানে, এ ধরনের চিন্তা ভাবনা অনেক সেকেলে। কিন্তু মাকে কিছুই বলে…
নিজস্ব প্রতিনিধি: কবি আকিব শিকদার’কে “স্বাধীনবাংলা সাহিত্য পরিষদ গুণীজন সম্মাননা-২০২৩” প্রদান করা হয়: সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য “স্বাধীনবাংলা সাহিত্য পরিষদ গুণীজন সম্মাননা – ২০২৩” পেলেন কবি আকিব শিকদার। স্বাধীন বাংলা সাহিত্য পরিষদের ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন উপলক্ষে গুণীজন সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকাস্থ কেন্দ্রীয় কচিকাঁচা মিলনায়তনে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রায় ৪০০ কবি, সাহিত্যকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল স্বাধীন বাংলা সাহিত্য পরিষদ। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করে জাতীয় সংগীত এর প্রতি সকলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন আলমগীর জুয়েল উপদেষ্টা স্বাধীন বাংলা সাহিত্য পরিষদ, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেলিনা…
