মঙ্গল-অমঙ্গল কাণ্ড
[জগলুল হায়দার]
মুক্তমনা যুক্তি দিয়া যতোই কেন চেঁচায়
সরস্বতী রাজহাঁসে আর লক্ষ্মী চলেন পেঁচায়।
গণেশ চলেন ইঁদুরে আর মনসা তো সর্পে
সিংহের পিঠে চড়ে আবার দুর্গা চলেন দর্পে।
যমরাজ যায় কুকুরে আর ইন্দ্র চালান হস্তি
এসব দেখে মুসলমানে কেমনে পাবে স্বস্তি?
ব্রহ্মা যেমন পাতিহাঁসে মহাদেবও ষাঁড়ে
সেই মঙ্গল ঘুরতে থাকে সবার ঘাড়ে ঘাড়ে।
শীতলা দেবির গাধা এবং বিশ্বকর্মার ঢেঁকি
মুসলমানের পোলার হাতে দিচ্ছো তুলে সেকি!
বিষ্ণু বাহন গরুড় পাখি শিবের বাছুর নন্দী
সার্বজনীন* সার্বজনীন এইটা কেমন ফন্দি!
কার্তিকে যায় ময়ূরে আর কৃষ্ণ চলেন রথে
দেবদেবীদের বাহন এখন দেখছি ঢাকার পথে।
দেখবো তবে; পূজায় এসব দেখতে লোকে রাজি
নববর্ষ সবার হইলে ক্যান দেবতার সাজি?
এই প্রতিকের বিশ্বাসীরা এসব নিয়ে নাচবে
তাতে কোন সমস্যা নাই, এতেই তারা বাঁচবে।
কিন্তু একে চাপিয়ে দিয়ে সবার করে নিলে
গোল বাঁধবে খুব স্বাভাবিক ঈমানদারের দিলে।
আবহমান বাংলা ঘেঁটে পাই না এসব মোটে
নাই কথা তার সাহিত্যে আর ইতিহাসের ঠোঁটে।
‘হাজার বছর’ বচন দিলেও তিরিশ বছর আগে
এই আনন্দ শোভাযাত্রা বেরোয় শাহাবাগে।
সূর্য প্রণাম মঙ্গল প্রদীপ চালান করে চামে
মুসলমানের দেশেই তাকে ফেললে কেমন বামে!
ঢাকের তালে নব্য পূজা আনলো বেনে পুঁজি
পকেট কাটার ফন্দিফিকির সেটাও এখন বুঝি।
মঙ্গল প্রদীপ রামনামে আর লক্ষ্মীতে ঠিক জ্বেলে
কায়মনো প্রার্থনাতে হিন্দুরা সব মেলে।
হিন্দুদের এই ব্রতে বাধা আসলে ঠিকই লড়বো
তাই বলে এই আচার কী ভাই আমারা পালন করবো?
আরো পরে তোমরা দিলা মতলবি এক মাত্রা
আনন্দ হয় রাতারাতি মঙ্গল শোভাযাত্রা!
আর তাতে হয় ভিন্নধর্মী প্রতীক আচার যুক্ত
মুসলিমকেও হইতে হবে সেই কাফেলায় ভুক্ত!
মামুর বাড়ির আবদার এ, তা ছাড়া নয় কিছু
মুসলিম তাই ছুটবে না এই ভুলের পিছু পিছু।
হিন্দু তবে নিজের মতো করলে এসব তাতে
নেই আপত্তি, যাবে না কেউ বাড়তি কোন বাতে।
যাহার কর্ম তাহার সাজে পরের বাজে লাঠি
হিন্দু যেমন খাঁটি হিন্দু, মুসলিমও থাক খাঁটি…।
১ Comment
congratulations