বাঙালিরা জাগতে জানে
– খান আখতার হোসেন
মনে পড়ে একযুগ আগের কথা-
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের মাসিক সাহিত্য আসরে উপস্থিত মাত্র চারজন।
প্রধান অতিথি মাহবুব তালুকদার ক্ষুব্ধ হননি।
কারণ ঢাকা সেদিন স্থবির ছিলো ধর্মঘটে।
মনে পড়ে অর্ধযুগ আগের কথা –
সংস্কৃতি কেন্দ্রে সোহেল রশীদ এডিএম মনির শাহীসবুর
আর আমি ঘন্টা দেড়েক চাতকীর মত ছটফট করেছি।
সাহিত্য তৃষ্ণায় আগমনী বার্তা শোনায়নি সেই আড্ডায়।
কারন সেদিন বৈশাখী রঙে রাঙিয়ে ছিল
শাহবাগ রমনা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা।
লাল নীল হলুদ প্রেমময় ভাবনারা খিল এঁটে দিয়েছিলো সৃজনশীলতায়।
মনে পড়ে আটাশে জুলাইয়ের মহা সমাবেশের কথা-
রাজনৈতিক টানা পোড়েনে রাজধানী যখন স্থবির,
মুখোমুখি অবস্থানে সাধারণ মানুষ ছিলেন আতঙ্কিত,
রক্ত নহরে প্লাবিত হতে আগ্রহী যখন আন্দোলনকারীরা,
আগারগাঁও ন্যাশনাল লাইব্রেরি ক্ষণ গুনছে বারবার।
আকাশে বাতাসে ভ্যাপসা গরমের মাঝে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি
ফাঁকা ফাঁকা যানবাহন, বাসস্ট্যান্ডে লোকে লোকারণ্য
গেটলক বাসেও ছাদে বসে আছে অসহায় যাত্রী সকল
সম্মেলনে যোগ দিতে অসহায়ের মতো কবি লেখকগণ।
অধিকাংশ বিষন্ন ভগ্নহৃদয়ে ফিরে গেলেন নিজ আলয়ে
যেখানে অপেক্ষারত মা, স্ত্রী, সন্তানেরা গভীর আগ্রহে-
সাহিত্য মন্ত্রণালয় কি পাওয়া যাবে?
লেখক কল্যাণে সরকার কি করবে?
কবিদের অসুস্থ ভাতা কি চালু হবে?
কছিমুদ্দীনের ফ্যালফ্যাল অসহায় দৃষ্টি-
সম্মেলনে বিবাহযোগ্যা মেয়ের কথা বলতে পারতেন।
আয়োজকদের দৃষ্টি বাইরে- কখন আসবেন অতিথি?
সেদিন আকাশে দূর্যোগের ঘনঘটা ছিল না
ইট পাটকেল গোলাগুলির ছোড়াছুঁড়ি ছিল না
টিয়ার গ্যাসের বোটকা ঝাঁঝালো গন্ধ নাকে আসেনি।
তাহলে?
বন্ধ ছিলো যানবাহন। তবু এসেছিলেন বিরাশিজন।
প্রফেসর আবদুল মান্নান চৌধুরীর আগুনঝরা বক্তব্য
সরদার তমিজউদদীনের উদ্দীপ্ত স্মরণীয় কথামালা
রিফাত আলম, পালক রহমানের সমাজচিত্র তুলে ধরা
মূল প্রবন্ধে মনজু খন্দকারের প্রয়োজনীয়তার ব্যাখ্যা
তন্ময় হারিস, ইমরোজসোহেলের জোরালো উদ্দীপ্তধ্বনি
তাহেরা শাকিল আখতার কনক
শাহী হুমায়ুন সাইদা শাহনাজ হারুন বীনা মামুনের সাহিত্য মন্ত্রণালয় চাই
আতিক হেলাল অঞ্জলির গানে প্রাণ যেন লেখকদের।
সৃজনশীলতায় কি বাঙালিরা অচলায়তনে পড়ে আছে?
তিনটি ঘটনাই দেবে উত্তর – বাঙালিরা জাগতে জানে।
২৯/৭/২৩
সিলেট