মৃত্যু
(রাজিনা চৌধুরী)
মৃত্যু যেন সব কিছু এলোমেলো করে দিয়ে যায়।
নিরুদ্দেশ চৈত্রের পাতার মতো এ-ঘর ও-ঘর,
উঠোন বারান্দার ঘরে
আত্বীয়রা ঘোরে,
মানুষের আসা যাওয়া চাপা স্বর,
প্রত্যেকের চোখের কোনে জমে থাকা কিছু কান্না,
আজ কাল মৃত্যুটা যেন ঘন ঘন শুনি,
প্রতিদিনের নিত্য খবর যেন এটা।
মৃত্যুর খবর পড়লে চোখের ওপর ভেসে উঠে
চিরচেনা দৃশ্য, খাটিয়ায় রাখা শবদেহ স্বজনদের বিলাপ,
গলায় কিছু থেকে যাওয়া কথার গুমোট,
উস্কোখুস্কো চুল, অগোছালো অহেতুক আলাপ,
জীবনের ধুসর একটা গ্লানী, অথবা জন্মের নিকট আত্বীয় নাকি দুর আত্বীয় অস্পষ্ট দেহাতী,
পায়জামায় লেগে থাকা কবরের কাদা।
একটা শূন্যতা, যেন স্টেশন কাঁপিয়ে হুইসেল বাজিয়ে ট্রেন চলে গেলে খাঁ খাঁ প্লাট ফর্ম।
সদ্য সমাপ্ত মৃত্যুর কাছে আমরা বিনয়ী নম্র।
চুপচাপ ভাবি এ দিনটি আমারও তো আসবে।
এই কুঞ্জবনে ফেলে যেতে হবে পরিজন সবাইকে।
সৌরকরপুষ্ঠ অনেক পূস্পলতাকুঞ্জের মত আশ্রয় হয়ে পরিজনরা এখন আমাকে নিয়ে।
বিমুঢ় ভাবে ভাবতে থাকি কি হবে আমার মৃত্যুর পর স্বামী, সন্তানের?
সমস্যা কি হবে তাদের অন্ন যশ এর?
স্বজনরা কি আমার জন্য মাতম করবে?
আতংকিত হয়ে পরিতাপ করি কি হবে আমার অবস্থা,আমি
যে পরকালের জন্য এখনোও অযোগ্য,কম্পিত হয় হৃদয়।
আত্মশুদ্ধির চেষ্টা করি তখন কিছুদিন।
তারপর আবার আলিঙ্গন করি অদিতি কে, মেতে উঠি
প্রমোদ, উল্লাস, বিদ্রুপে,
ভুলে যাই চির সত্য মহাপ্রস্তানকে যা আমার অদূরবর্তী।
হিমানী তেষ্টা নির্মন হবে কি আমার মহা প্রস্থান?
নিউইয়র্ক/আমেরিকা
২ Comments
very good job; Congratulations.
অসাধারণ