চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠ ২০১৭ এর জনপ্রিয় শিল্পী নান্নু এখন সবজি বিক্রেতা:
চ্যানেল আই সেরা কন্ঠ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠ ২০১৭’র দ্বিতীয় রানার্স আপ হয়েছিলেন উদীয়মান এক শিল্পী। গান ছিল তার প্রাণ। জীবনে চলার পথে প্রতিটি মুহুর্তে গানকে আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন তিনি। মাতিয়েছিলেন সমগ্র বাংলাদেশকে।
তিনি চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠ ২০১৭ এর জনপ্রিয় শিল্পী নান্নু। একসময় সারা জাগানো এই শিল্পী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে জীবন জীবিকার তাগিদে এখন রেল লাইনের ফুটপাতের সবজি বিক্রেতা।
বর্তমানে নান্নুর বয়স ৩২ বছর। মহানগরীর দৌলতপুর আঞ্জুমান রোডের আমতলা মোড় এলাকায় বসবাস করছেন। পরিবারে রয়েছে বাবা, মা, স্ত্রী, সন্তান আর তিন বোন। দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করে কষ্টের মধ্যে বেড়ে ওঠেন।
তবে লেখাপড়ায় হাল ছাড়েননি তিনি। পড়াশুনার পাশাপাশি আইসক্রীম ফ্যাক্টরীতে আইসক্রীম বানানোর কাজ করেছেন ৮ বছর। গানের কণ্ঠ ভাল হওয়ায় লোকে তার কাছে গান শোনানোর জন্য অনুরোধ করতো। তিনিও খুশি হয়ে তাদেরকে গান শোনতেন।
এভাবে গানই হয়ে ওঠে তার জীবনের নতুন পথের প্রেরণা। অবশেষে চ্যানেল আই সেরা কন্ঠ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এবং শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন। তাকে চিনেছিলো দেশের মানুষ। পেয়েছিলেন খ্যাতি।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী বারী সিদ্দিকী, আহম্মেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, কুমার বিশ্বজিৎ, সামিনা চৌধুরী, আলাউদ্দিন আলী, মিতালী মুখার্জীর মতো গুণী শিল্পীদের বিচারে তিনি দ্বিতীয় সেরা নির্বাচিত হয়েছিলেন।
সেই জনপ্রিয় শিল্পী নান্নু এখন দৌলতপুর রেললাইনের ফুটপাতের সবজি বিক্রেতা। জীবনে নানান বাঁকে কতোই না রং। কজন বা মনে রেখেছে তাকে। ২০২০ সালে হঠাৎ স্ট্রোক করার কারণে হার্টে রিং বসাতে হয়। তাতে ব্যয় হয় ৭ লাখ টাকা।
যা তার চ্যানেল আই থেকে প্রাপ্ত পুরস্কার ও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রাপ্ত অর্থ। স্ট্রোকের পরও বিভিন্ন অঞ্চলে সংগীত পরিবেশন করে পরিবারের ভরণ-পোষন চালিয়েছেন নান্নু।
সর্বশেষ করোনাভাইরাসের কারণে সংক্রমণের শংঙ্কায় সকল সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধের ফলে নান্নুও অসহায় হয়ে পরেন।জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী আজ দৌলতপুর রেল লাইনের পাশের এক সবজি বিক্রেতা।
সামনে সাজানো পেঁপে, পটল, কচুর মুখী, বরবটি, বেগুন, ঢেড়স, লাউসহ প্রভৃতি সবজি। হাতে গীটারের বদলে দাঁড়িপাল্লা, আর কণ্ঠে সুমধুর গানের বদলে সবজি বিক্রির হাকডাকই তার নিয়তি।
নান্নু বলেন, “জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া দেশের মানুষ তাকে শিল্পী হিসেবে চেনে, আর দেশের নাম করা গুনীজনদের মুখমুখি হওয়া। জীবনে কোন কাজই ছোট নয়,
আজ করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ। বসে থাকলে পরিবারের সদস্যদের ভরণ-পোষন চলবে না। তাই, সবজির দোকান নিয়ে ব্যবসা করছি। জীবন জীবিকার জন্য আত্মনির্ভরশীল হয়ে কিছু করছি।