মৌনতায় ঘিরে আছে উদাস করা একরাশ অব্যক্ত কথা মালা ।
নীরব ভাষায় আকূল প্রাণের গভীরে উচ্ছ্বাসিত অনলে জ্বলে যায় দোলনচাঁপার মধুরতা, তবুও সুবাসিত সুবাসে লুকিয়ে থাকাএক অব্যক্ত বেদনা শোভা পায় অতৃপ্ত ঠোঁটের কোণে নানা হাসির ছলে । তৃষিত হৃদয়ে আঁকা মুখচ্ছবি গোলাপের কাঁটায় ক্ষত বিক্ষত হয়ে ফিরে আসে অবেলায়…….কিছু না বলা কথা, কিছু না লেখা কবিতা বলছে আমায় মনে মনে….. তোমার সেই উদাস করা গানের সুর আমায় নিয়ে যায় সেই মেঘের দেশে । হঠাৎ কোনো দমকা হাওয়া এসে আমাকে নাড়িয়ে দিলো। বললো অলীক স্বপ্নে রাঙানো শুভ্র শিশিরকণা জড়িয়ে নিলো পায়। মনে হলো, মনে হলো হঠাৎ যেনো কোনো বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দেয় আমাকে । আমায় যেনো আড়াল করে রাখে যেনো কেউ দেখতে না পায়। তাই চোখের পানি আর বৃষ্টির পানি দুজনে মিলে হয় একাকার ………..!
কেনো জানি পিছু টানকে পিছনে ফেলে এখনো এগিয়ে যেতে পারিনি । পায়ে পায়ে পা ফেলে এগিয়ে তো যাচ্ছি কিন্তু এতো ভাড়ী বোঝা কিছু ফেলে কমাতে পারছি না, একেবারে ফেলে যেতেও পারছি না । মনের অন্তরালে সেই প্রশ্ন ” পিছু টানকে পিছনে ফেলে কি এগিয়ে যেতে পেরেছি? ” না, পারিনি কখনও । অন্তহীন…. সঙ্গীহীন ভাসছি শুধু অনাবিল না পাওয়ার বেদনায়।
গল্পে আমার কল্প কথারা ডাকছে আমায় ভালবাসার মাঝে এক পাহাড় সমান দহনের যন্ত্রণায়। যে যন্ত্রণায় ছটফট করে চলছে দেহঘড়িওটা । আজও মনে হয় নিজেকে বুঝতে পারি না। আসলেই কি বুঝতে চাই না? কেমন যেনো নির্লিপ্ত ছিলাম জীবন সমন্ধে। কি হবে, কিভাবে, কি ভাববে, কি লজ্জা, কেনো এমন, নানা প্রশ্নের বেড়া জালে আটকে ছিলাম। কেউ তো এগিয়ে আসেনি ! বলেনি হাতটি ধরে, চলো সাথে । বলতে সকলেই পারে পাশে আছি । পাশে থাকা আর সাথে থাকা এক কথা? কেনো যে একটা বলয় হতে বার হতে পারছি না। আর কবে পারবো ? ভাবতে ভাবতে কখন যে আমি অজানা অচেনা পথে পায়ে পায়ে নিজেই নিজের প্রতিবিম্বকে জিজ্ঞেস করি কতো না বলা কথা। কথা বলি গানের, কবিতার, প্রেমের, ভালবাসার । হাসির অতলান্তে বেনামী প্রেম আমায় রেখেছে ঘিরে সবার অন্তরালে । সেই একদিন আর আমার প্রতিদিন হয় না। আমার শিশিরস্নাত ভোর হয় একান্তেই , আমার একলা দুপুর কাটে কাউকে কিছু না বলে। পড়ন্ত বিকেলে এক ফালি রোদ এসে হাত বাড়িয়ে ডেকে যায় আবীরের রঙে মন রাঙাতে । আর নিঃশ্চুপ নিঃসঙ্গ রাত বলে , চলে আসো নিশি কন্যা ঘুমের সাথে করো মিতালী । কিন্তু ঘুমহারা রাতে শুধুই বুকের মাঝে চাপা কষ্টের বরফ জমিয়ে রেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে চার দেয়ালকে সাক্ষী করে জেগে থাকা বেড রুমে নেই গোলাপের পাপড়ি, আছে শুধু দুধ সাদা পর্দা আর আমার আমি ।
এ আমার আমি, আমার ভাবনা বেশ ভালোই আছে দুজনে মিলেমিশে । একটা কথা থেকেই যায় মনের অন্তরালে। থাকতে থাকতে এমন এক ধরনের বাসা বাধে যা কখনো সরানো যায় না হাজার চেষ্টা করেও ।
ক’ দিন থেকেই দেখছি সন্ধ্যায় বাসায় আসতে আসতে ঘুম আসে। একটু হয়তো ঘুমিয়ে নেই। কিন্তু বড্ড বেশি
ঘুম পাড়ানির মাসী পিসি রেগে পালিয়ে যায়। মধ্য রাতের দরজায় পা রেখে আমায় টা টা করে পালিয়ে যায়। ঘুমের নির্ঝরিনী, পানির কলকল ধ্বণি, পিয়ানোর মিষ্টি সুরের মূর্ছনায় অজানাকে সাথে নিয়ে ঘুমের মাসী পিসি এসে চোখে চুম দিয়ে যায়…..অসার ঘুমের দেশে নিয়ে যায় দূর আকাশের নীল বেদনার বায়ে।
এ-র মাঝে নীরব নিঃশব্দে নিশীথের অন্ধকারে কতটা দিন, কতটা বছর কেটেছে বাঁধভাঙা অসম সময়। একাকিনী থাকা কিছু কিছু কথা আর আমার না বলা কথা গুঞ্জরিছে পলকে পলকে। ছুটে চলে বাতাসের তোড়ে, সব তচনচ করে দেয় অগোচরে কৃষ্ণ পক্ষ নিয়ে যায় তীব্র ঝাপটা খাওয়া ঝড়ের আঘাতে পৃথিবীর সকল মানুষের কাছে একটা কথা বলতে চাই, নশ্বর এ মানবদেহ। সবচেয়ে প্রিয় একটি কথাই ধরে নিবিড় অন্ধকারে জড়িয়ে আছে তার মায়াবিনী বেদনা। অধীর ভাবনায় ভাসিয়ে ভেলা আমায় করেছে প্রতিহত, করোনার তান্ডব লীলাময় মৃত্যুর কোলে ঠেলে দিচ্ছে, কতো অসহায় মানুষকে।
এ নিশ্চুপ নিশিথ রাতে আমার এ নিথর শরীর সুশীতল বাতাস চায়, চায় শুধু তার সাথে কথা বলা, হাতে হাত রেখে বিলীন হয়ে যাওয়া। সখ, সুখ, দুঃখের কথা গুলো তো আর আমাকে তোমার বুঝতে হবে না। চশমাটা আর চোখে জড়াতে ভালো লাগে না। সেটা ছাড়া আবার চলেও না। প্রচন্ড একটা চাপা নিশ্বাসের বঞ্চনা নিয়ে লিখে যাচ্ছি। দোলন চাঁপার সুরভিত ছন্দে হারিয়ে যায় আলোছায়ায় ঘেরা লেকে ঘুরে ঘুরে আসি ফিরে। নীরবে চলে উদাস করা হাওয়ায় মিটিমিটি তারার মতো পশ্চিম দিগন্তে জমে থাকা কিছু কিছু স্মৃতির পাতায় পাতায় অবশিষ্ট ভাবনায় ডুবে থাকা গোলাপের কাঁটায়। দূরে ঠেলে দিয়ে অবিরত হাসির পিছনে একজনও মানুষ তার মৃদঙ্গ বাজায়ে ছুটে চলে প্রাণ বিরহে অকারণে। বারবার ফিরে আসে স্মৃতির মনিকোঠায়। আমায় যদি এ নশ্বর দেহ ডাক দিয়ে বলে চলো অচীন গহীনে। হে পৃথিবী আবারও বলছি তোমরা কেমন করে বলবে আমাকে বিদায় বন্ধু।
কেউ কাউকে কিছু একটা কথা বলতে পারে না এটা কি কোনো কথা?! এই হিপোক্রেসি দুনিয়ায় বহুরূপী মানুষ কি করে সুস্থ মনে বাস করে? ভুল…… সবই ভুল! নিয়তিকে সালাম দিয়ে লেখা গল্প, কবিতা লিখে যায় মনের আয়নার অতল গহ্বরে হেরেছে সুখের আবেশ। তবুও ভাবি এ নিঃশব্দে বয়ে চলে এক রাশ অভিমান । জীবনের প্রতিটি মূহুর্তে মনে পড়ে যায় মিথ্যে অভিনয়ের মুখখানি এখনো। কি সরলতার প্রতীক বহন করে ভেসে আসা এক অকৃত্রিম প্রেমের দৃঢ়তা ছিলো। তাহলে সবই কি ছিলো একজনকে পাওয়ার কৃত্রিম অভিনয়, কৃত্রিম ভালবাসা? যদি ভালবাসা হয় তাহলে সে অভিনয়ই ছিলো। অভিনয় না হলে কিভাবে নির্লিপ্ত ভাবে বিভিন্ন জনের ভেতর পুষে রাখা ভালো মানুষ হয়ে বেড়াও?! মুখে মুখে জব করে বেড়াও ঈশ্বরের ধ্বনি । সেও কি অভিনয় ?! সরলতার সুযোগ নিয়ে, কতো কথা, কতো ভালো মানুষের মতো দক্ষ নৌচালকের মতো নৌকা চালিয়ে যেতে যেতে আনমনে যখন একজনকে ঠেলে দিয়ে গভীর কষ্টের মোহনায়। যেখান থেকে বেরিয়ে আসতে কষ্টের অষ্ট প্রহরে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু কিছু ভুল কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। শারীরিক মানসিক ভাবে চাপের মুখে যখন প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করি আমি আমার নিজেকে তখন মানুষকে ঘৃণা করা ছাড়া আর কিছুই মনে করতে পারি না। আমি নিজেও একজন মানুষ। মানুষ হিসেবে মানুষের জীবনে হতাশা যেমন আসবে তেমনই হতাশা কেটেও যাবে। কিন্তু… কিন্তু এ জীবনে ঘটে যাওয়া মুহূর্ত গুলোকে শব্দের নিঃশব্দ ফুলঝুরি ছড়িয়ে আছে তার জীবনে সেটার কি কোনো প্রতিক্রিয়া নেই?
জীবনে প্রতিটি প্রতিকূল অবস্থাকে অনুকূলে রেখে সবসময়ই সুস্থ থাকার, ভালো থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু প্রতিদানে কি পেলাম, কি হারালাম কিছুই মনে করতে পারছি না। জীবনকে অসহ্য মনে হচ্ছে । ভন্ডদের মাঝে আর নিজেকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। মানুষের রুপ যৌবন, শরীরের সৌন্দর্য কি সব? সেতো ঈশ্বরেরই দান। মানুষের কু-চোখের ভাষা খুঁজে নিই, বুঝতে পারছি কি বলতে চায় । হাহাহা হিহিহি করতে পারলেই ভালো । আসলে এ জগতে ভালো মানুষের কোনো মূল্যই নেই ।
মনে হচ্ছে মাথাটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। নিজেকে খুব অসহায় লাগছে। কি যে আবোল তাবোল ভাবনা নিয়ে কথা বলতে….. বলতে ইচ্ছে গুলো আর সরানো যাচ্ছে না। এতটা পথ পেরিয়ে এসেও দাঁড়িয়ে আছি সেই পিছনে ছুটে চলা এক পথের বাঁকে নির্বাক-ধূসর শূন্যতা ঘিরে থাকা নীরব ভালবাসার পাথরে ছাওয়া রেললাইন। যেমন সে তার গতিতে চলে সমান্তরাল ভাবে । জীবনও এইরকমই চলবে কারো জন্য থেমে থাকেনি কোনও দিনও।
মনের ভেতর পুষে রাখা শত অভিমানের পাহাড় গড়েছে নীরবে। উদাস হয়ে যায় দূর কোনো জনহীন পীচ ঢালা বোবা রাস্তার পাশে থেকে সারাটি দিন পর দেখলাম, নিষ্ঠুরতার শিকার হতে।
বিন্দু বিন্দু ঝরে পড়া চোখের জলে মিলিয়ে আঁধার কালো মেঘের ফাঁকে ফাঁকে উড়ে চলে মেঘ কন্যা । ঘুমের ঘোরে টলে টলে কষ্টের ভার বহন করার নেই কোনো পরিধি। আকাশের অসীমতায় মিশে অকারণে ভেসে যায় একাকী বিষন্ন ভগ্নহৃদয়। তবুও জীবন চলবে কারো জন্য থেমে থাকেনি। শুধু পরাজিত সৈনিকের মত ভাবনার ডানা ভেঙে চুরমার করে দেয় অগোচরে। গাঙচিলের ঝাঁকের পিছে পিছে বহুদূর এ মন ছুটে চলে। বাতাসের মোহন বাঁশী বেজে উঠে কৃষ্ণের ঠোঁটে । মধুর নেশায় মদিরায় বিভোর নিথর হয়ে যায় সব এলোমেলো ভাবনা গুলো।
আমি রক্তে মাংসে গড়া মানুষ। আমারও হিংসা বিদ্বেষ আসে মনের মাঝে । তখন আমার কাছে মনে হয় পৃথিবীটাকে লাথি মারতে ইচ্ছে করে। কিন্তু কখনো মনের এ ভাবনা গুলোে প্রশ্রয় দেই নি কেনো কারণেই। নিজেকে হারিয়ে খুঁজে নিই নিজের কাছেই। ঝরে যাওয়া পাতা জমেছে শিশিরের টুপটাপ শব্দ পতনের মতো। তবুও মনকে সান্ত্বনা দিয়েছি বেঁচে থাকার প্রয়াসে। কিন্তু আজ আর সেই বেঁচে থাকার প্রয়াস আর কাজ করছে না। প্রতিনিয়ত নিজের কাছেই হেরে যাচ্ছি । কখনো বাংলা, কখনো হিন্দি, কখনো বা ইংরেজি গানের সুরে শ্রাবণ খুঁজে বেড়াই অতৃপ্ত হৃদয়ের সকল জ্বালা জুড়ানোর জন্য । ঘুম যাওয়াটা খুবই জরুরী । কিন্তু মনের মধ্যে যা খেলে চলছে তাদের সাথে কথা বলতে চাই। একটি আলোর ধারায় ভাসিয়ে ভেলা চাঁদের আলোয় আলোকিত করে আপন মন ছুঁয়ে যায়। “ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুর অন্তরে “। মনে পড়ে যায় কথা গুলো।
গত চারদিন থেকেই অতীত আমাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে । কোনও ভাবেই তার সীমানা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি না। তীব্র মাথায় যন্ত্রণা নিয়ে কাটছে সময়। ভাবছি কি করা যায় ?! ভাবতে ভাবতে তিনদিনই পার হয়ে গেলো, টেরই পাইনি। এমনই কিছু ভাবনা থাকে যা লেখা যায় না, শেয়ার করা যায় না । কুঁড়ে কুঁড়ে খায় আপন মনে। জগাখিচুরির মাঝে নীরব নিঃশব্দে চলচ্ছে মল্ল যুদ্ধ । অবাঞ্চিত কিছু একটা কথা বলতে ইচ্ছে করে। কিন্তু তার সাথে সাথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তার কিছু কিছু কথা আর আমার কিছু ভাবনা । সব মিলিয়ে আঁধার কালো হয়ে উঠে মানস পটে। সারাটাদিনই আজ মেঘলা আকাশ । সূর্য দেবতা যেনো উঁকি দিয়েও আজ আসলো না সবার মাঝে। মনে হচ্ছে আমার মতো তারও মাথাটা খারাপ হয়ে আছে। ঈশ্বর যেনো কোথাও কারোর জন্য রাগ হয়ে আছেন। রাগ হবেনইনা কেনো?! এতো সার্থপর পৃথিবী, পৃথিবীর মানুষগুলোও। ঈশ্বরের অসীম কৃপায় আবার আমরা যেনো ফিরে যেতে পারি তার সানিধ্যে। অসম্ভব এক যন্ত্রণায় ছটফট করছে কপালটা। চশমা পরতেও ভালো লাগছে না। কি করলে এ নরক যন্ত্রণা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো জানি না।
এক নরক যন্ত্রণা থেকে বেরিয়ে আসতে আজ আমাকে তিন ঘন্টা গাড়ি চালিয়েছি একটানা । মাঝে মাঝে নীরব নিরিবিলি প্রাকৃতিক দৃশ্যমান হয়েছে, সূর্যের সাথে কথা বলতে বলতে কখন যে পাহাড়ের ঢালে এসে দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে বয়ে যায় দূর আকাশের অসীমতায় আমার নীরবতা। সূর্যকে আস্তে আস্তে নেবে যেতে দেখেছি অতি কাছে থেকে । হাসতে হাসতে বিদায় নিলো আপন মহিমায় দীপ্তি ছড়িয়ে। কেমন এক অমলিন রসে বেঁধে নিয়েছে সংশয়ের দুনিয়ায় বহুরূপী দানবের উৎপাত হতে রক্ষা করে। মুক্তির গান মনে পড়ে গেলো ” সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে শোনো শোনো পিতা, কহো কানে কানে, শোনাও প্রাণে মঙ্গল বারতা “….. গানটি আমি ভাঙা ভাঙা গলায়ই গেলাম কারণ গলাটায় মনে হচ্ছিল কিছু একটা বসে আছে । সহজে যাবে না। তবু্ও মনে মনে হাসি পেলো। সূর্য দেবতা তার মৃদঙ্গ বাজায়ে চলে গেলো। মনে হলো আমার ঘরে ফেরার পালা। গাড়িটা ঘুরিয়ে পাহাড়ের ধারে ধারে চালিয়ে চলে আসি বাসায় । আাসায় এসে মেয়েকে জিজ্ঞেস করলাম, মায়ের জন্য চিন্তা হয়নি কোথায় গিয়েছিলাম ? ! ও বললো, না মা, আমার চিন্তা হয়নি। আমি জানি তুমি পাহাড় ছাড়া কোথাও যাবে না “। তাই আমি নিঃশ্চিন্ত ছিলাম। যাহোক এসে একটু রান্না করলাম। সময় টা যাওয়ার জন্য । ভালোই লাগছে এখন । প্রকৃতির কাছে এক পরম সত্যের মহাগ্রন্থের সারমর্ম বুঝার জন্য আমাদের একবার হলেও যাওয়া উচিত । যা মানুষকে সত্যের কাছাকাছি নিয়ে যায় । নিয়ে যায় ঘৃণা, হতাশা, সংশয়, তৃপ্ততা, বাসনা, কামনা, অতৃপ্ততা সবই মনে করিয়ে দেয়। মনে করে দেয় অগোচরে অবাঞ্চিত ভালবাসার পাথরে ছাওয়া রেললাইন। ছুটে চলে প্রাণ কেড়ে নেয় ভঙ্গ ইতিহাসের কোন একটা লেখা। যে লেখা কবিতা হবে, গল্প হবে, কিন্তু কেউ জানবে না কেউটে শাপের ছোঁবল। ইতিহাস, ঐতিহ্য ধরে নিবিড় অন্ধকারে জড়িয়ে আছে তার শত শত ভণ্ডামির স্মৃতিকথা । এ হতাশাও নীরবে হেসে উঠে মনের ভেতর । কেমন-ই আচরণ এ হৃদয়ের?! কি করে বুঝাই জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত গুলোকে শব্দের নিঃশব্দ ফুলঝুরি ছড়িয়ে আলোর ধারায় ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছি এক অকৃত্রিম প্রকৃতির বিচিত্র রুপে মিলিয়ে নিজেকে খুঁজে বেড়িয়েছি । কতো কথা ভাবি এ নিঃশব্দে নিশীথের অন্ধকারে! তবুও রবীন্দ্রনাথের গান পিছু পিছু ডেকে যায়, ” তোমার অসীমে প্রাণ মন লয়ে, যতদূরে আমি ধাই….. “!! এখন আমার ঘুমের মেডিসিন গান গুলো……..!!!
সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। তার নিয়ম অনুযায়ী চলে।
চারপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু কিছু কথা, কিছু কিছু ভুল খুব কষ্ট দেয় নিজের মনকে মনের অজান্তেই । চারিদিকে আতংক আর মৃত্যুর খবর। মৃত্যুর ছবি আর এ খবর গুলো খুব মন খারাপ করে। নিয়ে যায় অনন্ত ধামে তাঁর কাছাকাছি।
~~~~~ এ নশ্বর দেহ ~~~~~
এ নশ্বর দেহ একদিন মিলিয়ে যাবে এ মাটির কাছে
জীবন চলার পথে কেনো কাঁটা হয়ে রক্ত ঝরে পড়ে
এ পৃথিবীতে কি নারী, কি পুরুষ কেহই পাবেন না রক্ষা,
এ নশ্বর দেহ হবে যে মাটি সে চলবে কি ভুলিলে এ পৃথিবীতে?
সকলেই যায় বিফলে, ঝরে পড়ে চোখের নিমিষেই
শূন্য হাত নিয়ে যাবে সাদা কাফনে ঢেকে রাখা এ নশ্বর দেহ একদিন মিলিয়ে যাবে এ মাটির সাথেই একেবারে ।
তবুও কেনো বুঝে না এ মানুষ নামের মানুষ গুলো
এ যে অহংকার, ধন-দৌলত সংগে যাবে নাকো আর
সমালোচনার মুখে যখন প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রশ্ন
প্রশ্নের উত্তর তো নেই কারোরই জানা নীরব নিথর দেহটি
রবে পাশে সন্তান, পরিজন, ধন-দৌলত, সবই……..!
সংগে যাবে নাকো কেহই কোনো কিছুই সাদা থান ছাড়া ।
তাহলে কিসের অভিযোগ, কিসের এ বাহার, বাড়ী -গাড়ী
করতে হবে এ মন সহজ সরলতার প্রতীক হয়ে শিশুর মতো,
তাহলে হয়তো পাবো ঠাঁই তাঁরই কাছে যেখানে নেই কোনো পরিধি, ভেদাভেদ আমাদের যেতেই হবে সারে তিন হাত
মাটির নীচেই অনন্ত শান্তির আাশায় মরণের সীমা হতে ।
অবুঝ শিশুর মতো করে আমাদের মিশে যেতে হবে কারণে
অকারণে এ পৃথিবীর সকল মানুষের কাছে মনের কালিমা,
ধুয়ে নিয়ে তাঁর উপর বিশ্বাস করে আপন মহিমায় জীবন
সুন্দর সহজ সরলতার প্রতীক হয়ে উঠুন এই ধরার মহিমা ।
৫/২/২০২১ইং
রাতঃ ১১ঃ৫০ মি.
এ কবিতাটি মনে হলো এ মূহুর্তে আমাকে নিয়ে যায় দূর আকাশের সীমানায়। যেখানে মনে করি তাঁর বাস। তাঁর আবাসে আমার মতো মানুষের জায়গা হবে নাকি তাও জানিনা। তবুও আশাকরি, ভালো কিছু করার চেষ্টা করি। সরলতার সুযোগ না নিয়ে সরল থাকতে পছন্দ করি। সমুদ্রে ঢেউ উঠে, সমুদ্র ও ঢেউয়ের মাঝে সুখ -দুঃখ দুটোই আছে। ঢেউ ভেসে যায় কিনারে, আবার ফিরে আসে সমুদ্রের মাঝেই । সমুদ্রে যখন ঢেউ উঠে, তখন সমুদ্র থেকে ঢেউ কখনো পৃথক হয় না। ঢেউ সমুদ্রের অংশ হতে পারে। কিন্তু ঢেউ কখনো তার বিকল্প হতে পারে না। সমুদ্রের অসীমতায় তার বিশলতা শুধু গ্রহণ করতে পারে। কখনও কোনো দিন বাঁধা দেয়ার কথা ভাবেনি। সকলকে সইবার ক্ষমতা সে রাখে। তাই সমুদ্রের কাছে এসে মন ভালো হয়ে যায় । আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে নিজেকে খুঁজে পাওয়া যায় দূর কোনো অজানায় যেখানে জনহীন পথে হেঁটে যেতে যেতে আনমনে যখন একজনকে দেখে কেউ যদি কোনো কথা বলতে চায় তখন মানুষ তার জন্য একটি কথাই ধরে নিয়ে কথা বলা উচিত। মৃত্যুর কোলে মাথা রেখে যখন লীন হয়ে যায় তখন তো কোনো কথা বলার থাকে না। তাই যা বলার আগে থেকেই বলে নিন, মনকে খুলে দিন, হাসুন আপন মনে। আর একটি হয়তো কখনো আসবে না সামনে । তাই যে যে বেঁচে থাকতে চাই বাঁচতে হবে। একদিন না যেতেই আবার মৃত্যুর খবর……
প্রতিদিনের প্রার্থনায় চোখ বন্ধ করে নিজের ছেলে মেয়ে, মোটকথা সংসারে সবাইকে, সব আত্মীয় -স্বজন, কাছের দূরের, এখানে সব বাঙালীদের একবার ঘুরে দেখে আসি মনের চোখে । সবার জন্য কল্যাণ কামনা করি। মাঝে মাঝেই কল দিয়ে কথা বলি কারণ কখন কে থাকবে, কে থাকবে না সেটা তো আমরা জানিনা। সময়ও নির্ধারণ করতে পারবো না । তাই যতটুকু পারি মানিয়ে নিতে চেষ্টা করি। কি হবে এতো টাকা পয়সা, দাম্ভিকতা, অহংকার, হিংসা, পরচর্চা….?! আমরা কি কেউ ভাবি কতক্ষণ পরে আমার মৃত্যু হবে? তাহলে কিসের অভিযোগ, কিসের টাকা পয়সা সেভিংস রাখা? আমরা কি পারিনা একটু সাহায্যের হাত বাড়াতে? মনটাকে আর একটু উদার করতে? ছোট্ট বেলায় আমার একছোট ভাই মারা গিয়েছে । মৃত্যু কি তখন কিছুই বুঝিনি । তারপর বাবা, তাকে ভয় পেতাম। কিন্তু এখন বুড়ো কোনো বাবার বয়সী কাউকে দেখলে তাদের সাথে কথা বলি। তারপর মা… কতো কাছের মানুষ। খুব মিস করি বাবা মা কে। আজও একজনকে হারালাম জেঠাতো বোনের ছেলে । কেমন যেনো জীবনটা! ঘুম আসছে না সবাই বাড়ি যাচ্ছে লাশের গাড়ি নিয়ে।
এ বিদেশ- বিভুইয়ে কেমন যেনো লাগছে আত্মীয় স্বজন সবাইকে খুবই মনে পড়ছে । মৃত্যু সে তো হবেই । তা অবধারিত। কিন্তু এমন ভাবে কেনো? সুজিতের পরিবারের সকলকে এ ভার বহন করার ক্ষমতা দাও হে ঈশ্বর । একা এসেছি এ পৃথিবীতে একাই চলে যেতে হবে। সুজিতের আত্মার শান্তি কামনা করি । Rest in peace
কেমন যেন নিঃশব্দে বয়ে যায় কোনো ঝোড়ো হাওয়া হৃদয়ে। নিরালায় বসে সবুজের বুকে একা একা ভাবছিলাম কতো কি!
নিরন্তর একা একা পথচলা আমার। সবই ছিলো, সবাই ছিলো তবুও আমি একা এসেছি এ সং- এর দুনিয়ায় বহুরূপী মানুষের ভীরে। আমার যখন নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় এসব মানবের ভীরে তখন আমি চলে আসি কোনো নির্জন সবুজের বুকে নয়তো কোনো পাহাড়ের ধারে, নাহয় কোনো সাগরের বিশালতার কাছে। তারা কখনো কৃপণতা করেনি বুকে তুলে নিতে। কখনো বলেনি এটা তোমার বসার জন্য নয়। পাহাড় তার বিশলতা দিয়ে আঁকড়ে ধরে নিবিড় করে। বলেনি কখনো কেনো হেলান দিয়ে বসে আছো এতক্ষণ ? সবুজের মিস্টতা দিয়ে কেমন যেনো এক অকৃত্রিম প্রশান্তি এনে দেয় অগোচরে মনের ভেতর।
যখন সাগরের কাছে এসে দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে পায়ের পাতা ভিজিয়ে নোনা জলের আবেশে লিপ্ত হয়ে বিভোর করে চির মধুর নেশায় ডুবিয়ে দেয় জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত তখন হঠাৎ করেই গাংচিল এসে বলে যায় দূর আকাশের অসীমতায় মিশে যাচ্ছে অসহায়ের মতো সূর্য দেবতা। আমাদের বিদায় জানান আবীরের রঙের বাহারী রঙে । কমলা রঙের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলতে তুলতে বিদায়ের সুর ভাসে……. বিদায় বন্ধু আমার বিদায়।
মনে মনে ভাবতে থাকি সন্ধ্যা প্রদীপ হাতে নিয়ে, শঙ্খ বাজিয়ে যেনো মাতা লক্ষী আমায় ডাকছে ঘরে ফিরে যেতে। সন্ধ্যা বেলার বিদায়ী পাখির ডাকে কোন্ সে আশায় বাঁধি খেলা ঘর মনের বালুতে। যে ঘর ঝরে তচনচ করে, ভেঙে চুরমার করে হারিয়ে গিয়েছে সাগরের গর্জনে। তবুও সাগর হাত বাড়িয়ে ডাকে উদাস করা হাওয়ায়, মিটিমিটি তারার মেলায় এলোমেলো বাতাসে নিভে যায় আমার সকল কষ্টের প্রদীপ। জ্বালাতে আর চাইনি যদি আবারও নিভে যায়। তাই অন্ধকারকে সঙ্গী করে ভেসে বেড়াই অতৃপ্ত রসনার মাঝে নীরব নিঃশব্দে সুপ্ত ভালবাসার রিক্ত প্রাণের স্পন্দনে গেঁথে দেওয়া সেই অশোকের মালা আজও মনের আঙিনায়।……
আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস, জীবন চলার পথে
অনেক বাঁধা -বিপত্তি আসবে….. আসবে সুযোগ, আসবে নিয়ম মেনে চলার নানা প্রতিবন্ধকতা । একটি নারীর বহু রুপ আছে, সে বহু গুনে গুনান্নিতা । নারী দিদিমা, ঠাকুমা, মা, বোন, কারো মেয়ে, কারো ছেলে-বউ, শ্বাশুড়ী মা, শিক্ষিকা… …সর্বোপরি সেবিকা….. নারী এ সমাজে হাতে হাত রেখে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছেন…. আসুন আমরা সকলে তাদের অবমূল্লায়ণ না করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই… আমাদের প্রজন্মকে শিক্ষা দেই তারা যেনো আমাদের কাছ থেকে ভালো কিছু নিতে পারে।
নারী তুমি জন্মভূমি…… তুমি মা, তুমি শত রুপে শশত ! নারী তুমি কোথায় নও? তুমি সেবিকা, তুমি প্রেমিকা, তুমি বঁধু রানী! তুমি কারোর বউমা, কারো জন্মদাত্রী জননী, কারো শাশুড়ী, কারো ঠাকুমা। তুমি শতদলবাসিনী । তুমি দূর্গা, তুমি সর্বগ্রাসিনী কালীমা, তুমি ঘরের লক্ষী মা, তুমি সুরের ঝর্ণাধারা স্বরসতী, তুমি শিবের পার্বতী । আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সকল নারীদের জন্য রইলো আমার আন্তরিক ভালবাসা ও শুভেচ্ছা ।
আমার কে তুমি নারী কবিতাটি এ লেখার মাঝেই খুঁজে নিতে নিতে পারো তুমি।
“কে তুমি নারী ”
কে তুমি নারী করেছো হৃদয় জয়
মানুষ হিসেবে সৃষ্টির কর্তার দ্বিতীয় সৃষ্টি তুমি নারী ,
দিয়েছো দু’জন নতুনের জন্ম এ ধরায়।
নারী তুমি সেই-ই গায়ের সহজ পল্লী বঁধু
আবার তুমি সেই-ই অট্টালিকার সুন্দরী ললনা
তুমি তো সেই স্নেহময়ী মা যে সন্তানকে পাশে বসিয়ে
ভাংছো ইটের পাহাড়, গড়েছো বিলাসী আবাস।
তুমি তো নারী কেবলই নীরব বয়ে চলা নদী….
তুমি চণ্ডালিকা, তুমি শিবের পার্বতী….
তুমি সুরের মূর্ছনায় আনন্দময়ী সরস্বতী ।
তুমি তো সেই নারী বেগম রোকেয়া, সুফিয়া কামাল
তীব্রগম্ভীর মেঘের গর্জন মা কালী ।
তুমি স্নেহশীল মা, কারো ভালবাসা,
সেবায় নিয়োজিত হাস্যউজ্জ্বল সেবিকা।
স্বংয়ের দুনিয়ায় অতৃপ্ত সংসারে তিক্ত নারী ।
অত্যাচারী সংসারে নির্যাতিত তুমি নারী,
স্নেহময়ী মা হয়েও নেশাখোর সন্তানের
কাছে এক অপবাদগ্রস্ত চরিত্রহীন নারী।
তুমি পূর্ণ পূর্ণিমাতিথির লক্ষী মা
দুঃখের সান্তনাদায়িনী নারী মা দূর্গা।
সৃষ্টকারীর অপরূপ সৃষ্টিশীল তুমি নারী,
আনন্দধারায় চিরশান্তির রানী…..
মা তুমি মারীয়া হে নারী তুমি
তবু মনোভাবে আসো বারবার কে তুমি নারী ?
০৮/০৩/২০১৭ইং
হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে দূরে কোথাও…. অজানা কোনো দেশে যেখানে কেউ আমায় জানবে না…জানিনা …. যা অনুভব করি তাই বললাম, যা হবার তাই হোক কিছু হারানোর ভয় নেই। যা হওবার তো তা হয়েই গিয়েছে।আর ভালো লাগেনা একা কোথাও…..অজানা পথ ধরে হেটে যাচ্ছি পথিক বিহীন…. জানিনা কোথায় তার শেষ ঠিকানা…হুম একা যাবো চলে আমার মনের বাঁধন খুলে আমি উড়ে যেতে চাই ডানা মেলে…..একার মাঝেও তুমি খুঁজে পাবে একাকীত্বের স্বাদ….. ফিরে পাবে তুমি তোমাকে নিজের মাঝে……নিজের…..অজান্তে। একা থাকার মাঝেও সুখের ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়, যায় পাওয়া শান্তি।
তবু এ পথ অতি দূর্গম, কোনোকিছুই কোনো সহজলভ্য নয়। অজানা আশংকা মনকে নিয়ে যায় এক অনিশ্চয়তার মাঝে। মাঝেমাঝে মনে হয় কেনো হয়নি, কি হতে পারতো, কেনো আজও পারছিনা….. এক পাহাড় সমান প্রশ্ন এসে দাঁড়ায় সম্মুখে । যা আজ আর সংশোধক নয়, চাইলেই করা যায় কিন্তু এতোটা দিনের ত্যাগস্বীকার তাহলে কিসের জন্য?! একা বাঁচতে শিখেছি, তবু কেমন যেনো এক কষ্ট আমায় কুঁড়ে কুড়ে খাচ্ছে……. নিজের কাছ থেকেই নিজেকে মুক্ত করতে পারছিনা । পারছি না ভাবতে এ আমার কপালের লিখন। যখন ভাবি এ আমার কপালের লিখন তখন সৃষ্টিকর্তার উপর অভিমানে মনটা কেঁদে উঠে, বিশ্বাস করতে মন চায় না উনার সৃষ্টিকে। আবার যখন একা একা এ পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে যখন হেঁটে চলি কোনো অজানা উদ্দেশ্যে, পাহাড়ের আড়াঁলে সূর্যটা হেলে আবীরের রং- এ চারিদিক রাংগিয়ে তোলে তখন মনটা আবার উনার সৃষ্টির কাছে মাথাটা নুয়ে আসে। মনে হয়….. এটাই ছিলো আমার পাওনা। আমি সইতে পারি বলেই আমাকেই দিয়েছেন এ ভার বয়ে চলার অজানা শক্তি, সাহস যার জন্য এখনো বেঁচে আছি…… আছি কিছু হওয়ার আশা নিয়ে আজও চলি এ পথ ধরে…… কোথায় সে পথ গিয়ে শেষ হবে তার নেই কোনো ঠিকানা । এ পথ ছিল, আছে, রবে অনন্তকাল ধরে এ পৃথিবীতে।
সৃষ্টিকর্তার এমন বিশালতায় অনিন্দ্য সুন্দর সৃষ্টির মাঝেই আমার আমিকে খুঁজে নিই নিজের মাঝেই । কি হবে, কি হবে না এসব ভেবে ভেবে ক্লান্ত পথিকের বেশে হেঁটে চলি আকুল পাথারের কোনো একটা ডাক শোনার আশায়, ” একটু দাঁড়াও, আমিও চলি তোমার সাথে, হাত দু’টো দাও আমারই হাতে। তোমার মৌন্যতা আমাকে ব্যাকুল করে দেয়। ” কই কেউ তো বলে না।!!
আজ আমি বড় ক্লান্ত হয়ে ফিরে যেতে চাই আমার শৈশব কৈশোরের সেই দিনগুলোতে। যেখানে জনহীন পথে হেঁটে যেতে যেতে আনমনে গান গেয়ে উঠতাম। এক্কা দুক্কা খেলায় মেতেছি কতো জনের সাথে। বউচি পাট শোলার ভিতরে লুকিয়ে লুকিয়ে কতো খেলায় মেতেছি! সে কি আর আসবে ফিরে?!! মৌন্যতায় ঘিরে থাকা নীরব ভালবাসার রিনিঝিনি শব্দের ছন্দে শিউলি ঝরা হেমন্তের বিকেলে ছুটাছুটি বীনাদের বাড়ি। সন্ধ্যা মালতী ফুলের কালো বিচ দিয়ে কানের টব বানিয়ে পড়া, সে কি এক অভূতপূর্ব অনুভব যা বলে বুঝানো যায় না। তবুও ভাবি এ হৃদয় চিড়ে বেরিয়ে আসে স্মৃতির মনিকোঠায় লুকিয়ে রাখা শত অভিমানের পাহাড় গড়েছে যা নীরবে একা একা ব্যথায় নীল হয়ে মিশে যায় শরীরের রক্তক্ণায়। আমার এ মৌন্য মনে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নিজেকে জিজ্ঞেস করি, ” আচ্ছা আমি কি ভালবাসা পাইনি নাকি নিই নি? ” নাকি যাকে দেয়ার কথা ছিল তাকে দিই নি? বারবার ফিরে ফিরে যেতে হয় আমাকে ফেলে আসা দিনগুলোর কাছে।
কি বলবো কোথা থেকে শুরু করবো সেটা জানা নেই, নেই কোনো কথা, নেই ভাষা তবু্ও এ সাদাকালো আলোকচিত্র প্রদর্শনী দেখে মনে হয় অনন্ত শান্তির বারিধারা বয়ে এনেছে জীবনে। মুখে যখন অমিল হাসির ঝর্ণা ঝরে পড়ে চোখের গভীরে নীল সাগর তখনই যেন টলমল জলের আবেশে ঘোর কুয়াশা সারারাত কাটে এখানে ওখানে চিন্তার বোঝা নিয়ে….. হেঁটে চলি আকুল পাথারের কোন একটা কথার ফুলঝুরি ছড়িয়ে আলোর ছায়ে নিজেকে বিলীন করে হারিয়ে যাই আমার হৃদয়ের অলিখিত গদ্য গুলো নতুন সুর খুঁজে নিই কেনো অজানা অচেনা পথিকের মাঝে । জানা – অজানা ভয়ে নিষ্ফল সাধনে সফল হবে, হতে পারে এ ভাবনা নিয়ে যায় পাহাড়ের পাদদেশে এবং তার সাথে সাথে কথা গুলো……কেমন যেনো এলোমেলো ভাবনায় ডুবে যায় দূর কোনো অজানায় যেখানে জনহীন পথে চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে বসে সার্থহীন কোনো গাছের তলায় ঝরে পড়া মচমচে পাতার মর্মর ধ্বণি বাজিয়ে যেনো এক অকৃত্রিম প্রেমের কথা বলে যায়।
“পাতা চুয়ে জল পড়ে….. জাড়ুল বন ভিজে সারারাত….. আষাঢ়ের গভীর রাতে…. কে আজ ভিজবে আমার সাথে দু’ পায়ের আঙুল…. থেকে কালো চুল, গোলাপি ঠোঁট হবে আরও গোলাপি। আজকে এসে ভিজাবে নিজেকে কালো রাতের শরীরে চুমোয় চুমোয় ভরিয়ে দেবে। দেবে ইচ্ছের সীমানা ছাড়িয়ে যাবে তোমার অবাধ্য হাত…….
চলবে……
California/USA
১ Comment
Wow, good job