বৃদ্ধ বয়সে পিতা-মাতা:
আমাদের ভূ-খন্ড থেকে দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে যৌথ পরিবার। যা এক সময় ৯০% ছিল, বর্তমানে দাড়িয়েছে ২৮%। একক পরিবার ৭২% যা পূর্বে ছিল ২৮%। এই অবস্থার জন্য আমরাই দায়ী বলে আমার ধারনা।
আমাদের সন্তানরা যখন দেখে বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে বাসায় রেখে অথবা সাথে না রেখে শুধুমাত্র সন্তানদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরি। স্কুলে পাঠানো, কোচিং এ যাওয়া, বাহিরে ঘুরতে যাওয়া, সী-বিচে যাওয়া, রির্সোট এ যাওয়া, চায়নিজ খাবার সময়, বিয়ের দাওয়াতে যাওয়ার সময় শুধুমাত্র সন্তানদের নিয়ে যাই। এ দিকে বৃদ্ধ পিতা-মাতা বাসায় থাকে। এতে সন্তানরা কি শিখে ? বড় হলে তারাঁও আমাদের রেখে সব কিছুই একা একা করবে আমাদেরকে বাদ দিয়ে। তা হলে আমি কি বলতে পারি না যে, পারিবারিক সু-শিক্ষার অভাব, সামাজিকতার অভাব, ধর্মীয় শিক্ষার অভাব, অপসংস্কৃতির পরিচর্চা বেশি। সন্তান অসুস্থ্য হলে আমরা যেমন মানসিকভাবে বিচলিত হয়ে পড়ি, তেমনি পিতা-মাতা অসুস্থ্য হলেও আমাদের সঠিক দায়িত্ব কর্তব্যে অবহেলা করা উচিত নয় বলে আমি মনে করি। বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে মাঝে মাঝে জিজ্ঞাসা করা উচিৎ আপনাদের কিছু খেতে মন চায় কি না ? বস্ত্রাদি লাগবে কি না, বেড়াতে যাবেন কি না? টাকা-পয়সা লাগবে কি না ? বিভিন্ন উপায়ে পিতা-মাতাকে খুশি রাখা, তা হলেই সন্তানরা এসব দেখে শিখবে, জানবে সন্তানরাও আমাদের সাথে এক সময় এই সুন্দর ব্যবহার করবে। বৃদ্ধ পিতা-মাতার জন্য আল্লাহর দরবারে দোওয়া করতে হবে। হে আল্লাহ আমার পিতা-মাতা আমাকে শৈশবে যে ভাবে কষ্ট করে লালন পালন করেছে তুমি তাদের প্রতি সেইরূপ সদয় হও। বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে মাঝে মাঝে নিজ হাতে গোসল করাতে হবে, নিজ হাতে খাওয়াতে হবে। সার্বিকভাবে সেবা-যত্ন করতে হবে।
উন্নত বিশ্বসহ আমাদের দেশেও বৃদ্ধাশ্রম নামে যে প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে সেখানে যেয়ে দেখবেন, শুনবেন তাদের বুকের ভিতর চাপা কান্না। আমি দেখেছি ফিলিপিনের সিবু শহরে, মালেশিয়ার জহুর বারুতে, কুয়ালালামপুরে, লাংকাউইতে, সিংগাপুরে, নেপালে, কোলকাতা, দার্জিলিং এবং থাইল্যান্ডে সরাসরি দেখেছি এবং শুনেছি তাদের কোন অর্থ কষ্ট ছিল না। ছিল শুধু বৃদ্ধাশ্রমে থাকার বুক ভরা ব্যাথার যন্ত্রনা। আমরা কি পারি না একটু ভাল আচরন করে পরবর্তী প্রজন্মকে সু-শিক্ষায় পরিচালিত করতে। আমাদের দেশে পিতা-মাতার প্রতি অবিচার, অনেক খানি দায়ী-বিভিন্ন বিদেশী টেলিভিশন চ্যানেল।
লেখক-সাইদুল ইসলাম
০৯/০৩/২০২২
১ Comment
valuable speech