আমি আমার
[কথা বলছি]
আমি আমার কথা বলছি, আমার
কৈশোর আর ফুটপথের জীবনে
দেখেছি,অফুরন্ত জলের ধারা আর
বৈচিত্র বর্ণিল ছবি।
আমি আমার মায়ের হরিণী চোখ
কেমন কখনো দেখিনি শৈশব কেটেছে
আমার কাদা মাটি আর জলে।
আমার শিকড় বিস্তার নদী জল আর
এ অরণ্য ভূমি,আমি যেন প্রকৃতির
সন্তান, প্রকৃতির আনাচে কানাচে আমার
বিচরণ।
জুঁই চামেলী, বেলী ফুলের সুঘ্রাণ
চারি দিক, কিন্তু আমার চার পাশ
জুড়ে ছিলো সমাজের নীল বর্ণ
লোলুপ দৃষ্টি, আর পূর্ব পুরুষের রেখে
যাওয়া ধর্ষণের চিহ্ন।
মায়ের সুঠাম দেহের প্রতিটি অঙ্গে
অঙ্কিত নির্যাতনের বিচিত্র টেট্টু।
অন্তর্নিহিত কষ্টগুলো যেন রাতে বাঁশ
বাগানে জোনাকির মিটি মিটি আলো,
শোকাহত ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে অসংখ্য
মোম বাতি ।
চৈত্রের প্রচণ্ড তাপদাহ বুকের
ছাতি ফেটে চৌচির হত আমার, তৃষ্ণার্ত
চাতকের মত অপেক্ষা করেছি এক ফোটা
বৃষ্টির।
বসন্ত বিলাস ছিলো আমার দুঃস্বপ্নে ঘেরা,
কারণ আমার সময় ছিলো বড় কম,তবু
প্রচুর মানুষের ভিড়ে আমি আমাকে
খুঁজেছি বার বার, কষ্টগুলো জমাট
বাধতো পিচঢালা পথে।
আমি পিতৃপুরুষের ডায়রি খুঁজেছি,কিন্তু
জঞ্জালে ভরা বিকৃত ইতিহাসের
পাতা, আমি আমার শিকড় খুঁজেছি
মৃত নদীর জলে।
কারণ সমাজে শিকারীর শিকার
অবাধ যাতায়াত গহীন এ অরণ্য,
চিত্রা হরিণের অবাধ বিচরণ অগ্রজের
রক্তে ভেজা, আজ এ অরণ্য শিকার
খোঁজে শিকারী।
আমি আমার কথা বলছি,পূর্ব পুরুষের
রেখে যাওয়া ভিটামাটির কথা বলছি,
আমি আকাশ সংস্কৃতির কথা বলছি,
আকাশ ছোঁয়া অট্টালিকা সুউচ্চ
প্রাচীর,পূর্ব পুরুষের বুকের পাঁজড়ে
নির্মিত এক একটি ইমারত।
ইথারে কাঁন্না শুনি এখনো আমার মায়ের,
শৃঙ্খলে বন্দি নর-কঙ্কাল সে, সেই
কবে কৈশোর আর যৌবনের বিদায়,
পৌঢ়ত্বের চাবি হাতে দাঁড়িয়ে আমি
আজ আমার কথা বলছি।
———
তাং-২৪-৩-২২
মনি জামান
২ Comments
মন ছোঁয়া এক অসাধারণ কাব্য যা শব্দচয়নের উৎকর্ষতায় মনমুগ্ধকর হয়ে উঠেছে। আন্তরিক শুভেচ্ছা কবি।
congratulation