সাহিত্য সুধা
[আজমেরী]
শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির ধারক ও সাধক যারা, তারা কখনো অর্থের পূজারী হয়না।কারণ শিল্পচর্চার জন্য অর্থের প্রয়োজন আছে বটে তবে তার অবস্থান কখনো শিল্পের উর্ধ্বে নয়।শিল্পের মধ্যে যারা অর্থের গন্ধ খোঁজেন তাদের মত চরম মূর্খ আর কেউ নয়।
যেমন একটা বই প্রকাশিত হলে অনেকেই বলে থাকেন -কয় কপি বই বিক্রি হলো?
কয় টাকা লাভ হলো?কত টাকা খরচ হলো? এত টাকা দিয়ে কি করবো? ইত্যাদি ইত্যাদি।
কারো,কারো আবার বলার ধরনটা এমন যে বই বেঁচে গাড়ি -বাড়ি সব হয়ে যাবে যেন। এদের কাছে বই যেন অন্য আর দশটা গ্রোসারী বা নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মত।যা বাজারদরে বেচে আখের গোছাতে হবে।এই শ্রেনীর মানুষগুলো কাছে অর্থই মূল বিবেচ্য,এদের কাছে সৃজনশীলতা ও মননশীলতার মূল্য অতি নগন্য।
অনেক তথাকথিত ডিগ্রীধারী শিক্ষিত ব্যক্তিকে এমনও বলতে শুনেছি-পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য বই পড়ে জীবনে কি কাজে লাগবে?
এদের কাছে বই হলো- অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার, জ্ঞানের উৎস নয়।
এরা বোঝেনা শুধু প্রত্যক্ষভাবে নয়, পরোক্ষভাবেও বই অনির্বচনীয়।
পৃথিবীতে সবকিছুরই মূল্য অর্থকেন্দ্রীক নয়, কিছু বিষয় থাকে যা আত্মার একান্ত খোরাক যোগায়, রক্তে নেশা জাগায়…সৃষ্টির সম্মেলনে বুদ করে রাখে সারাক্ষণ…
সৃজনশীল ব্যক্তিদের কাছে তার সৃষ্টিকর্ম লক্ষ -কোটির থেকেও অনেক মূল্যবান। একজন সৃজনশীলব্যক্তি কখনোই টাকার বিনিময়ে তার স্বত্তাধীকারিতা বিক্রি করবে না। কেননা সে সবসময়ই বিভোর থাকে অর্জনের তৃপ্তিতে, তার সত্তাজুড়ে থাকে কেবলই জয়ের নেশা। নিজেকে ভেঙ্গে -চুরে- নিংড়ে আপন সৃষ্টিকর্মে বিসর্জিত করাতেই তার জীবনের চরম সার্থকতা।
সেখানে বৈষয়িক বিষয় তার মস্তিষ্কের অনেক বাইরে থাকে। তাইতো শিল্প -সাহিত্যের ধারক সবাই হতে পারে না।শুধুমাত্র পাঠ্যবইকে যারা জ্ঞান অর্জনের একমাত্র মাধ্যম মনে করে, তাদের কাছে জ্ঞান হলো অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার মাত্র।
তাইতো শিল্পের পূজারী হতে পারে মূলত দু শ্রনীর মানুষ, এক- রুচিশীল শিক্ষিত শ্রেনী এবং গৃহহীন বাউল…
তবুও অর্থ -আত্মকেন্দ্রিকতা এবং সকল স্বার্থের গন্ধ কে ম্লান করে সবশেষে শিল্পেরই জয় হোক-বিকশিক হোক জ্ঞানের আলো-আলোকিত হোক বিশ্ব…
সাহিত্যসুধা হোক মানবিক বোধের সকল উংস…
২ Comments
আপনার “সাহিত্য সুধা”নিবন্ধ টি পড়ে ভাল লাগলো। আরও লিখুন।পড়বো সময় করে।
congratulations.