হঠাৎ দেখা
(সুলগ্না মিত্র)
“আগুন জ্বলে?
হ্যাঁ আগুন জ্বলে,
তাঁর তৃতীয় নয়নে এখনও আগুন জ্বলে”
কার কথা বলছি ???
বলছি এক সাধারণীর কথা।
যিনি বেনীমাধবের প্রেমে পড়েছিলেন। হ্যাঁ ঠিক চিনেছেন, মালতী বালা বালিকা বিদ্যালয়ের সেই মেয়েটি।
তারপর আমরা সবাই জানি তাঁর গল্প। কবির কলমে গাথা
প্রেম হারানোর ব্যাথা আর জীবন সংগ্রামের এক গাঁথা।
তারপর হঠাৎই একদিন তাঁর সাথে দেখা হয়ে গেলো, আমাদের পাড়ার পুজো প্যান্ডেলে।
অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখলাম,
না না, সে আগের মেয়েটা আর নেই।
পরণে দামী শাড়ি, চুল ছোট ছোট করে কাটা, চোখে চশমা।
বেশ সুন্দর দেখাচ্ছিল তাঁকে।
তবে কি! তবে কি শেষে, নষ্ট মেয়েই হলো সে …
নাহ্, আমি আর ভাবতে পারছিলাম না।
শুধুই হা করে তাকিয়েছিলাম, বোধহয়।
কাছে এসে বললো,” চিনতে পেরেছো আমাকে ??? “,
শুধু মাথা নাড়লাম।
শুনবে আমার গল্প???
কোনও কথা বলতে পারলাম না,তাকিয়েই রইলাম।
একমুখ হাসি নিয়ে বললো,
“আমার সেলাই করা জিনিস গুলো একজনের খুব পছন্দ হলো, জানো। আমার পাশের বাড়িতেই থাকে সে। এখন সে সুপারমডেল। তার চেষ্টাতেই আমি আজ ফ্যাশন ডিজাইনার। আমার সেলাই করা জামা কাপড় এখন বিদেশ অবধি যায়। অনেক মেয়েরা কাজ করে আমার কারখানায়। যাবে দেখতে??
তাঁর পাশে এসে দাঁড়ালো এক সুন্দরী মেয়ে। এই তো, এইতো আমার সেই পাশের বাড়ির মেয়ে, যাঁর কথা বলছিলাম । অবাক হয়ে দেখলাম “এ তো মালতী “, চিনতে পারলে না মালতি কে??? রবি ঠাকুরের সাধারণ মেয়ে মালতি। মনে পড়েছে??? ,” ভারত বর্ষের সজল মেঘ আর উজ্জ্বল রৌদ্র মিশেছে যাঁর মোহিনী দৃষ্টিতে” ।
কানে বাজতে লাগলো সেই কবিতা
“বেশ্যা ব্রতে, পত্নী ব্রতে, ধ্বংস মুদ্রা মোহ মুদ্রা প্রযুক্তিতে গৃহ কর্মে সাধারণী নমস্তুতে।”
মৃন্ময়ী কে দেখলাম চিন্ময়ী রূপে। না আমি শরত বাবুর মত গল্প লিখতে পারিনা । তবুও এক সাধারণ মেয়ে না লিখে পারলো না , সাধারণ মেয়েদের অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্প।
কলকাতা,ভারত।
১ Comment
very good job; congratulations.