ছবির কবি হাশেম খান
[রহীম শাহ]
(১৬ই এপ্রিল শিল্পী হাশেম খানের জন্মদিন! ৮১-তে পা দিলেন তিনি। তাঁর জন্মদিনে নিবেদিত কবিতা)
হঠাৎ আকাশে সূর্য উঠেছে খেপে
পৃথিবীটা পুড়ে করবে সে ছারখার
আসবে না আর বৃষ্টিরা ঝেঁপে ঝেঁপে
করতে থাকুক মানুষেরা হাহাকার-
তোমরা মানো না-মানো
কারণও তোমরা জানো;
পৃথিবীর যত গাছপালা ছিল মানুষ নিয়েছে কেটে
এখন তাদের কষ্ট বাড়–ক তপ্ত বালুতে হেঁটে।
বৃষ্টি বলছে, ‘বাড়ি ফিরে যাই চল্,’
পাখিরা বলছে বন্ধ আমার সুর,
মেঘেরা বলছে, ‘ঢালব না আর জল’,
মানুষ দেখুক আগুন-সমুদ্দুর-
তোমরা মানো না-মানো
কারণও তোমরা জানো;
ভরাট করেছে যারা পৃথিবীর খালবিল জলাশয়
সজল মেঘের বৃষ্টির ধারা তাদের জন্য নয়।
মানুষ না হয় করেছে কিছুটা ভুল
তাই বলে তার এতটা কষ্ট পাওয়া?
কেন ফুটবে না বাগানে বাগানে ফুল
কেঁদে কেঁদে বলে রৌদ্রতপ্ত হাওয়া।
তোমরা মানো না-মানো
কারণও তোমরা জানো;
জলাশয় আর গাছপালা যদি না থাকে মাটির বুকে
মেঘবৃষ্টিরা কীভাবে থাকবে মানুষের সুখে-দুখে।
দু-একটা ফুল যা ছিল লতায় ঝুলে
তারাও পড়েছে তপ্ত মাটিতে টুপ
এসব হচ্ছে মানুষের মহাভুলে
এভাবে কদিন পৃথিবী থাকবে চুপ।
তোমরা মানো না-মানো
কারণও তোমরা জানো;
অল্প কিছুটা গাছ আছে বটে নেই পাতা, নেই লতা
দোয়েল শালিক মৌটুসি তাই বন্ধ করেছে কথা।
এভাবে মানুষ বাঁচতে কি পারে?
তা তো কোনোদিন নয়,
আকাশ বলছে, ‘মানুষেরা কেন
এত নিষ্ঠুর হয়!’
আমি এসে বলি, ‘আমি পৃথিবীর কবি
এই দেখো এক কবিতা লিখেছি আজ-
যেখানে রয়েছে ফুল পাখি মেঘ রবি
যেখানে রয়েছে স্বপ্নের কারুকাজ।’
একটি দোয়েল ছুটে এসে বলে, ‘দেখি!’
কালো অক্ষরে পুরো কবিতাটি পড়ে-
এবার দোয়েল বলল, ‘তাই তো, এ কী!
তাড়াতাড়ি দাও রং করে রং করে।’
এই কথা শুনে উঠে দাঁড়লেন শিল্পী হাশেম খান
এসে বললেন, ‘দাও দেখি কবিতাটি!’
তারপর তিনি রংধনু রঙে অবিরাম এঁকে যান
ফুল পাখি গাছ নদী খালবিল মাটি।
এইসব দেখে সূর্য বলছে, ‘বেশ!
আয় মেঘ আয়, ছুটে আয় পৃথিবীতে
আবার বানাব স্বপ্ন-সবুজ দেশ
সবাই আসুক সুকোমল শ্বাস নিতে।’
এই কথা শুনে বৃষ্টি নামল জোরে
এই কথা শুনে মাটিও পেয়েছে প্রাণ
এই কথা শুনে নদীও হাসল ভোরে
এই কথা শুনে পাখিরা গাইল গান
এই কথা শুনে প্রজাপতি ফুল ছুঁল
এই কথা শুনে হেসে ওঠে নদীতীর
এই কথা শুনে গাছ লতাপাতাগুলো
শীতল বাতাসে কেঁপে ওঠে তিরতির।
১ Comment
congratulations