জুলুমবাজ স্মৃতি
[সুরমা খন্দকার]
ভোরের নির্মল বাতাস ক্ষণিকের তরে হলেও মনের ক্লান্তি কিছুটা দূর করে। আবেগে যে বন্যতা আছে তা কেবল দু’জন, পরষ্পর প্রেমিক – প্রেমিকা বুঝে তা কিন্তু নয়। ভালোলাগায় কতোটা ক্ষতিবৃদ্ধি জানি না, সামাজিক রক্ত চক্ষুগুলো এর কতোটা ব্যাকরণ সম্মত ক্ষতি বোঝাতে পারে—
আজ খুব ভোরে ঘুম ভাঙায় শিখা এতো কিছু ভাবতে পেরেছে।
টিফিন পিরিয়ডে সবাই বের হয়েছে শিখা ছাড়া, চুপ করে এক কোনে দাঁড়িয়ে আছে। অমিত দূর থেকে দেখতে পেল। এদিকে বন্ধুরা সব বাইরে চলে গেছে।
কি হয়েছে শিখা? অমিত বললো
শিখা চেতনা ফিরে পেল, না কিছু হয়নি! চোখ টলমল করছে, জানালার দিকে তাকিয়ে আছে, অমিত তা দেখতে পেল।
অমিত বললোঃ টিফিন খাবে না?
শিখা বললো, না খাবো না।
তুমি খাও যাও।
অমিত কিছুটা বোকার মত দাঁড়িয়ে রইল। শিখা কি করবে ভাবতে পারছেনা। বললো আজ ভাল্লাগছে না।
মাকে ভীষণ মনে পড়ছে। আজ মায়ের মৃত্যু দিন। অমিতের ও মন খারাপ হলো শিখা বুঝতে পারলো।
আজ ১৮ অক্টোবর। হেমন্ত আর শীতের মাঝামাঝি।
আজও মার মৃত্যু দিন। শিখার কান্না পাচ্ছে। বারান্দায় বসে কতকি ভাবছে। অমিতকে মনে পড়ছে। বিয়ের পর দু-একবার দেখা হয়েছিল অমিতের সাথে শিখার।
আজ মায়ের মৃত্যু দিনে অমিতকেই শিখার মনে পড়ছে। মা যেমন শিখার কাছে বিলীন, অস্তিত্বে জাগ্রত।
অমিত ও তাই।
যে মাধ্যমিকের সদাজাগ্রত এক কারণহীন অস্তিত্ব, যা বিলীন হয় না। যা গত হয় না। গতটা কখনো চিরন্তন নয়। যার গত হয়েছে সেই জানে, কিছু কিছু অনাদি গতিময় গত তার কাছে কতোটা প্রোজ্জ্বল।
দেশলাই এর এক কাঠি যেমন ক্ষমতা রাখে অনেকটুকু জ্বালাতে। স্মৃতি ও তেমনি জুলুমবাজ অনেকটুকু পোড়াতে পারে। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে বাঁচিয়ে রাখে অনন্তের হাত ধরে।।
১ Comment
congratulations