প্রজন্ম জন্মান্তরে
[মাসুদ আহমদ সনজু]
অনেক আদিম কাল লৌহিত সাগর পারে অন্ধকার সে মহাদেশ।
ধরিত্রী পাতেনি তখনও পুষ্পশয্যা
প্রকৃতির কুহেলিকা সর্বক্ষণে।
গহীন বনভূমি সংহারী হীংস্রতা সর্বদা।
দুর আকাশে কোন বিস্ফোরণ উল্কা খণ্ডের পতন।
চারিদিকে দাবানল ভূমিকম্প মহাপ্লাবন
আগ্নেয়গিরির লেলিহান লাভা স্রোতে
সবই হয়েছে জমাট মৃত্তিকার গর্ভে একদা।
সেখানেই বিবর্তনের সূতিকাগার।
কোন মায়ের ভ্রুনে পরিষ্ফুটিত হয়েছিল
প্রথম স্তন্যপায়ীর কেও জানে না খোদিত হয়নি কোন শিলালিপিতে।
বন মানবের
হামাগুড়ি তখনও আঁতুড়ঘরে।
কেটেছে আরো সময়কাল নানা বিবর্তন সংঘাতে।
সেদিনের কথা, উত্তরপুরুষেরা খুঁজে
পেল শিঁকড়ের সন্ধান আদি মানবদেহ।
৪০ লক্ষ বছর আগের প্রস্তরীভূত জীবাস্মে এক তরুণীর।
কালোত্তীর্ণ সংগীতদল বীটলসের জনপ্রিয় ‘লুসি’গানে
রেখেছে নাম সে আদরির।
অষ্ট্রালোপিথেকাস প্রজন্মের মানব সুন্দরী
লুসির খাঁজে খাঁজে তখন আবিষ্কারে বিমোহিত গোত্র পুরুষেরা।
কি অব্যক্ত যন্ত্রনা সে প্রেয়সীর বুকে খুঁজে পায়নি
স্বরধ্বণী প্রিয়র তরে ভাষা তখনও গহীন অন্তরালে।
সময়ের ধারাপাতে সৌর দেবতাকে ঘিরে গ্রহটা ঘুরেছে আরও কত লক্ষ
কোটি বার।
এরই মাঝে প্লাইষ্টোসিন যুগ ভূমি সংঘাতের মহাপ্রলয়ে বৃক্ষের
বিলুপ্তি।
আশ্রয় হারানো পূর্বপুরুষেরা নেমে আসল তৃণভূমির সমতলে তখন
থেকেই।
বনোদানোর রক্তলিস্পা যুঝতে দাঁড়াতে হয়েছিল
তাদের দু’পায়ে দীর্ঘটাকাল ধরে।
পরির্বতিত হয়েছে খাঁড়া মানুষ হোমোইরেক্টাস প্রজন্মে।
তারপর সভ্যতার আগমন এগিয়ে চলে তাদের মহান অভিবাসন।
মরু দ্বীপ উপদ্বীপ প্রণালী পেরিয়ে
আরও দুর পূর্ব প্রান্ত উত্তরমূখি তুন্দ্রা অঞ্চলে বল্গা হরিনের পিছন পিছন।
কত ঝঞ্ঝা মহামারী প্রকৃতির ছোবল বরফ যুগের কশাঘাত।
ভোঁতা থেকে শানিত অস্ত্রে শত্রু দমন পশু বধ
সবই জমা আছে ইতিহাসের ঘষা দেয়ালে।
কি পরম শিল্প নিপুণতায় নিয়ান্ডারথাল নামক প্রজন্ম এঁকে গেছে গুহা চিত্রে
সভ্যতার হালনাগাদ তিরিশ হাজার বছর আগে আপন খেয়ালে।
শত সহিংস্রতা প্রাকৃতির বিভৎসতা হয়েছে বিরানভূমি অতীত প্রাণির।
কেবল রক্ষা করেছিল আদি বনমাতা মাতৃত্বের ক্রোড়ে মানবজাতির।
হয়ত কালের সে মহান বিবরণ রয়েছে কোন পাথরের চিত্রলিপিতে।
৫ Comments
congratulations
Excellent
Many thanks for publishing my poem
অভিনন্দন নিরন্তর।
অভিনন্দন ও ধন্যবাদ।