ছাই রঙা ভাঙন
ইভা আলমাস
তুমি কেমন করে ভেঙে দাও অনায়াসে চন্দ্রালোকিত সাজানো সংসার,
দীর্ঘ সহবাসের প্রেম প্রপাত, হৃদ্যিক স্বাস্থ্য।
শব্দের কারুকাজে যে কবিতা ছিলো বাঙময় ক্যানভাস সংক্ষিপ্ততার কারণে তাকে ফেলে দিলে অরণ্য পাহাড় আর বেলাভূমিতে।
একা একাই ছুঁড়ে ফেললে ভাঙনের অশ্লীল বিলাসিতায়।
গড়তেই যখন জানোনা তখন সবকিছু ভেঙে ফেলার আয়েসি আয়োজনে কেন শামিল হতে গেলে?
আমার সাজানো বাগান তছনছ করে দিলে,
ঘর ভাঙলে পাহাড়,গাছ, সাগরের উর্মিমালা সবকিছু ভেঙে ফেললে কত সহজেই!
হাসতে হাসতে ভেঙে গুড়িয়ে দিলে নীল নীল বৈকালিক স্মৃতির ফোয়ারা!
ভাবছি তোমার ঘোলাজলের নদীতে নামবো একদিন
ডুব সাঁতারে খুঁজবো তলানিতে ফেলে দেয়া প্রথম প্রণয়ের ক্ষণ,
এমনও তো হতে পারে
ভাঙতে ভাঙতে ভুল করে ওটা ফেলে গেছো অচেনা জলের উচ্ছিষ্ট প্রান্তরে….
৪/৭/২০২০
সকাল ৭টা
উত্তরা।
একটি কালো কুকুর
প্রতি রাতেই আমার ছায়া হয়ে একটি কালো কুকুর
তাড়িয়ে নেয় আমায় অমাবস্যার
নিগূঢ় কালো অন্ধকারে,
পাঁড় মাতাল, নিশিগন্ধা আর টহল পুলিশের দৃষ্টি আঙিনায়
ভাবনার উপকরণ দিয়েই বুঁদ করে রাখে আমারে ।
অথচ মন্ত্রী, আমলা, ব্যবসায়ী
আড়তদার মাতালেরা
দিনকে রাত আর রাতকে দিন করে হাসে বিমল আনন্দে ,
আমি কেন বিবেকের দংশনে জ্বলে মরি রন্ধ্রে রন্ধ্রে ?
পিশাচীমূর্তি পথের বাঁকে বাঁকে
আমায় ডাকে বিকৃত ইশারায়,
চাঁদ গলে ঝরে পড়ে এসিড বৃষ্টি
বিবেকের আবরণ ভেসে যায়, ভেসে যায় ।
সুনসান নীরবতা ভেদ করে
লোলুপ হায়েনার তির্যক দৃষ্টি,
পথের মাটি কামড়ে খুঁজে নেয়
অনাবৃত অস্থি-মজ্জার অনুপম সৃষ্টি ।
দাঁতাল হাসির আড়ালে
চলে নোংরামী বিকৃত মায়ায়, রঙিন জলের ফোয়ারা
মিশে যায় আমার ছায়ায় ।
খুবলানো মাংসের রক্তরস
নীরেট পাথুরে রাজঘরে
অট্টহাসির সাথে কেঁদে কেঁদে আছড়ে পড়ে ।
আমার মৃত আত্মা চমকে উঠে
দৃষ্টিতে বিবর ধূ ধূ বালুচর
নষ্টের অধিকারে আমার স্বপ্ন ,
আমি, তুমি, সে গড়ে চলি শুধু নষ্টের খেলাঘর।
বিবেকের সমাধিতে কাঁটা গাঁথি একমনে অবিচল
প্রতি রাতেই সেই কালো কুকুরটি
আমায় পাহারা দেয় অবিরল….
২৪/১০/’১৮
রাত ৮. ১০ মিনিট
গাজীপুর।