এ কেমন প্রেম, কেমন ভালোবাসা
সুরমা খন্দকার
প্রেম অধরা সুন্দর। টাকা পয়সা, সম্পদ যাকে আবদ্ধ করে তাকে প্রেম ভালোবাসা আওতায় রাখা যায় না। প্রেম ভালোবাসা বিভিন্ন রকম, দেশের জন্য প্রেম, বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি প্রেম, অর্থ প্রেম।
অনেক ক্ষুদ্র এবং ক্ষনস্থায়ী ছোট্ট এ জীবন। তাই যতই স্বতঃস্ফূর্ত সমাদর করবেন জীবন কে অসীমতার অতিশয় সংবর্ধনা দিবে জীবন। অসঙ্গতির আদলে জীবন যতই হোক যেমন, শূণ্যতা পূরনের লাবন্যতা না খুঁজে নিজেকে খুঁজতে হয়, আবিস্কার করতে হয় ভিতর থেকে।
সততার সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক রক্তের সঙ্গে মাংসের মতো নিবিড়। সেখানে ব্যক্তির, স্থানের, সময়ের, জলের নামের সঙ্গেও জড়িয়ে থাকে ভালোবাসা।
পুরোনো ইতিহাস, পুরোনো দিনকালে ভালোবাসা একই অঙ্গে ছিল বহুরুপ। কখনো অপেক্ষায়, কখনো বাদশা থেকে ফকির, কখনো চিরায়ত দেবদাস। এতো প্রেম তবুও কিন্তু গোটা প্রেম অর্থাৎ স্বতন্ত্র চালনায় স্বাধীন প্রেম আনন্দদায়ক রুপে ছিল গরহাজির।
আমাদের সচেতন মহল, লেখকরা কবিরা যেভাবে আবিষ্কার করতে চেয়েছেন ভালোবাসা নিজস্ব চরিত্রকে। ভালোবাসার অস্তিত্বের অভ্যন্তরে খুঁজে পেয়েছেন নিজের সময়ের কালের সভ্যতার প্রতিচ্ছবি। ভালোবাসাকে ভেবে নিয়েছেন মনুষ্যত্বের মূল্যবোধে হৃদয় স্পন্দিত বস্তু। অথচ আজকাল সমাজ গড়ে উঠেছে না তেমন ধারায়।
ভালোবাসা এখানে শুধু নিজেকে ভোগ্য বস্তুর নামান্তর।
ভালোবাসা এখানে ভোগের অলংকার।
অথচ এতো এতো ভালোবাসার ছড়াছড়ি, কিন্তু তার ব্যবহার অন্য কিছুর পরিপূরক হিসেবে যদি উদ্ভাবিত হয়। তাই তো ভালোবাসার নামে নৃশংসতা হয়, ভোগের নিন্দনীয় ঝুড়ি নিতে হয় ভালোবাসার কাঁধে।
যতই হোক বন্দনার ভালোবাসা, যতই ফিরিস্তি সাজাক ভালোবাসার, যা হয় লালসার, যা হয় ভোগের, তাতে ভালোবাসা নিরুপায়, নগ্ন, অনাবৃত।
অথবা মানুষের সংরক্ত হৃদয়ের যোগ্য করে তোলার, যা ভালোবাসার অভ্যন্তরে অস্থির, উদভ্রান্ত।
যেভাবে ভালোবাসা মর্মের ভিতরে তাকিয়ে আমরা দেখতে পাই সভ্যতার বীজ, অথবা প্রতিবাদ হোক, সমকালীন ধ্বংস ধারার পটভুমিকায়, নিজের আত্মরক্ষায় একান্ত গরজে বলতে হয়—
স্বার্থের ভালোবাসা নৃশংস- যা ভালোবাসার নয়।
ভালোবাসা অহিংস, অহিংস্র।
আঘাতে ভালোবাসা মৃত।
ভালোবাসার আজীবন জীবন্ত।